Cvoice24.com

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টসহ দুই ইস্যুতে চবি শিক্ষক সমিতির প্রতিবাদ

চবি প্রতিবিধি

প্রকাশিত: ১৪:১৩, ১১ এপ্রিল ২০২২
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টসহ দুই ইস্যুতে চবি শিক্ষক সমিতির প্রতিবাদ

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের  (চবি) এক শিক্ষককে ছাত্র নেতার হুমকির প্রতিবাদ জানিয়েছে চবি শিক্ষক সমিতি।

সোমবার (১১ এপ্রিল) সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক ড. সেলিনা আখতার ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. সঞ্জীব কুমার ঘোষ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবাদ জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মুন্সিগঞ্জের রাজকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষক 'হৃদয় চন্দ্র মন্ডল ও নওগাঁর দাউল বারবাকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা 'আমোদিনী পালকে' হেনস্থা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নষ্টের প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

সম্প্রতি টিপকান্ত, হৃদয় চন্দ্র মন্ডলের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননা ও এবং নওগাঁর হিজাবকান্ত একইসূত্রে গাথা। দেশকে অস্থিতিশীল করতে ষড়যন্ত্র করছে একটি চক্র। তাই সবগুলো ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও ধর্মীয় উস্কানীর মাধ্যমে সব জায়গায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেয়ার ব্যর্থতা ও দায়িত্ব অবহেলায় বাংলাদেশকে বারবার অস্থিতিশীল করার সুযোগ পাচ্ছে দোষীরা। এতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বঙ্গবন্ধুর হাতেগড়া অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিশ্বে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। এধরনের ঘটনা বাংলাদেশের অস্তিত্বের জন্য অশনিসংকেত। পরিকল্পিতভাবে শ্রেণীকক্ষের পাঠদান মোবাইলে ধারণ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িত্বকতার অভিযোগ তুলে শিক্ষককে হেনস্তা ও গ্রেপ্তারের মতো ঘটনা স্বাধীন মতপ্রকাশ ও মুক্তবুদ্ধির বিকাশে বাধা সৃষ্টি করবে। এসকল বিষয়ে এখনই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন এবং তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি দাবি জানাচ্ছে।

আরেক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের প্রভাষক জনাব মো. তানবীর হাসানকে কোন এক ছাত্রের পরীক্ষার হলে নকল ধরার কারণে রাজু মুন্সি নামক এক ছাত্র নেতার টেলিফোনের মাধ্যমে হুমকি (প্রত্রিকায় প্রকাশিত) প্রদানসহ আরও কতিপয় ঘটনা, যেমন ফরেষ্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস ইনষ্টিটিউটের পরিচালকসহ শিক্ষকদের রুমে হামলা, সোহরাওয়ার্দী হলের প্রভোস্টের কক্ষে হামলা, শিক্ষকদের গাডড়ি আটক, ছাত্রদের দাবি আদায়ের নামে শিক্ষকদের হয়রানি করা, শিক্ষক সমাজকে উদ্বিগ্ন করে তুলছে।

চবি শিক্ষক সমিতি মনে করে এই প্রতিটি ঘটনাই শিক্ষকদের স্বাধীনতার প্রতি হুমকি ও মর্যাদার প্রতি আঘাত। শিক্ষকদের স্বাধীনতায় অযাচিতভাবে হস্তক্ষেপ করা ও দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার অভিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে বড় অন্তরায়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশের পথে বাধাগুলো অপসারণ করা এবং শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। বর্তমান ক্রমবর্তনশীল এই পরিস্থিতির উত্তরনের দায়িত্ব প্রশাসনের। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ না করার কারণে এই প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে বলে শিক্ষক সমিতি মনে করে।

শিক্ষক সমিতি প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করে দোষীদের উপযুক্ত শান্তির আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছে। এছাড়া ভবিষ্যতে যেন এই ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি না ঘটে এবং শিক্ষকদের স্বাধীনতা ও মর্যাদার যেন অযাচিত হুমকি ও আঘাত না আসার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার জোর দাবি জানাচ্ছে। শিক্ষক কখনো ছাত্রের প্রতিপক্ষ হতে পারে না। ছাত্র-শিক্ষক ও অন্যান্য পক্ষগুলোর সম্মিলিত ও আন্তরিক প্রচেষ্টার মাধ্যমেই কেবল শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা সম্ভব এবং প্রশাসনিক সমন্বয়ের মাধ্যমেই এটা সম্ভব বলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি বিশ্বাস করে।

সিভয়েস/এএ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়