Cvoice24.com

কর্ণফুলীতে টানেল প্রসঙ্গে মহিউদ্দীন চৌধুরীকে স্মরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬:৪৭, ৪ ডিসেম্বর ২০২২
কর্ণফুলীতে টানেল প্রসঙ্গে মহিউদ্দীন চৌধুরীকে স্মরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী

স্বপ্ন নয় সত্যি; গাড়ি নিয়ে কর্ণফুলী নদীর একপাড় দিয়ে প্রবেশ করে অন্যপাড় দিয়ে উঠতে পারবেন আগামী জানুয়ারিতেই। এই বঙ্গবন্ধু টানেলটির নির্মাণের ‘কারিগর’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হলেও এর স্বপ্নদ্রষ্টা কিন্তু চট্টগ্রামের প্রয়াত মেয়র চট্টলবীর এ বি এম মহিউদ্দীন চৌধুরী! এই তথ্য একবার নয় দুই দুই বার তিন তিনবার জানিয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই। 

রোববার (৪ ডিসেম্বর) দুপুর তিনটা ৪৫ মিনিটে পলোগ্রাউন্ড মাঠে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এই জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে দেওয়া বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে এসে শেখ হাসিনা একথা স্মরণ করেন। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘চট্টগ্রাম কর্ণফুলী নদীর নিচে টানেল। এ টানেলের কথা মনে উঠলে অবশ্যই আমাদের সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর কথা খুব মনে পড়ে। কারণ তিনি সবসময় একটা টানেল নির্মাণ হউক; সেটা তিনি চেয়েছিলেন। তার একটা দাবিও ছিল। কিন্তু আজকে সেই টানেল উদ্বোধনের পথে। দুর্ভাগ্য হচ্ছে তিনি আজ আমাদের মাঝে নেই। তিনি যেখানেই থাকুক নিশ্চয় সেখান থেকে দেখবেন।’ 

টানেল নিয়ে মহিউদ্দীন চৌধুরীর কথা স্মরণ শুধু এবার নয় এরআগেও ২০২১ সালের ১৬ মার্চ চট্টগ্রাম ওয়াসার এক অনুষ্ঠানে এবং ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে পতেঙ্গায় বঙ্গবন্ধু টানেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন পরবর্তী জনসভায়ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একই কথা বলেছিলেন।

তিনি ওই সময়ে বলেছিলেন, ‘মহিউদ্দীন চৌধুরী বলতেন কর্ণফুলী নদীর উপর ঘন ঘন ব্রিজ নির্মাণ করলে নদীর ক্ষতি হতে পারে। পলি জমে নদী ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। টানেল নির্মাণের জন্য তিনি আন্দোলনও করেছিলেন। আজ তিনি আমাদের মাঝে নেই, তিনি বেঁচে থাকলে সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন। বিভিন্ন আন্দোলন, সংগ্রামে ও মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদান জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সাথে মনে রাখবে।’

এরআগে দীর্ঘ দশ বছর পর পলোগ্রাউন্ডের মাঠে বক্তব্য দিতে এসেই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশাল জনসমুদ্রের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘অনে ক্যান আছন? গম আছন নি? তোয়ারার লাই আঁর পেট পুরের।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই চট্টগ্রামের সাথে আমার অনেক স্মৃতি। করোনার কারণে দীর্ঘদিন সমাবেশ করতে পারিনি। তাই আপনাদের কাছে ছুটে আসলাম। এই স্মৃতিময় চট্টগ্রামে আমরা বারবার ছুটে আসতাম। আমার বাবা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু যখন জেল থেকে মুক্তি পেতেন আমাদের চট্টগ্রামে বেড়াতে নিয়ে আসতেন।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামে আসলেই ছুটে যেতাম এম এ আজিজ চাচা, জহুর আহমেদ চাচার বাসায়। এখন তারা নেই। সব স্মৃতি মনে আছে।’ 

এরআগে বিকেল ৩টা ১০ মিনিটের দিকে হাজার হাজার নেতাকর্মীদের অপেক্ষার প্রহর শেষে পলোগ্রাউন্ড মাঠের জনসভায় এসে উপস্থিত হন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

ভাটিয়ারিতে বাংলাদেশ মিলেটারি একাডেমিতে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজের অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ শেষে তিনি হেলিকপ্টারে করে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে নামেন। সেখান থেকে সিআরবি হয়ে পলোগ্রাউন্ডে মাঠে আসেন। মাঠে এসেই ৩০টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন এবং চার প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। 

এরআগে বেলা ১২টা থেকেই চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের সঞ্চালনায় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের স্থানীয় এমপি, কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেওয়ার মাধ্যমে শুরু হয় জনসভার আনুষ্ঠানিকতা। বক্তব্যে নেতারা চট্টগ্রামের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর নেয়া নানা প্রকল্পের ফিরিস্তি তুলে ধরছেন। আগামীতেও প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত নৌকার প্রার্থীদের ভোট দিয়ে জয়ী করার আহ্বান জানান। 

এদিন সকাল আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুপুরের জনসভায় যোগ দিতে সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা পলোগ্রাউন্ডমুখী স্রোতে যুক্ত হয়েছেন। ভোরের আলো ফুটতেই চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রং বেরংয়ের টি শার্ট ও বাদ্য যন্ত্র নিয়ে জনসভাস্থলের আশাপাশে এসে অবস্থান নিতে থাকেন। এরপর সিআরবি, পুরোনো রেলস্টেশন, টাইগারপাস দিয়ে বানের স্রোতের মত নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে প্রবেশ করছেন। এসময় স্লোগোনে-স্লোগানে মুখর জনসভাস্থল ও চট্টগ্রামের রাজপথ।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়