Cvoice24.com এর ক্যামেরায় ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের দিনলিপি
সিভয়েস প্রতিবেদক, ভাসানচর থেকে ফিরে
দেশান্তরী হওয়া রোহিঙ্গা শিশুরা বিকেল হলেই তারা দূরন্তপনায় মেতে উঠে।
মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হওয়া রোহিঙ্গাদের প্রতি বাংলাদেশের আতিথেয়তা বিশ্বনন্দিত। কক্সবাজারের মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকায় তারা ঠাঁই পেলেও এ দেশের সরকার তাদের জন্য আলাদা একটি ভুবন তৈরি করেছে নোয়াখালীর দ্বীপাঞ্চল ভাসানচরে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৭ হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে হস্তান্তর করেছে সরকার। বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় সরকার রোহিঙ্গাদের স্বাভাবিক ও উন্নত জীবন যাপনের ব্যবস্থা করেছে সেখানে। রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুরাও সেখানে সাজিয়ে নিচ্ছেন তাদের জীবন। কর্মহীন ক্লান্ত দিনের অবসর কাটিয়ে তারা নিজেদের ব্যস্ত করে তুলছেন নানান কাজে। ভাসানচর ঘুরে এসে তারই খণ্ডচিত্র ক্যামেরাবন্দি করেছেন আমাদের নিজস্ব আলোকচিত্রী।
জীবনযুদ্ধে টিকে থাকার লড়াইয়ে দেশান্তরী হওয়া রোহিঙ্গা শিশুরাও পরিবারের সাথে ভাসনচরে আসে। বিকেল হলেই সেখানে তারা দূরন্তপনায় মেতে উঠে। ভাসানচরে থাকা শিশুদের যেন মনেই নেই তারা অভিবাসী জীবন যাপন করছে। কেননা তাদের দূরন্তপনাময় শৈশবের ছবি দেখে তা বুঝাই যায় না। বিকেল হলেই রোহিঙ্গা শিশুরা হৈ হুল্লোড়ে মেতে উঠে।
জীবিকার প্রয়োজনে ভাসানচরে অভিবাসী জীবনেও থেমে থাকার সুযোগ নেই। তাইতো নিজ ঘরের আঙ্গিনায় খোলা জায়গায় সবজি চাষে ব্যস্ত এক রোহিঙ্গা দম্পত্তি। জীবন গাড়ি যেখানেই গিয়ে থামুক, জীবন থেমে থাকে না। তাইতো ভাসনচরে গেলেও জীবিকার প্রয়োজনে মুদি দোকান দিয়েছেন এক রোহিঙ্গা যুবক। ভাসানচর দ্বীপ এলাকা হলেও রোহিঙ্গাদের হস্তান্তর করার পর থেকে সেখানে নিত্যপণ্যের সব কিছুই পাওয়া যাচ্ছে। এরকমই কিছু পণ্যের পসরা সাজিয়েছে বসে আছেন এক রোহিঙ্গা যুবক। জীবিকার প্রয়োজনে অস্থায়ী দোকান বসিয়ে চা-বিস্কুট বিক্রি করছেন এক রোহিঙ্গা যুবক। এসব দোকানে বিকেল হলেই আড্ডায় মেতে উঠে রোহিঙ্গারা।ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়। এ গদ্যময় পৃথিবীতে আসা রোহিঙ্গা শিশুটিও নিজেকে প্রস্তুত করছে জীবনযুদ্ধের যোদ্ধা হতে। ভাসানচরের খাল থেকে মাছ তুলে আনছে এক রোহিঙ্গা শিশু।বাবা-ছেলে মাছ শিকারে ব্যস্ত। দেশান্তরী হওয়া রোহিঙ্গা পরিবার এখন জীবিকার খোঁজে জড়িয়ে পড়ছে নানা ধরনের পেশায়।দেশান্তরী হওয়া রোহিঙ্গাদের উন্নত যাপনে বাংলাদেশ সরকার তৈরি করেছে এক নকশার ঘর।
ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ট্র্যাক্টর। তারা ট্র্যাক্টরে করে এক পাড়া থেকে অন্য পাড়ায় যাতায়াত করে।ভাসানচরে সদ্য জন্ম নেওয়া রোহিঙ্গা নবজাতককে নিয়ে বসে আছেন তার বাবা-মা। জিলাপি বিক্রি করতে করতে তিনি এখন সাবার কাছে ‘জিলাপি চাচা’ নামেই পরিচিত। রোহিঙ্গা এ বৃদ্ধ ভাসানচরে গিয়ে খুঁজে নিয়েছে তার জীবিকা।অভিবাসী জীবনেও শিশুর মন চায় সাজতে। রোহিঙ্গাদের রূপসজ্জার অন্যতম অনুসঙ্গ হলো খড়িমাটি। তাই প্রকৃতির সাজে নিজেকে মাতিয়েছে রোহিঙ্গা কন্যাশিশুটি।
মিয়ানমারের সামরিক জান্তার নির্যাতনের শিকার হয়ে পা হারিয়েছিল এ রোহিঙ্গা শিশু। এরপরও এসব ভুলে ভাসানচরের নব জীবন-যাপনে স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে শিশুটি।ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গা নারীদের স্বাবলম্বী করতে সেলাই প্রশিক্ষণ দিচ্ছে সরকার।নির্যাতনের শিকার হয়ে, নিজ দেশ হারিয়ে ভিন্ন দেশে এসে নিজেদের মাতিয়ে রাখে সান্ধ্য বিনোদনের আসরে। যেখানে তারা বুকের কষ্ট লুকিয়ে হাসিমুখে দুঃখ ভুলায়...