Cvoice24.com

সীতাকুণ্ড উপকূলে বন উজাড় করে চিংড়ি ঘের নির্মাণ, বন বিভাগের সাফাই

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:১০, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১
সীতাকুণ্ড উপকূলে বন উজাড় করে চিংড়ি ঘের নির্মাণ, বন বিভাগের সাফাই

ছবি: সংগৃহীত।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপকূলীয় এলাকায় চিংড়ির ঘের তৈরীর জন্য গেওয়া ও কেওড়াগাছ কেটে বন উজাড়ের অভিযোগ উঠেছে। যার কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে সুরক্ষা হুমকির মুখে পড়বে স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের অভিযোগ, বন বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সহযোগিতায় স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি রাতের আঁধারে সবুজ বেষ্টনির অসংখ্য গাছ কেটে গড়ে তুলছেন চিংড়ি ঘের। তবে বন বিভাগ বলছে, এসব গোনার মত কোন গাছ নয়, জ্বালানি বা লাকড়ি। যেগুলো কাটা হয়েছে তা মূলত আগাছা জাতীয় গাছ।  

স্থানীয়রা জানান, সীতাকুণ্ডের মুরাদপুর ইউনিয়নের ভাটেরখীল ও সৈয়দপুর ইউনিয়নের উপকূলীয় এলাকায় হঠাৎ বেড়েছে চিংড়ি ঘের তৈরির কাজ। প্রভাবশালী একটি মহল উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনির হাজারো গাছ কেটে গড়ে তুলছেন চিংড়ি ঘের। ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে উপকূলবাসীর সুরক্ষায় লাগানো এই গাছগুলো কাটায় আবার হুমকির মুখে পড়বে তারা। অন্যদিকে নিয়মবহির্ভূতভাবে সরকারি গাছ বিক্রিতে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন বন বিভাগের অসাধু কর্মীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চুক্তিতে গাছগুলো কাটা হচ্ছিল। ১ হাজারেরও বেশি ছোট-বড় গেওয়া ও কেওড়াগাছ কাটা হয়েছে। আরও  গাছ কাটা বাকি রয়েছে। বন বিভাগের লোকেরাই গাছগুলো কাটার দায়িত্ব দিয়েছেন বলে জানা যায়। 

স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, এসব জায়গাগুলো তাঁদের পূর্বপুরুষদের। আরএস খতিয়ানেও সেই রেকর্ড আছে। আশি ও নব্বইয়ের দশকে বন বিভাগ এখানে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগায়। আর যেসব জায়গা খালি ছিল, সেখানে কৃষিকাজ করতেন তাঁরা।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় অভিযোগ করেছেন। সম্প্রতি অনিয়মের প্রতিবাদ করায় স্থানীয়দের সঙ্গে বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঝামেলাও হয়েছে বলে জানা যায়।  

এদিকে বন বিভাগের দাবি তারা কোন গাছ কাটছেন না। যেসব গাছের কথা বলা হয়েছে তা মূলত জালানি কাঠ জাতীয় আগাছা গাছ। উলটো তাদের করা বাগানের কারনে বাধের সৃষ্টি হওয়ায় জোয়ারের সময় মাছ ঢুকতে পারছে না বলে তাদের সাথে শ্ত্রূতার সৃষ্টি করছে একটি চক্র। 

এ প্রসঙ্গে সীতাকুণ্ড উপকূলীয় রেঞ্জ কর্মকর্তা কামাল হোসেন সিভয়েসকে বলেন, ‘এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটে নি। আগাছা পরিস্কার করা হয়েছে। উপকূলে কিছু গেওয়া গাছ কাটা হয়েছে যেসব জ্বালানি বা লাকড়ি পর্যায়ের। এগুলো গাছের পর্যায়ে পড়ে না। আমরা মামলা দায়ের করেছি। আমাদের যেটা আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার তা আমরা নিয়েছি। কেউ ষড়যন্ত্র করছে, তারা চাচ্ছে বন বিভাগকে ওই জায়গা থেকে বিতাড়িত করতে। কিছু লোক চায় না আমরা ওখানে থাকি।’ 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এ ব্যাপারে মামলা দায়ের হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে তদন্তের স্বার্থে কিছু এখন বলা যাচ্ছে না। কোর্ট থেকে ওয়ারেন্ট আসলে...তখন দেখা যাবে।’ 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এসব আসলে চিকন চিকন আগাছা জাতীয় গাছ। লাকড়ি বা জ্বালানি। মোট হিসাবে ৭০ বা ৭২ ঘনফুট হবে।’

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়