উদ্ভাবনী শিক্ষা ব্যবস্থায় সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান শিক্ষা উপমন্ত্রীর

স্মরণশক্তি নির্ভর সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে উদ্ভাবনী নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থায় সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী জনাব মহিবুল হাসান চৌধুরী।

শনিবার সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ সম্মেলন কক্ষে ‘পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি’ শীর্ষক বিভাগীয় কর্মশালার ওরিয়েন্টেশনে এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, সরকার নতুন যে শিক্ষাক্রম চালু করেছে তাতে অভ্যস্ত হতে হলে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত বইগুলো পড়তে হবে। স্মরণশক্তি নির্ভর সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে উদ্ভাবনী নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থায় সম্পৃক্ত হতে হবে।

প্রধান বক্তার বক্তৃতায় স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন উপাচার্য ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি অধ্যাপক মুহাম্মাদ আলী নকী বলেন, বই শুধু পাঠ করলে হবে না পাঠ দক্ষতাও বাড়াতে হবে। তিনি শিক্ষা উপমন্ত্রীকে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির গুরুত্ব অনুধাবন করে কর্মসূচির মেয়াদ আরও বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করেন। 

জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির সঙ্গে শুধু শিক্ষার্থী নয় শিক্ষক এবং অভিভাবকদেরকেও সম্পৃক্ত করতে হবে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসাররা যেন এই বিষয়টি নিশ্চিত করেন যে সপ্তাহের ১ দিন ১ ঘণ্টা শিক্ষকরা লাইব্রেরির কাজ করেন।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র শিক্ষা উপদেষ্টা ড. মো. মাহামুদ-উল-হক বলেন, সেকায়েপ প্রকল্পের অধীনে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি এতোটাই সফল হয়েছিল যে এটি বিশ্বে একটি মডেলে পরিণত হয়েছে। সেকায়েপ প্রকল্পের সাফল্য এসইডিপিতেও বজায় থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্কিম উপ-পরিচালক ড. আছিছুল আহছান কবীর বলেন, ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। 

অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী বলেন, একজন শিক্ষার্থীর সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবনী শক্তি বই পড়ার দক্ষতার মাধ্যমে তৈরি হয়। পড়ার দক্ষতা তৈরিতে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখবে। 

কর্মশালার শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির কো-টিম লিডার শামীম আল মামুন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির ডেপুটি টিম লিডার (প্রোগ্রাম) মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ।

এই কর্মশালার মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিভাগের ৬৪টি উপজেলার ২ হাজার ৩শ ৩৩টি (২৩৩৩) মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির বইপড়া কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এর ফলে আনুমানিক৩  লাখ ৯৬ হাজার ৬১০  জন ছাত্রছাত্রী স্কিমের তালিকাভুক্ত বইগুলো পড়ে নিজেদের সমৃদ্ধ, মানবিক ও মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে। 

উল্লেখ্য পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি দেশের ৬৪ জেলার ৩০০ উপজেলায় ১৫ হাজার মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাস্তবায়িত হচ্ছে। কর্মসূচির আওতায় প্রতিবছর প্রায় ২৫ লক্ষ ছাত্রছাত্রী বই পড়ার সুবিধা পাবে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র উক্ত কর্মসূচি মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করছে। ইতোমধ্যে ৪টি বিভাগে (ঢাকা, রাজশাহী, বরিশাল ও খুলনা) কর্মশালা সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।