Cvoice24.com

তিন স্ত্রী থাকার পরও ভাগনিকে বিয়ের প্রস্তাব, না মানতেই অপহরণ

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩:৩৫, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২
তিন স্ত্রী থাকার পরও ভাগনিকে বিয়ের প্রস্তাব, না মানতেই অপহরণ

র‌্যাবের হাতে দুই নারী সহযোগীসহ গ্রেপ্তার মনির

১৫ বছর বয়সী কুমকুম (ছদ্মনাম)। বাবা মারা যাওয়ায় ৫ম শ্রেণির পর আর পড়ালেখা করতে পারেনি। মায়ের সম্পর্কিত ভাগিনা হওয়ায় মো. মনির সবসময় তাদের বাসায় আসতো। গত কয়েক মাস আগে কুমকুমকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় মনির। এসময় কিশোরীর মা তার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কিশোরীকে উঠিয়ে নেওয়ার হুমকি দেয় মনির।

কথামতো গত ২২ জুলাই ওই কিশোরীকে অপহরণ করে মনির। তবে শেষ রক্ষা হয়নি; ২ মাস পর দুই নারী সহযোগীসহ মনির ধরা পড়েছে র‌্যাবের হাতে।

সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে কুমিল্লার কোতায়ালী থানার দৌলতপুর এলাকার একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। একই সঙ্গে অপহৃত কিশোরীকেও উদ্ধার করে র‌্যাব।

গ্রেপ্তাররা হলো— কুমিল্লা জেলার বাঙ্গরা বাজারের হায়দারাবাদ এলাকার আব্দুল হামিদের ছেলে মো. মনির (৩৫) এবং তার দুই সহযোগী সকিনা আক্তার ওরফে ফারজানা (৩০) ও শিমুল আক্তার (৪০) 

র‌্যাব জানায়, অপহৃত ১৫ বছর বয়সী কিশোরী পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেছে। তার বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে সে আর লেখাপড়া করেনি। আসামি মো. মনির তার মায়ের সম্পর্কে ভাগিনা হতো। সেই সুবাধে সে প্রায়ই ওই কিশোরীর বাড়িতে আসা-যাওয়া করতো। গত কয়েক মাস আগে মনির হোসেন তার ৩ স্ত্রী থাকা সত্বেও কিশোরীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। তখন কুমকুমের মা মনিরের বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয় এবং তার নাবালিকা মেয়ের সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ কিংবা উত্যক্ত না করার জন্য নিষেধ করে। এতে মনির ক্ষিপ্ত হয়ে কুমকুমের মাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয় এবং যেকোন সময় তার মেয়েকে উঠিয়ে নিয়ে যাবে।

গত ২২ জুলাই দুপুরে কিশোরী বাসা থেকে বের হলে আসামি মনির পূর্বপরিকল্পিতভাবে কিশোরীকে ফুসলিয়ে একটি প্রাইভেটকারযোগে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। কুমকুম সন্ধ্যা পর্যন্ত বাসায় ফিরে না আসায় তার মা সকল স্থানে খোঁজাখুজি করার পর চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং থানায় নিখোঁজ সংক্রান্তে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

পরে কিশোরীর মা তার বোনের কাছ থেকে জানতে পারেন আসামি মনির হোসেন তার সহযোগী মো. রাকিবের সহায়তায় কুমকুমকে অপহরণ করেছে। ওই ঘটনায় গত ২৮ জুলাই কিশোরীর মা বাদী হয়ে ডবলমুরিং থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

র‌্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে সোমবার দিবাগত রাতে কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালীর থানার দৌলতপুর এলাকার একটি বাসা থেকে অপহরণের সঙ্গে জড়িত মূল আসামি মনির হোসেনসহ তার দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়। একইসঙ্গে অপহৃত কিশোরীকেও উদ্ধার করা হয়েছে। 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা স্বীকার করেছে, কিশোরীকে লোভ-লালসা ও মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে ফুসলিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে ২ মাস আগে অপহরণ করেছে তারা। চট্টগ্রাম থেকে কিশোরীকে নিয়ে কুমিল্লা একটি বাসায় আটকে রাখে। সেখানে কিশোরীকে ধীরে ধীরে মাদকাসক্ত করে মাদক পাচারের কাজে ব্যবহার করার চেষ্টা করে।

গ্রেপ্তার অপহরণকারী ও তার দুই সহযোগী মহিলা মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কুমিল্লা কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া উদ্ধার কিশোরীকে ডবলমুরিং থানায় দায়ের করা মামলায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

-সিভয়েস/এমএম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়