Cvoice24.com

স্বাধীনতা দিবসেও দুয়ার খুলবে না শহীদ মিনারের

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:১৪, ১৩ মার্চ ২০২৩
স্বাধীনতা দিবসেও দুয়ার খুলবে না শহীদ মিনারের

মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুলের মাঠে নির্মিত বিকল্প শহীদ মিনার।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় গত দেড় বছর ধরে বিকল্প শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন চট্টগ্রামবাসী। যদিও গণপূর্ত বিভাগ গত বছরের শেষ দিকে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা জানায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়ে উঠেনি। এরমধ্যেই শহীদ মিনারের নির্মাণ কাজ শেষ হলেও প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় নিরাপত্তাজনিত কারণে ২৬ মার্চের অনুষ্ঠান নতুন শহীদ মিনারে হচ্ছে না। তবে ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে জানায় গণপূর্ত বিভাগ। 

জানা যায়, ২৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউট হল ভেঙে সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স নির্মাণ করছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে। প্রকল্পের অধীনে মুসলিম ইনস্টিটিউট হল ও পাবলিক লাইব্রেরির অংশের পুরনো স্থাপনা ভেঙে ১৫ তলা গণগ্রন্থাগার ও আট তলা অডিটরিয়াম ভবন নির্মাণ চলছে। এ কারণেই পুরাতন শহীদ মিনার ভেঙে সাময়িকভাবে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে নগরের মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে। সেখানে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে বিকল্প শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। দীর্ঘ ৬০ বছর পর গতবছরই প্রথম চট্টগ্রামবাসী একুশের প্রভাত ফেরিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন চট্টগ্রামের বিকল্প সেই শহীদ মিনারে।

এর আগে গত ৬ মার্চ সকালে নতুন শহীদ মিনারের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করে ২৬ শে মার্চের অনুষ্ঠানও বিকল্প শহীদ মিনারে করার সিদ্ধান্ত নেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। নির্মাণাধীন নতুন শহীদ মিনারে ঝুঁকি থাকায় ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ শেষ না হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও একই নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণ দেখিয়ে ২১শে ফেব্রুয়ারিতেও শ্রদ্ধা জানাতে পারেনি নগরবাসী। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাহুল গুহ সিভয়েসকে বলেন, ‘আমাদের শহীদ মিনার রেডি। কিন্তু সমস্যা হলো এখনো কনস্ট্রাকশনের (নিমার্ণাধীন ভবন) কাজ চলছে। যে কারণে নিরাপত্তার বিষয়টিকে মাথায় রেখে আমরা কোনো ধরনের ঝুঁকি নিতে চাইনি। কারণ জাতীয় দিবসগুলোতে বিভিন্ন বয়সী মানুষের ভিড় থাকে। এবারের ২১শে ফেব্রুয়ারিতে যে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে এরকম ভিড় থাকলে কোনো না কোনো দুঘর্টনা ঘটে যেতে পারে। তাই সবার আগে নিরাপত্তার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছি। যে কারণে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৬শে মার্চেও বিকল্প শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাবেন নগরবাসী।’

তিনি আরও বলেন, ‘ডিসেম্বরের আগেই আমাদের সব কাজ শেষ হয়ে যাবে। আসছে বিজয় দিবসে নতুন শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন সবাই।’

প্রসঙ্গত, ১৯৬২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারিতে নগরের কেসি দে রোডের পাহাড়ের পাদদেশে চট্টগ্রামে প্রথম শহীদ মিনার নির্মিত হয়। পরে ১৯৭৪ সালে এটি আরও আধুনিকায়ন করা হয়। চট্টগ্রামে কেন্দ্রীয় এই শহীদ মিনারটি ছাড়া আর কোনো স্মৃতিসৌধ না থাকায় এত বছর ধরে একুশে ফেব্রুয়ারি, ২৬ মার্চ, ১৬ ডিসেম্বরসহ জাতীয় দিবসগুলোতে এই শহীদ মিনারেই সকল ধরনের কর্মসূচি পালন করেছিল চট্টগ্রামবাসী। ২০২১ সালের নভেম্বরে সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স প্রকল্পের আওতায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পুরোটাই ভেঙে ফেলায় বিকল্প শহীদ মিনারেই শ্রদ্ধা জানিয়েছে আসছে নগরবাসী।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়