Cvoice24.com

বন্দরের ঝুঁকি কমাতে চার রাসায়নিকসহ নিলামে উঠছে ৪৯ লট পণ্য

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:৩৪, ২৫ নভেম্বর ২০২১
বন্দরের ঝুঁকি কমাতে চার রাসায়নিকসহ নিলামে উঠছে ৪৯ লট পণ্য

চট্টগ্রাম বন্দরের ভেতরে বিভিন্ন শেড ও ইয়ার্ডে পড়ে আছে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পণ্য। বিপজ্জনক হওয়ায় এসব পণ্যের মাধ্যমে যেকোন সময় ঘটতে পারে বড় কোন দুর্ঘটনা। পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে বন্দরে পড়ে থাকা এসব রাসায়নিক পণ্যগুলো পরিবেশ ও মানবদেহের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই বন্দরে ঝুঁকি কমাতে ও জায়গা খালি করতে সালফিউরিক এসিড, টেক্সটাইল কেমিক্যাল, এলুমিনিয়াম পাউডার ও সাইক্লো হেক্সাননসহ ৪৯ লট পণ্য নিলামে তুলছে চট্টগ্রাম কাস্টমস। আগামী ২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে এসব পণ্যের নিলাম। 

রাসায়নিক পণ্য ছাড়াও এবারের নিলামে বিক্রি হবে জেন্টস আন্ডারওয়্যার, কার্বোনেটেড ক্যানড ড্রিংস লেবেল, ড্রাগণ ফল, ফিলামেন্ট কোড, জুস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার পণ্য, ফেব্রিক্স পণ্য, গ্যাস স্টোভ পার্টস, টায়ার, ইঞ্জিন পণ্য, ম্যানস পোলো শার্ট, সুয়েটার, ট্রাউজার, হুড, টি-শার্ট, টি-শার্ট (স্লিভলেস), লেডি টি-শার্ট, বেবি ফ্রগ, বেবি ট্রাউজার, শর্টস, এফ্রোন, পলিব্যাগ, রেডিমেড গার্মেন্টস এক্সেসরিজ, স্ট্যান্ড ও ওয়াল ফ্যান, আয়রন পণ্য, ওয়াটার ফিল্টার, কমলা, হ্যাঙ্গার পণ্য, সেলফ এডহেসিভ টেপ, প্লাস্টিক হ্যাঙ্গার, হ্যান্ড গ্লভস, কটন ড্রকর্ড, সাইকেলের পার্টস, স্টিল বার, নিউ কেপিট্যাল মেশিনারিজ পণ্য ও গার্মেন্টস কারখানার ফেব্রিক্স পণ্য। 

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের তথ্যমতে, এবারের নিলামে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পণ্যের মধ্যে ১৫২ কেজি সালফিউরিক এসিড, ১ ব্যাগ টেক্সটাইল কেমিক্যাল, ৭৬২ ব্যাগ এলুমিনিয়াম পাউডার, ৮০ ড্রাম সাইক্লো হেক্সানন বিক্রি হবে। পাশাপাশি ৩৯ হাজার পিস জেন্টস আন্ডারওয়্যার, ২ হাজার ২৭২ কার্টন কার্বোনেটেড ক্যানড ড্রিংস লেবেল, ১৫২ কেজি সালফিউরিক এসিড, ১ ব্যাগ টেক্সটাইল কেমিক্যাল, ১৫ হাজার ৫শ কেজি ড্রাগণ ফল, ৭ কার্টন ফিলামেন্ট কোড, ২২ পিস ল্যাবরেটরি সাপ্লাইস, দুই লটে ৯ হাজার কার্টন জুস, ১ হাজার ৩৪১ কার্টন হ্যান্ড স্যানিটাইজার পণ্য, ১ হাজার ২৭৭ রোল ফেব্রিক্স পণ্য, ২৯৮ কার্টন গ্যাস স্টোভ পার্টস, ২ হাজার কেজি ওজনের বড় সাইজের ও ৮ হাজার ৭শ কেজি ওজনের ছোট সাইজের টায়ার, ২ ইউনিট ইঞ্জিন পণ্য, ১৬ কার্টন ম্যানস পোলো শার্ট, ২ হাজার ১৬৪ পিস সুয়েটার, ২ হাজার ৭১৪ পিস ট্রাউজার, ২ হাজার ৩৫৮ পিস হুড, ৭১৩ পিস টি-শার্ট, ৯৭৯ পিস টি-শার্ট (স্লিভলেস), ২৬৪ পিস লেডি টি-শার্ট, ১ হাজার ১৭৩ পিস বেবি ফ্রগ, ৮৫৪ পিস বেবি ট্রাউজার, ২০৬ পিস টি-শার্ট, ৩৩৬ পিস শর্টস, ৮ কার্টন এফ্রোন নিলামে তোলা হচ্ছে। 

তাছাড়া ১২ কার্টন পলিব্যাগ, ৪ কার্টন রেডিমেড গার্মেন্টস এক্সেসরিজ, ১৮ পিস স্ট্যান্ড ও ওয়াল ফ্যান, দুই লটে ২ হাজার ৫শ কেজি ওজনের ব্যবহৃত আয়রন পণ্য, ৬ পিস ওয়াটার ফিল্টার, ২ লটে ৪৭ হাজার ৮৭০ কেজি কমলা, ১০ কার্টন হ্যাঙ্গার পণ্য, ৫২ কেজি ওজনের সেলফ এডহেসিভ টেপ, ২৬ কার্টন প্লাস্টিক হ্যাঙ্গার, ৭৪ কার্টন হ্যান্ড গ্লভস, ৭৬২ ব্যাগ এলুমিনিয়াম পাউডার, ৩ কার্টন কটন ড্রকর্ড, ৮০ ড্রাম সাইক্লো হেক্সানন, ৫৭ লাখ ১১ হাজার ৮১২ টাকার সাইকেলের পার্টস, ২৫ হাজার ৯শ কেজি ওজনের স্টিল বার, ২৬ লাখ ২৯ হাজার ৬০৩ টাকার নিউ কেপিট্যাল মেশিনারিজ পণ্য ও দুই লটে ১ কোটি ৩৩ লাখ ৪৭ হাজার ৯৭৫ টাকার গার্মেন্টস কারখানার ফেব্রিক্স পণ্য বিক্রি হবে নিলামে।  

সরকারি নিলাম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স’কে এম করপোরেশন বরাবরের মতো এই নিলাম পরিচালনা করছে। প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার মোহাম্মদ মোরশেদ সিভয়েসকে বলেন, মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) থেকে নিলামের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। নিলামে অংশ নিতে হলে ২৩ নভেম্বর থেকে আগামী ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত অফিস চলাকালীন সময়ে ২শ টাকা দরে ক্যাটালগ ও ১শ টাকা দরে দরপত্র সংগ্রহ করা যাবে। আগামী ২৯ ও ৩০ নভেম্বর সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টার মধ্যে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা (প্রশাসন) ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে টেন্ডার বক্সে দরপত্র জমা দিতে হবে। পাশাপাশি আজ ২৫ থেকে আগামী ২৮ নভেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত বিক্রয়যোগ্য পণ্য পরিদর্শন করতে পারবেন বিডাররা।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপ-কমিশনার (নিলাম শাখা) আলী রেজা হায়দার সিভয়েসকে বলেন, আমদানিকারকরা পণ্য এনে খালাসের পদক্ষেপ না নিলে ওসব পণ্য বিক্রির জন্য নিলাম ডাকা হয়। নিলামেও বিক্রি না হলে পণ্যগুলো ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বরাবরের মতো এবারের নিলামেও অন্যান্য পণ্যের পাশাপাশি সালফিউরিক এসিড, টেক্সটাইল কেমিক্যাল, এলুমিনিয়াম পাউডারসহ বিভিন্ন রাসায়নিক পণ্য নিলামে তোলা হচ্ছে। বন্দরে নিরাপত্তা বজায় রাখা, জট কমানো ও সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ বজায় রাখতে প্রতি মাসেই আমাদের নিলামের কাজ অব্যাহত আছে।   

চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্যমতে, বন্দরের ‘পি’ শেডে বিভিন্ন রাসায়নিক পণ্য রাখা হয়। প্রায় ৩০ হাজারেরও বেশি আয়তনের শেডটিতে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড, হাইড্রোক্লোরাইড, কস্টিক সোডা, সালফেট, টেক্সটাইল কেমিক্যাল, রঙ তৈরির কাঁচামাল, এস্ট্রোজেনসহ বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক ও দাহ্য পদার্থ রাখা হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ব্যবসায়ীদের আমদানি করা রাসায়নিক পদার্থের ৯৮ ভাগই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আসে। 

প্রসঙ্গত, বিদেশ থেকে আনা বিভিন্ন পণ্য খালাস করেন না আমদানিকারকরা। পাশাপাশি শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনতে গিয়ে কায়িক পরীক্ষায় আটক করা হয়। নিয়মনুযায়ী তাদের ৩০ দিনের মধ্যে এসব পণ্য খালাসের নির্দেশ দিয়ে নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে পণ্য খালাস না নিলে এসব পণ্য নিলামে তোলে কাস্টমস হাউস কর্তৃপক্ষ।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়