মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরে পরিবেশ ব্যবস্থাপনায় কমিটি

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১:০৭, ৭ নভেম্বর ২০২২
মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরে পরিবেশ ব্যবস্থাপনায় কমিটি

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়িতে সাগরের কোলঘেঁষে নির্মাণাধীন গভীর সমুদ্রবন্দর। পরিবেশের ক্ষতি না করে নির্মাণাধীন এই সমুদ্র বন্দরের উন্নয়ন কার্যক্রমকে টেকসই করতে ৬ সদস্যের পরিবেশ ব্যবস্থাপনা কমিটি করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। 

সোমবার (৭ অক্টোবর) মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্নসচিব) মীর জাহিদ হাসান এ কমিটির অনুমোদন দেন। 

কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের ইঞ্জিনিয়ারিং সিমুলেশন এবং বৈজ্ঞানিক সফটওয়্যার বিভাগের মো. শিহাব উদ্দীনকে। সদস্য সচিব হিসেবে আছেন খ্রিস্টান কমিশন ফর ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশের এরিয়া ম্যানেজার আবু মোহাম্মদ ইলিয়াস। এছাড়া সদস্য হিসেবে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানী বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিপিজিসিবিএল) সহকারী ব্যবস্থাপক (ইএসটি) রাশেদুল বারী, প্রাকৃতিক পরিবেশ বিশেষজ্ঞ কেনজি ইগারাশি, সামাজিক পরিবেশ বিশেষজ্ঞ নাওকো কাতাশিমা ও একজন ঠিকাদার প্রতিনিধি রয়েছেন।

জানা গেছে, নির্মাণ কার্যক্রম চলাকালীন সময়ে আশেপাশের জমির উপর সৃষ্ট প্রভাব, শব্দের তীব্রতার মান, বায়ুমানের পরিবর্তন, আর্থসামাজিক অবস্থা ইত্যাদি বিষয় যাচাই করবে কমিটি। তাছাড়া পানির ব্যবহার, পানির গুনগত মান, বালু বা মাটি ও বর্জ্য পদার্থের পরিবহনসহ নানা বিষয় যাচাই করবেন সদস্যরা। 

মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্নসচিব) মীর জাহিদ হাসান বলেন, প্রকল্পের পরিবেশগত ও সামাজিক সুবিধা যাচাই করতে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা সবদিক যাচাই করে পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদান করবেন।

চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর থেকে অতিরিক্ত চাপ কমানো এবং ব্যাপক সংখ্যক জাহাজ ও কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের লক্ষ্যে ‘মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন’ কর্মযজ্ঞ হাতে নেয় সরকার। এটি বাস্তবায়ন হলে ১৬ মিটার গভীরতা এবং ৮০০০ টিইইউ’স (২০ ফুট দৈর্ঘের কন্টেইনার) ধারণক্ষমতা সম্পন্ন কন্টেইনার জাহাজ প্রবেশ করতে পারবে। এ বন্দর দিয়ে কয়লা, লিক্যুইড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি), অপরিশোধিত তেল ও তেল জাতীয় পণ্য, সিমেন্ট, ক্লিঙ্কার, সার, খাদ্য, স্টিল ও স্ক্র্যাপ লোহা আমদানি সহজ হবে।

জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতায় মাতারবাড়ি ও ধলঘাট এলাকায় বন্দরটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাইকার ঋণ ১২ হাজার ৮৯২ কোটি, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব তহবিল ২ হাজার ২১৩ কোটি এবং বাংলাদেশ সরকারের বরাদ্দ ২ হাজার ৬৭১ কোটি টাকা। ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বন্দরের প্রথম পর্যায়ের কজ শেষ হবে।

মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দরের উন্নয়নের পাশাপাশি আধুনিক কন্টেইনারবাহী জাহাজ, খোলা পণ্যবাহী জাহাজ ও তেলবাহী ট্যাঙ্কারকে জেটিতে ভেড়ার সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। এটি দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। উন্নত দেশে উন্নীত হওয়ার পথে মাইলফলক হবে নতুন এ সমুদ্র বন্দর।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়