সীতাকুণ্ডে দগ্ধদের চিকিৎসা দিচ্ছে সেনাবাহিনীর হাসপাতালও
সিভয়েস প্রতিবেদক

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ ও আহতদের মধ্যে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের চিকিৎসা দিচ্ছে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে অবস্থিত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফায়ার সার্ভিস কর্মী ছাড়াও সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারবর্গকেও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণে নিহত ৪, আহত দেড় শতাধিক
শনিবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ৯টার এ দুর্ঘটনার পর রাত দেড়টার দিকে সেনাবাহিনীর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ উদ্যোগ নেয়। ইতোমধ্যে সাবেক এক সেনা সাজের্ন্টসহ তার পরিবারের চার সদস্যকে চিকিৎসার আওতায় আনা হয়েছে। তাছাড়া আরও তিনটি অ্যাম্বুলেন্সে করে দশজন ফায়ার সার্ভিস কর্মীকে সিএমএইচে নিয়ে আনা হয়।
২৪ পদাতিক ডিভিশনের উদ্যোগে এ পদক্ষেপ নেয়া হয় বলে চট্টগ্রাম সেনা এরিয়া সদর দপ্তর থেকে সিভয়েসকে বিষয়টি জানানো হয়।
বিস্ফোরণের ঘটনায় ইতোমধ্যে চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। পাশাপাশি ২শতাধিক আহত ও অগ্নিদগ্ধের খবর পাওয়া গেছে।
শনিবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নে বিএম কনটেইনার ডিপোর লোডিং পয়েন্টের ভেতরে এ আগুনের ঘটনা ঘটে। ডিপোটির মালিক স্মার্ট গ্রুপের এমডি ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পদাক মুজিবুর রহমান।
সীতাকুণ্ডে বিএম ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ
রাসায়নিক দ্রব্য বিস্ফোরণের কারণে বারবার বিস্ফোরিত হচ্ছে কন্টেইনার, আগুনের তীব্রতায় কাছে ঘেঁষতে পারছে না ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ১০০ গজ দূর থেকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে চলেছে ফায়ার সার্ভিসের ২৪টি ইউনিট
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক ফারুক হোসেন সিকদার সিভয়েসকে বলেন, 'আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ডিপোতে প্রায় দেড়শ কন্টেইনার আছে। কিন্তু রাসায়নিক দ্রব্য থাকায় বারবার বিস্ফোরিত হচ্ছে কন্টেইনার। যে কারণে আগুনের কাছেও ঘেঁষতে পারছি না আমরা। প্রায় ১০০ গজ দূর থেকে নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।'
আহত ও নিহতের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'অজ্ঞাত একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গ্যাসের তীব্রতায় আমাদের প্রায় ৮ জন ফায়ার ফাইটার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাদেরকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে কিন্তু এখন কার কী অবস্থায় বা কোন পরিস্থিতিতে আছে তা বলতে পারছি না। পরিস্থিতি ভয়াবহ। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।'
বিস্ফোরণে ঘটনাস্থল থেকে অন্তত পাঁচ কিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে। সেইসঙ্গে আশপাশের বাসা বাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙে পড়ার খবরও পাওয়া গেছে।
এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, সীতাকুণ্ড থানা পুলিশের কনস্টেবল তুহিনের পা বিচ্ছিন্নসহ আরও অন্তত পাঁচ কনস্টেবল, ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোতাহার হোসেন এবং শিল্প পুলিশের একাধিক সদস্য আহত হয়েছেন। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের এক সদস্যও আহত হয়েছেন।
সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হোসেন বলেন, আমি ঘটনাস্থলে এসেছি। বিস্ফোরণে অনেক মানুষ গুরুতর আহত হয়েছেন। নিহত আছে কিনা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসতে আরও সময় লাগবে।
এদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এসে সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াস চৌধুরী চট্টগ্রামের সব চিকিৎসককে চমেক হাসপাতালে এসে রোগীর চিকিৎসা কাজে নিয়োজিত হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
তাছাড়া মুমূর্ষুরোগীদের আনতে সীতাকুণ্ডের ঘটনাস্থলে অ্যাম্বুলেন্স পাঠাতে অনুরোধ করেছে ফায়ার সার্ভিস। আর রক্তদাতাদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম (মহানগর, উত্তর, দক্ষিণ) সব খবর