Cvoice24.com

ওসি প্রদীপ-চুমকির দুর্নীতি মামলায় ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:৩৪, ২৩ মে ২০২২
ওসি প্রদীপ-চুমকির দুর্নীতি মামলায় ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ

স্ত্রীসহ সাবেক ওসি প্রদীপকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকি কারনের বিরুদ্ধে আদালতে ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। দুদকের করা মামলায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আবদুল মজিদের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ হয়।

সোমবার (২৩ মে) দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী মাহমুদুল হক মাহমুদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকি কারনের বিরুদ্ধে দুদকের পক্ষে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আদালতে আজ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিনসহ ২৪ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। নতুনভাবে আর কোনও সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে না। 

এর আগে সোমবার সকালে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় কক্সবাজারে চাঞ্চল্যকর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি টেকনাফ মডেল থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশের স্ত্রী চুমকি কারন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আব্দুল মজিদের আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিনও আবেদন করেন। তবে শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

এসময় দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক জানিয়েছিলেন, আসামি চুমকি আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে শুনানি শেষে তা নামঞ্জুর করেন আদালত। এরপর আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। নগরের পাথরঘাটা ও ষোলশহর এলাকার বাড়ি, একটি কার ও একটি মাইক্রোবাস, কক্সবাজারে ফ্ল্যাট ও ৪৫ ভরি স্বর্ণ রয়েছে চুমকি কারনের। তাঁর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৪ কোটি ৮০ লাখ ৬৪ হাজার ৬৫১ টাকা। এরমধ্যে ২ কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের সত্যতা পেয়েছে দুদক। চুমকি নিজেকে মৎস্য ব্যবসায়ী দাবি করলেও এর কোনও অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মুন্সী আব্দুল মজিদের আদালত দুর্নীতি মামলার চার্জ গঠনের মাধ্যমে প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছিলেন। 

এর আগে গত বছরের ২৬ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন। প্রদীপ গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকলেও এতদিন পলাতক ছিলেন তার স্ত্রী চুমকি কারন। 

এরপর গত ১ সেপ্টেম্বর অভিযোগপত্রের ওপর শুনানি হয়। গত বছরের ২৯ জুন চট্টগ্রামের সিনিয়র স্পেশাল জজ ও মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত প্রদীপ কুমার দাশের অবৈধ সম্পদ দেখভালের দায়িত্ব কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে দেন। 

গত ২০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদকের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিনের করা আবেদনের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম মহানগর সিনিয়র স্পেশাল দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলার এজাহারে উল্লিখিত সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেন। ২০২০ সালের ২৩ আগস্ট দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে প্রদীপের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় প্রদীপের সঙ্গে তার স্ত্রী চুমকিকেও আসামি করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৯৫ লাখ ৫ হাজার ৬৩৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, সম্পদের তথ্য গোপন ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে।  

উল্লেখ্য, কক্সবাজারের টেকনাফের কাছে বাহারছড়া চেকপোস্টে ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। ওই মামলায় গত ৩১ জানুয়ারি পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়