নৌ-রুটে জাহাজ চলাচলে শৃঙ্খলায় সিরিয়াল
উদ্বোধনের আগমুহূর্তেও নির্ধারণ হয়নি ভাড়া
সিভয়েস২৪ প্রতিবেদক
দেশের ৩৪টি নৌ-রুটে পণ্য পরিবহনে অনিয়ম ঠেকাতে সিরিয়াল মানতে নতুন নীতিমালা করেছে নৌ পরিবহন অধিদপ্তর। ফলে আগামীকাল (সোমবার) থেকে আমদানিকারকের পছন্দ মতো জাহাজ ভাড়া করার সুযোগ থাকছে না। তবে কোন পণ্যের জন্য জাহাজ ভাড়া কত হবে তা এখনও নির্ধারণ করতে পারেনি দায়িত্বশীল সংস্থা বাংলাদেশ ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট কো–অর্ডিনেশন সেল (বিডব্লিউসিসি)।
জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে লাইটার জাহাজযোগে পণ্য পরিবহনে ২০২৩ সালে সিরিয়াল প্রথা ভেঙে দেওয়া হয়। এক বছর ধরে জাহাজ মালিক এবং আমদানিকারক জাহাজ মালিক দরকষাকষির মাধ্যমে ভাড়া নির্ধারণ করতো। এতে বিভিন্ন অনিয়ম দৃশ্যমান হয়। আগে লাইটার জাহাজের সিরিয়াল দেওয়ার কাজ বিডব্লিওটিসি করতো বলেই নতুন নীতিমালা অনুসারে সংস্থাটির নাম পাল্টে বিডব্লিউসিসি করে নৌপরিবহন অধিদপ্তর এ নীতিমালা প্রণয়ন করে ১৫ অক্টোবর। এতে লাইটার জাহাজ পরিচালনাকারী সংস্থা হিসেবে বিডব্লিউসিসি নাম দেওয়া হলেও সংস্থাটিকে এ কাজ করার জন্য ইনল্যান্ড ভেসেল ওনার্স এসোসিয়েশন অব চিটাগাং (আইভোয়াক), বাংলাদেশ কার্গো ভ্যাসেল ওনার্স এসোসিয়েশন (বিসিভোয়া), কোস্টাল ভেসেল ওনার্স এসোসিয়েশনের (কোয়াব) সঙ্গে সমন্বয় করতে বলা হয়। শুক্রবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের হোটেল সেন্টমার্টিনে নীতিমালা মেনে এ ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে তিন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এতে আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ার কথা জানান আমদানিকারকরা।
এ নিয়ে বাংলাদেশ আভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন নীতিমালা অনুযায়ী নৌ পথে পণ্য পরিবহনে বাড়তি ভাড়া গুনতে হবে— এমন আশঙ্কা করছেন আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা। তবে এমন হওয়ার কোনো সুযোগ দেখছি না। বিডব্লিউসিসি এ সিরিয়াল নিয়ন্ত্রণের কাজ করলে জাহাজ ভাড়া নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম থাকবে না। আর এ সংস্থা তাদের স্টেক হোল্ডারদের নিয়ে যেহেতু দায়িত্ব পালন করবে, ট্যারিফ নির্ধারণের ক্ষেত্রে সবার মতামত নেওয়া হবে। বরং এক্ষেত্রে কোনো জাহাজ ভাড়া না পাওয়ার জটিলতা থাকবে না।’
এ নিয়ে কথা হলে আইভোয়াকের মুখপাত্র পারভেজ আহমেদ বলেন, ‘নীতিমালা থাকলে নিয়ম মেনেই কাজ হবে। এক্ষেত্রে মুক্তবাজার অর্থনীতি ব্যহত হওয়ার সুযোগ নেই। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গার ৩৪টি নৌ রুটে পণ্য পরিবহনের কাজে ১২’শ জাহাজ চলাচল করে। নীতিমালা থাকলে কোনো জাহাজ বসে থাকবে না। দর কষাকষিতে জাহাজ ভাড়া না হওয়ায় অনেকসময় জাহাজ বসিয়ে রাখতে হয়। এতে জাহাজ মালিকদের ক্ষতি হয়। নির্ধারিত ভাড়া থাকলে, সিরিয়াল মেনে জাহাজ চলাচল নিশ্চিত করলে জাহাজ শিল্প আরও উন্নত হবে। আগামী সোমবার (৪ নভেম্বর) সকাল ১১ টা থেকে সিরিয়াল প্রথায় জাহাজ পরিচালনার করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরমধ্যে জাহাজের ভাড়াসহ আনুষাঙ্গিক অন্যান্য বিষয়গুলো চূড়ান্ত করার কথা রয়েছে। তবে আমি যেহেতু ওই কমিটিতে নেই, কমিটির কাজ কতটুকু হলো তা বলা সম্ভব হচ্ছে না।’
জাহাজ ভাড়া নির্ধারণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিডব্লিউসিসির মুখপাত্র আতাউল কবীর রঞ্জু বলেন, ‘আমরা এখনও ভাড়া সংক্রান্ত বিষয়টি ফাইনাল (চূড়ান্ত) করতে পারিনি। আগামীকাল (সোমবার) সকাল ১১টায় আমাদের অফিসে মিটিং হবে। সেই মিটিংয়েই ভাড়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। এ সময় ভাড়াসহ সিরিয়াল দেওয়ার পদ্ধতিগত সকল বিষয় স্পষ্ট করা হবে।’