Cvoice24.com

নেভাল একাডেমিতে গ্রীষ্মকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ পরিদর্শনে নৌবাহিনীর প্রধান

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭:০৭, ২৩ জুন ২০২২
নেভাল একাডেমিতে গ্রীষ্মকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ পরিদর্শনে নৌবাহিনীর প্রধান

চট্টগ্রামের বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতির কুচকাওয়াজ।

নৌবাহিনীর মিডশিপম্যান-২০১৯ ‘বি’ ব্যাচ এবং ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার-২০২২ ‘এ’ ব্যাচের গ্রীষ্মকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর-২০১৯ ‘বি’ ব্যাচের ৬২ জন মিডশিপম্যান এবং ২০২২ ‘এ’ ব্যাচের ৬ জন ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসারসহ মোট ৬৮ জন নবীন কর্মকর্তা কমিশন লাভ করেন। এদের মধ্যে ৮ জন নারী, ২ জন মালদ্বীপ এবং এক জন প্যালেস্টাইনের মিডশিপম্যান রয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) চট্টগ্রামের বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল প্রধান অতিথি হিসেবে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী প্রধান বিভিন্ন বিষয়ে সর্বোচ্চ মান অর্জনকারীদের হাতে পদক তুলে দেন। কমিশনপ্রাপ্ত নবীন কর্মকর্তাদের মধ্যে মিডশিপম্যান-২০১৯ ‘বি’ ব্যাচ থেকে মিডশিপম্যান আশরাফুর রহমান, সব বিষয়ে সর্বোচ্চ মান অর্জনকারী সেরা চৌকস মিডশিপম্যান হিসেবে ‘সোর্ড অব অনার’ অর্জন করেন। মিডশিপম্যান এইচ এম ইফাজ রহমান, (ই), বিএন প্রশিক্ষণে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মান অর্জনকারী হিসেবে ‘নৌ প্রধান স্বর্ণপদক’ লাভ করেন। এছাড়াও ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার-২০২২ ‘এ’ ব্যাচের অ্যা. সাব-লেফটেন্যান্ট কাজী মো. ইখতিয়ার রেজা রিয়ন, শ্রেষ্ঠ ফলাফল অর্জনকারী হিসেবে ‘বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন স্বর্ণপদক’ লাভ করেন। পরে নবীন কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করেন এবং তাদের র‍্যাঙ্ক পরিয়ে দেওয়া হয়।

কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান শেষে সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে নৌবাহিনী প্রধান তার ভাষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসামান্য অবদানের কথা স্মরণ করেন। সেই সঙ্গে স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী নৌ-সেনা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অসামান্য প্রজ্ঞা, দুরদর্শিতা ও দিক নির্দেশনায় নৌ-বাহিনী আজ আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে একটি আধুনিক ও ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে সুপরিচিত। নৌবাহিনীর আধুনিকায়নে ইতিমধ্যে নৌ-বহরে সাবমেরিনসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আধুনিক যুদ্ধজাহাজ, হেলিকপ্টার, মেরিটাইম প্যাট্রোল এয়ারক্রাফটসহ আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি সংযোজিত হয়েছে এবং সম্প্রতি নতুন ছয়টি যুদ্ধজাহাজ নৌ-বহরে কমিশনিং করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ত্রিমাত্রিক নৌ-বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে হেলিকপ্টার, উন্নততর জাহাজ এবং আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি সংযোজনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া নির্মাণাধীন ঘাঁটিসমূহের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। 

পদ্মা সেতু উদ্বোধন প্রসঙ্গে নৌবাহিনী প্রধান বলেন, বহুল কাঙ্ক্ষিত পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলসহ সমুদ্র বন্দরসমূহের কার্যক্রম বৃদ্ধি পাবে। সেইসঙ্গে এ সংক্রান্ত নিরাপত্তা বজায় রাখার মাধ্যমে দেশীয় অর্থনীতির গতিশীলতা নিশ্চিতকরণে নৌবাহিনীর প্রতিটি সদস্যকে আরও দৃঢ়তার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান নৌপ্রধান। 

এসময় বৈশ্বিক মহামারীর মধ্যে নবীন কর্মকর্তাগণ তাদের মনোবল অক্ষুণ্ন রেখে যে উন্নত প্রশিক্ষণ ও পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছে তার ভূঁয়সী প্রশংসা করেন নৌপ্রধান। একইসঙ্গে কঠোর এ প্রশিক্ষণ প্রদানে যেসকল কর্মকর্তা, প্রশিক্ষক ও নৌসদস্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদের প্রতিও আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তিনি।

নৌবাহিনী প্রধান আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আজকের নবীন কর্মকর্তারা নেভাল একাডেমি থেকে অর্জিত জ্ঞান যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে নিজেদেরকে যোগ্য কর্মকর্তা হিসেবে গড়ে তুলবে এবং ভবিষ্যৎ কর্মজীবনে এই প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা ও অগ্রগতির পথে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে। পেশা হিসেবে দেশ সেবার এ পবিত্র দায়িত্বকে বেছে নেয়ায় নবীন কর্মকর্তাদের আন্তরিক অভিনন্দন ও সশস্ত্র বাহিনীর গর্বিত সদস্য হিসেবে দেশপ্রেম ও শৃঙ্খলাবোধকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেশের জন্য কাজ করার আহবান জানান তিনি। পরিশেষে নৌপ্রধান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে নবীন কর্মকর্তাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিজেদেরকে আত্মনিয়োগ করার পরামর্শও দেন।

কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, অসামরিক কর্মকর্তা ও সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত নবীন কর্মকর্তাদের অভিভাবকবৃন্দ।


 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়