Cvoice24.com

দেশে এখন হাওয়া ভবন নেই— ব্যবসায়ীদের প্রধানমন্ত্রী

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩:৫৩, ২০ নভেম্বর ২০২২
দেশে এখন হাওয়া ভবন নেই— ব্যবসায়ীদের প্রধানমন্ত্রী

বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

‘দেশে এখন আর হাওয়া ভবন নেই। তাই কোনো কাজ পেতে হলে আর এখানে-সেখানে ছোটাছুটি করতে হয় না। ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করছেন সেই সুযোগ করে দিচ্ছে সরকার। আপনারা মানুষের কল্যাণে কাজ করবেন। মানুষের কল্যাণে কাজ করলে আওয়ামী লীগ সরকারের সহযোগিতা পাবেন।’— ব্যবসায়ীদের এমনই অভয় দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

রবিবার (২০ নভেম্বর) সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে কর্ণফুলী ড্রাইডক স্পেশাল ইকোনমিক জোনসহ ৫০টি শিল্প কার্যক্রম উদ্বোধনকালে একথা বলেন। 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ২১ বছর পর ক্ষমতা আসে। আমাদের একটাই লক্ষ্য এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা। বেসরকারি খাতে শিল্পায়নের জন্য জায়গা দিয়ে সুযোগ করে দেওয়া হয়। শিল্পায়ন এক এলাকাভিত্তিক নয়, সারা বাংলাদেশ ব্যাপী করা হয়। শিল্পায়ন করতে গিয়ে তিন ফসলে জমি নষ্ট করা যাবে না। যারা জমি দিবে তাদের পরিবারের সদস্যদের কর্মস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কৃষি প্রধান অর্থনীতি, কিন্তু শিল্পায়ন ছাড়া একটা দেশ উন্নত হয় না, কর্মসংস্থান হয় না। আমাদের কৃষিও যেমন অব্যাহত রাখতে হবে, পাশাপাশি শিল্পায়ন করতে হবে। সেই চিন্তা করে বেসরকারির সমস্ত খাতকে উন্মুক্ত করে দেই, পাশাপাশি তাদের উৎসাহিত করার ব্যবস্থাও আমরা নিয়েছি। বেসরকারি খাতে শিল্পায়নের জন্য জায়গা দেওয়া এবং সবধরনের সুযোগ সুবিধা সৃষ্টিও আমরা করেছিলাম। একটানা ক্ষমতায় আছি বলেই আমরা করতে পেরেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কক্সবাজারে আমরা আন্তর্জাতিক মানের এয়ারপোর্ট করে দিচ্ছি। চট্টগ্রাম কর্ণফুলী টানেল করে দিচ্ছি। এপারের মানুষ ওপারে যেতে আর অসুবিধা হবে না।’

অনুষ্ঠানে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা ধরে রাখতে হলে কৃষি ও শিল্প উন্নয়নের পাশাপাশি রপ্তানি বাজার খোঁজার পরামর্শ দেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল অঞ্চলের চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন। শুরুতেই অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমের ওপর ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুর রহমান চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও চট্টগ্রাম-১ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।

কৃষিজমি বাঁচাতে হবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কারণ আমাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের খাবার দিতে হবে। কৃষি নিয়ে গবেষণা করে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করছি। খাদ্য উৎপাদন অব্যাহত রাখার পাশাপাশি শিল্পায়ন করতে হবে। যত্রতত্র যেন শিল্প গড়ে না ওঠে। আমি দেখেছিলাম, ভালো কৃষি জমি, যেখানে তিনটা ফসল হতো। সেই জমি নষ্ট করে, শিল্প-কারখানা গড়ে দাবি করতো, বিদ্যুৎ দেন, গ্যাস দেন, পানি দেন। এটা সম্ভব না। এই  কারণে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি; এখানে-যেখানে শিল্প গড়তে পারবে না। তিন ফসলি জমি কোনো মতে নষ্ট করা যাবে না। পাশাপাশি যে অঞ্চলে শিল্প গড়ে উঠবে, যারা জমি দেবেন, তাদের পরিবারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। এই বিষয়গুলো অবশ্যই দৃষ্টি দিতে হবে।’

রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য সরকারের চেষ্টার কথা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, রপ্তানি বৃদ্ধি ও দেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নের জন্য কাজ করাই আমাদের উদ্দেশ্য। পরিকল্পনা রয়েছে দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে পদক্ষেপ নিয়েছি আমরা। আমাদের অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রায় ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এখান থেকে ৪০ বিলিয়ন সমমূল্যের পণের উৎপাদন ও রপ্তানি করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ব্যবসায়ীবান্ধব সরকার। গবেষণার মাধ্যমে আমরা ফসল উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছি, দেশের চরাঞ্চল পর্যন্ত বিদ্যুৎ পৌঁছে দিচ্ছি, শিল্পায়নের ব্যবস্থা করেছি। তবে কিছু একটা সমস্যা তৈরি হচ্ছে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কারণে।’

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়