Cvoice24.com

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে থাকেন না বরাদ্দপ্রাপ্তরা

রাঙামাটি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৪:১৯, ২৪ মে ২০২৩
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে থাকেন না বরাদ্দপ্রাপ্তরা

রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বগাছড়ি এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের ঘর পায় আটটি পরিবার। তবে এদের মধ্যে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন মাত্র তিন পরিবার। বাকি পাঁচ পরিবারের চারটির সদস্যরা মাঝে মাঝে এসে দেখাশুনা করে যায় আর এক পরিবারের সদস্যরা আসেই না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। 

 সম্প্রতি সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ভূমিহীন ও গৃহহীনদের প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের আটটির ঘর পায় হাদিজা বেগম, নাসিমা বেগম, সালমা বেগম, শাহানুর বেগম, মো. জমির আলী, মুক্তা দাশ, কনক দাশ ও দুলালী খীষা। যাদের বেশির ভাগের দরজায় তালা লাগানো। যে তিন পরিবার সেখানে স্থায়ীভাবে রয়েছেন তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বন্ধ ঘরগুলোতে তেমন কেউ থাকে না।  তবে তারা মাঝে মাঝে আসেন দেখতে। আর একটি পরিবার তেমন একটা আসে না বললেই চলে।

আট পরিবারকে দেয়া ঘরের তিনটিতে স্থায়ীভাবে থাকছেন হাদিজা বেগম, নাসিমা বেগম ও সালমা বেগম। ভাঙারি ব্যবসায়ী জমির আলী সপ্তাহ দুয়েক পরপর আসেন, শাহানুর বেগম,মুক্তা দাশ, কনক দাশ মাঝে মাঝে সেখানে আসেন ঘরের দেখাশুনা করতে। তবে দুলালী খীষা ঘর পাওয়ার প্রথম দিকে সেখানে থাকলেও পড়ে আর আসেন না বলে জানিয়েছেন সেখানে বসবাসরতরা। 

নাসিমা বেগম জানান, এখানে আমরা আট পরিবার প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের ঘর পেয়েছি। যার মধ্যে তিন পরিবার এখানে থাকি আর বাকি পাঁচ পরিবার থাকে নানিয়ারচরে। তিনি আরও জানান, এখানে কোন কাজ না থাকায় তারা নানিয়ারচরে থাকেন। মাঝে মাঝে দেখতে আসেন। প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেয়ে আমরা খুব খুশি। ভালো আছি।

নিয়মিত না থাকা জমির আলী জানান, আমি ভাঙারির ব্যবসা করি নানিয়ারচর বাজারে। সেখানে কাপ্তাই লেকের পাড়ে আমার একটা ঘর আছে। সে ঘরের নিচে পানি আসে তাই এই ঘর ইউএনও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী উপহার হিসেবে, সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আমাদের পায়ের নিচে মাটি ছিল না, তিনি মাটি দিয়েছেন। কিন্তু এখানে আয় উপার্জন করার কোন উৎস নেই। যার কারণে সপ্তাহ দুয়েক পর পর আসি আর বেশির ভাগ সময় নানিয়াচর বাজারে থাকতে হয়। আগের ঘরে গিয়ে থাকি। আর এখানে ভাঙ্গারির জিনিস এনে রাখি। এখানে কোন কিছু করে উপার্জনের ব্যবস্থা থাকলে এখানেই স্থায়ীভাবে থাকতাম।

কনক দাশ, মুক্তা দাশ, শাহিনুর বেগম ও দুলালী খীসার মুঠোফোন নম্বর না পাওয়ায় তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে এলাকাবাসী জানান তারা নানিয়াচর বাজারে বাড়ি ঘরে কাজসহ নানা কাজ করে থাকেন। যার কারণে এখানে থাকেন না।

বুড়িঘাট ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার আব্দুল মালেক জানান, এখানে বিভিন্ন পর্যায়ে ৮টি পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর দেওয়া হলেও তারা যে কাজ করে উপার্জন করবে তার তেমন ব্যবস্থা নাই। তিনটি পরিবার স্থায়ীভাবে থাকছেন। বাকিরা কাজের জন্য বাইরে থাকেন, মাঝে মাঝে আসা যাওয়ার মধ্যে আছেন। 
তিনি আরও বলেন, দুলালী খীসা প্রথমদিকে ছিলেন তার পারিবারে মনমালিন্য হওয়ার পর থেকে তিনি আর এখানে থাকেন না। বিষয়গুলো আমি নানিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছি, যাতে তাদের এখানে স্থায়ীভাবে রাখার ব্যবস্থা করেন।

এই বিষয়ে নানিয়ারচর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ শাহরিয়ার মুক্তার জানান, তাদের ঘর দেওয়া হয়েছে সেখানে থাকার জন্যই। ঘর ফাঁকা রাখার কোন সুযোগ নাই।  না হলে আমরা বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিব। আমি বিষয়টি নিয়ে তাদের সাথে আলোচনা করবো।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়