Cvoice24.com

চবির ছাত্রাবাসে ২৪ মাসেও বসেনি সিসি ক্যামেরা, সিদ্ধান্ত থেকে সরে গেল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ 

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩:০১, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
চবির ছাত্রাবাসে ২৪ মাসেও বসেনি সিসি ক্যামেরা, সিদ্ধান্ত থেকে সরে গেল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ 

২০১৯ সালে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হলের ভেতরে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে সর্বত্র। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে বিরাজ করে আতঙ্ক। এতে নড়েচড়ে বসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) প্রশাসন। উদ্যোগ নেওয়া হয় ছাত্রদের প্রতিটি আবাসিক হলে ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা বসানোর। কিন্তু ২৪ মাস পার হলেও সেই উদ্যোগ এখনো বাস্তবায়ন করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বরং রক্ষণাবেক্ষণ খরচসহ নানা অজুহাত দেখিয়ে সেই উদ্যোগ থেকে সরে আসার কথা বলছে চবি প্রশাসন। 

ইতোমধ্যে করোনার ঢেউ কাটিয়ে স্কুল-কলেজ খুলছে শিক্ষা মন্ত্রণালায়। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ও খোলার কথা রয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশ পরিষ্কার ও হল ধোঁয়া মোছার কাজ চলছে। কিন্তু সিসি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত থেকেছে কাগজ কলমে সীমাবদ্ধ। বাস্তবায়ন হবে কিনা তাও নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। অতিদ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় ও হল খোলার আগে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে প্রশাসনের গৃহিত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, ২০১৫ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের দিকে ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্ট, শহীদ মিনার, চাকসু ভবন, মেডিকেল সেন্টার, কেন্দ্রীয় মসজিদ, কলার ঝুপড়ী, স্টেশন চত্বর, দোলা স্মরণী ও কয়েকটি হল গেইটসহ বিভিন্ন স্থানে বসানো হয় সিসি ক্যামেরা। কিন্তু হলের ভিতরে সিসি ক্যামেরার বসানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেনি তৎকালীন কোনো প্রশাসন।

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে হল রয়েছে ১১টি। যার মধ্যে ছাত্রদের জন্য ৭টি ও ছাত্রীদের জন ৪টি আবাসিক হল রয়েছে। এসব হলে আবাসন সুবিধা পাচ্ছে প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী। মোট ১১টি হলের মধ্যে ছাত্রীদের হলগুলোতে সিসি ক্যামেরা থাকলেও ছেলেদের ৭টি হলে তা নেই। তবে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডর পর ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর ছাত্রদের সব হলে সিসি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সিদ্ধান্তের দুইবছর পার হলে তা বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষের দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি।

হলগুলাতে কোন প্রকার অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে পরবর্তীতে সিসি ক্যামেরা দেখে ব্যবস্থা নিবেন এমন সুব্যবস্থাও নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের। শিক্ষার্থীদের আশঙ্কা বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা চবিতে ঘটলে এর দায়ভার কে নেবে?

সোহরাওয়ার্দী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী তানজির তারিফ বলেন, ‘কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত কাগজ কলমে সীমাবন্ধ। বস্তাবায়ন হবে কিনা তাও নিয়ে আমরা সন্দিহান। বিশ্ববিদ্যালয় খোলা থাকা অবস্থায় হলগুলোর বেশ কয়েকটি কক্ষে ও হলের ছাদে প্রায় সময় চলতো নেশার আড্ডা। মনিটরিং না হওয়ায় পার পেয়ে যাচ্ছে অপরাধীরা। হলগুলো খোলার আগে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে প্রশাসনের গৃহিত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার দাবি জানাচ্ছি।’ 

এ এফ রহমান হলের আরেক আবাসিক শিক্ষার্থী পারভেজ হোসাইন বলেন, ‘দুই বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের সব হলে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করার উদ্যেগে আমরা কিছুটা স্বস্তি লাভ করেছিলাম। বর্তমানে তা বাস্তাবয়ন না হওয়ায় আমরা হতাশ।’

তিনি বলেন, ‘চুরি, মাদকের হাতছানি ও অস্ত্রের রাজনীতি বন্ধসহ অপরাধ দমন এবং অপরাধীদের শনাক্ত করার জন্য সিসি ক্যামেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে সিসি ক্যামেরা থাকাটা খুবই জরুরি।'

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম মনিরুল হাসান সিভয়েসকে বলেন, সিসি ক্যামেরা স্থাপনের বিষয়টি মৌখিক। লিখিত কোনো রেগুলেশন ছিল না। এখন এত টাকা খরচ করে হলগুলোতে সিসি ক্যামেরা লাগানো যৌক্তিক হবে না। স্থাপন করলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যাবে। আপাতত হলের বাহিরে যে ক্যামেরাগুলো আছে সেগুলো চলমান রাখার চেষ্টা করবো।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়