সাতকানিয়ায় বন কর্মকর্তা-কাঠ চোর ফোনালাপ ফাঁস
‘বড় স্যারকে নিয়ে আসতেছি, ওখানের সবাইকে খবর দিয়ে দেন’
“আপনারা সাবধান হোন, বড় স্যারকে নিয়ে আসতেছি, ওখানের সাবাইকে খবর দিয়ে দেন” কথাগুলো কোন নাটকের ডায়লগ নয়। কথাগুলো বন বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মাচরীদের সাথে কাঠ চোরদের মুঠোফোনের কথপোকথন। সুকৌশলে সাতকানিয়া উপজেলার এক কাঠ চোরাই কারবারী ও অবৈধ করাতকল ব্যবসায়ীর মুঠোফোন থেকে নেয়া। কথপোকথনটি বন বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্তৃক গোপন তথ্য ফাঁসের একটি চিত্র।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি সোমবার স্থানীয় বন বিভাগ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার কালিয়াইশ ইউনিয়নের উত্তর কালিয়াইশ ৫নং ওয়ার্ড হাসপাতাল মাঠ এলাকায় অবৈধ কাঠ উদ্ধারের অভিযান পরিচালনা করেন। এর দু’দিন পর ১৩ ফেব্রুয়ারী বৃহষ্পতিবার একই এলাকায় অবৈধ করাতকলের বিরুদ্ধে পুনরায় অভিযান চালানো হয়। স্থানীয় বন বিভাগের বহু গড়িমসির পর অবশেষে উর্ধ্বতন মহলের চাপে ওই এলাকায় এসব অভিযান চালাতে বাধ্য হলেও অভিযানের আগে উপরোক্ত কথপোকথনের মাধ্যমে বন বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাঠ পাচারকারীদের সতর্ক করে দেন। যার কারনে কাঠ উদ্ধারের অভিযানের খবর অনেক আগেই এলাকায় ফাঁস হয়ে যায়। কাঠ চোরেরা সাধ্যমত মজুদস্থল থেকে কাঠ সরিয়ে নেয়। প্রথমদিন অবৈধ কাঠ উদ্ধারের অভিযান সন্ধ্যা ৬টা থেকে চালানো হলেও সকাল থেকে কাঠ চোরেরা তড়িঘড়ি করে মজুদ কাঠ সরানো শুরু করে।
একইভাবে অবৈধ করাতকলে অভিযান চালানোর সময় আগেভাগেই বন বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী যারা অবৈধ কাঠ পাচারকারীদের টাকায় লালিত হয় তারা অভিযানের পরিকল্পনার সংবাদ ফাঁস করে দেয়।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে দোহাজারী লালুটিয়া রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা জসিম উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ ধরনের কাজ যদি কোন বন কর্মকর্তা-কর্মচারী করে থাকেন। তাহলে সেটা হবে অত্যন্ত গর্হিত কাজ। যার জন্য আমার পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করা ছাড়া আর কোন কিছু করা নেই।
একই কথা বলেন মাদার্শা রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, এ ধরনের কাজ যারা করেন তারা সরকারি চাকুরী করার যোগ্য বলে আমি মনে করিনা।
এ ব্যাপারে পদুয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা সরওয়ার জাহানের মুঠোফোনে বার বার রিং করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
সাতকানিয়া প্রতিনিধি