Cvoice24.com

চার দাবিতে চবি উপাচার্যকে চিঠি; তিন দিনে পূরণ না হলে আন্দোলন

চবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১:২৮, ২০ মার্চ ২০২৩
চার দাবিতে চবি উপাচার্যকে চিঠি; তিন দিনে পূরণ না হলে আন্দোলন

শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম তদন্ত, অডিও কেলেঙ্কারিতে যুক্ত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করাসহ চার দফা দাবিতে উপাচার্যকে চিঠি দিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শিক্ষক সমিতি। 

সোমবার চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকি ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল হকের স্বাক্ষর করা তিন পৃষ্ঠার চিঠিটি উপাচার্যের কাছে পাঠানো হয়। 

চিঠিতে দাবি আদায়ে তিন দিন সময় বেধে দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করার হুঁশিয়ারি জানান তাঁরা।

দাবিগুলো হলো— চবি প্রশাসনের সিন্ডিকেটে অবশিষ্ট ক্যাটাগরির (ডিন, প্রভোস্ট, একাডেমিক কাউন্সিল ইত্যাদি) শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা; নিয়োগ বাণিজ্য সংক্রান্ত অডিও কেলেঙ্কারিতে যুক্ত ব্যক্তিদের শাস্তির জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া; বিজ্ঞাপিত পদের অতিরিক্ত কিংবা বিভাগীয় পরিকল্পনা কমিটির সুপারিশবিহীন বিজ্ঞপ্তি প্রদান ও বাতিল আবেদনকারীদের নিয়োগের সুপারিশ নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের সুরাহা এবং দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সমিতির দাবি উপেক্ষা করে পরিচালিত বিভিন্ন অনিয়ম-অসংগতির ব্যাপারে সন্তোষজনক ও গ্রহণযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বর্তমান উপাচার্য ও সহ-উপাচার্য দায়িত্ব গ্রহণের পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৭৩ অনুযায়ী বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও সিন্ডিকেটে বিভিন্ন ক্যাটাগরির শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন করেননি। যথাসময়ে বেশ কিছু শিক্ষকের পদোন্নতির নির্বাচনী বোর্ড সভাও ডাকা হয়নি। পদোন্নতিতে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নকারী বিভিন্ন অনিয়ম-অসংগতি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। তাতে শিক্ষকদের মধ্যে বর্তমান প্রশাসনের প্রতি ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে।

বিশেষ করে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ সম্পর্কিত নিয়োগ বাণিজ্য বিষয়ক কয়েকটি অডিও কেলেঙ্কারি প্রকাশ পায়। এসব ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষক সমাজ চরমভাবে ভাবমূর্তি সংকটে পড়ে। ওই অডিও কেলেঙ্কারি ও এসংক্রান্ত সংবাদের মাধ্যমে অন্যদের সঙ্গে উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন কর্মচারীর নিয়োগ বাণিজ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

এসব কারণে দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে এই বিশ্ববিদ্যালয়, এতে অধ্যয়নরত বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের মান-মর্যাদা চরমভাবে ভূলুন্ঠিত হয়।

চিঠিতে আরও লেখা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষক সমিতির বিভিন্ন দাবি আমলে না নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৭৩-কে অবজ্ঞা করছে। বিভাগীয় পরিকল্পনা কমিটির সুপারিশ ছাড়া বিজ্ঞাপন, বিজ্ঞাপিত পদের অতিরিক্ত নিয়োগ ও তথ্য জালিয়াতির মতো অভিযোগে আবেদনপত্র বাতিল করে প্রার্থীকে নিয়োগ পরীক্ষায় আমন্ত্রণ জানানোর মতো অগ্রহণযোগ্য কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

সম্প্রতি একজন শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডের সভায় সদস্য হিসেবে বিভাগীয় সভাপতির দ্বিমত পোষণ সত্ত্বেও উপাচার্যের উপস্থিতিতে বিভাগীয় পরিকল্পনা কমিটির সভায় তথ্য গোপনের পাশাপাশি মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতারণা চেষ্টার অভিযোগে আবেদনপত্র বাতিল করা হয়। পরে অত্যন্ত কম মেধাসম্পন্ন একজন প্রার্থীকে (যিনি চবিতে দায়িত্বরত একজন সহকারী প্রক্টরের স্ত্রী এবং ২০ বছর আগে এমএ সম্পন্ন করেছেন) বেআইনিভাবে নিয়োগ পরীক্ষায় আমন্ত্রণ জানানো হয়। তাঁকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের জন্য সর্বোচ্চ সুপারিশের বিষয় সংবাদপত্রগুলোতে প্রকাশিত হওয়ার ঘটনা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী সমাজকে চরম লজ্জায় ফেলেছে।

চিঠিতে বলা হয়, উপাচার্য ও সহ-উপাচার্য দুজনেরই দেশের সার্বিক শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি ন্যূনতম আগ্রহ বা দায়িত্ববোধ নেই। যা সরকারের উন্নয়ন অভিযাত্রা ও সাফল্যকে ম্লান করে দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি করে। তাই কোনো অবস্থাতেই দেশের অন্যতম সেরা এই বিদ্যাপীঠে বিরাজমান প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও অসংগতি আর চলতে দেওয়া যায় না। এ কারণে জরুরি ভিত্তিতে সার্বিক বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য চবি শিক্ষক সমিতি প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানায়।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়