Cvoice24.com

বান্দরবানে কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির গুলিতে এক সেনাসদস্য নিহত, আহত ২ সদস্য

সিভয়েস ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯:৪৭, ১৩ মার্চ ২০২৩
বান্দরবানে কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির গুলিতে এক সেনাসদস্য নিহত, আহত ২ সদস্য

কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলের অতর্কিত গুলিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার নাজিম উদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।

বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় মা ও শিশুদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে যাওয়ার পথে দলের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সেনাসদস্যদের উপর বিচ্ছিন্নতাবাদী ভাবধারায় বিশ্বাসী কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির গুলিতে এক সেনা কর্মকর্তা নিহত ও দুইজন আহত হয়েছেন। 

গতকাল রোববার (১২ মার্চ) আনুমানিক বেলা ১টায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে জাতীয় শিশু দিবস-২০২৩ ও মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে যাওয়ার পথে থানচিতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) সোমবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। 

কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলের অতর্কিত গুলিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার নাজিম উদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান এবং দুই সেনাসদস্য আহত হন। আহত দুজন বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

আইএসপিআর জানায়, মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার নাজিম উদ্দিন ৩০ বছর ধরে অত্যন্ত সততা, নিষ্ঠা এবং পেশাদারত্বের সঙ্গে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর বাবা মৃত শমসের আলী। বাড়ি রংপুর সদরের ঘাঘটপাড়া গ্রামে। দেশ মাতৃকার সেবায় তাঁর এই মৃত্যুতে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

আইএসপিআর আরও জানায়, বিচ্ছিন্নতাবাদী ভাবধারায় বিশ্বাসী কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি নামের এই সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলটি এর আগে ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়া’র মতো একটি জঙ্গি গোষ্ঠীকেও বান্দরবানের পাহাড়ি এলাকায় অর্থের বিনিময়ে অস্ত্র প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। পাহাড়ি এলাকার অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের জন্য সরকার কর্তৃক নির্মিতব্য বান্দরবানের থানচি সড়ক সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। সরকারের এই উন্নয়নমূলক কার্যক্রমকে প্রতিহত করার জন্য কেএনএ সন্ত্রাসী দলটি সড়ক নির্মাণ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত অসামরিক ঠিকাদার, মালামাল সরবরাহকারী এবং শ্রমিকদের নিকট থেকে প্রথমে চাঁদা দাবি করে ও পরে কাজ বন্ধ করার হুমকি দেয়। কিন্তু সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই কাজ চলমান থাকায় কেএনএ সন্ত্রাসী দল গত শনিবার (১১ মার্চ) ১২ জন শ্রমিককে অপহরণ করে। এদের মধ্যে এক শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হন এবং চার শ্রমিককে এখনও কেএনএ জিম্মি করে রেখেছে। অবশিষ্ট সাত শ্রমিককে মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দিলেও তাদেরকে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ না করার জন্য হুমকি দেওয়া হয়েছে।

আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৮ ফেব্রুয়ারি বান্দরবানের তিন উপজেলায় গাড়ি চলাচল বন্ধের জন্য কেএনএ পরিবহন মালিক সমিতিকে হুমকি দিয়ে নোটিশ জারি করে। কেএনএ সদস্যদের বিবিধ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দ্বারা সৃষ্ট নিরাপত্তাজনিত কারণে গতকাল রোববার (১২ মার্চ) এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে জেলা প্রশাসন। এছাড়াও কেএনএ’র নির্যাতনে স্থানীয় বিভিন্ন পাহাড়ি সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠী ঘর ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করছে। কেএনএ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর চাঁদাবাজি, মাদকের চোরাচালান, অপহরণ ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কারণে বর্তমান সরকারের বিবিধ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড, বেসরকারি বিনিয়োগ ও পর্যটন শিল্প বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে, যার সূদুরপ্রসারী নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। কেএনএ এর এই অপতৎপরতা দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার পাশাপাশি বিশ্ব দরবারে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে এবং সর্বোপরি পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরাজমান শান্তি-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে বিঘ্নিত করছে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়