Cvoice24.com

অস্ট্রেলিয়াকে ৩০৭ রানের লক্ষ্য দিয়েছে বাংলাদেশ

সিভয়েস ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:২৭, ১১ নভেম্বর ২০২৩
অস্ট্রেলিয়াকে ৩০৭ রানের লক্ষ্য দিয়েছে বাংলাদেশ

পুনেতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলা নিশ্চিত করার লড়াইয়ে শুরুতে ব্যাটাররা নিজেদের কাজটা সেরে রাখলো। অজিদের সামনে ছুড়ে দিয়েছে ৩০৭ রানের লক্ষ্য। অবশ্য টপের ব্যাটাররা যেভাবে খেলছিলেন তাতে সাড়ে তিনশোও অসম্ভব ছিল না। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট হারিয়ে ছন্দ নষ্ট করেছে তারা।

তানজিদ ও লিটন ৩৬ রান করে আউট হয়েছেন। নাজমুল হোসেন শান্ত ঝুঁকি নিতে গিয়ে রানআউটে ফিরেছেন ৪৫ রানে। মাহমুদউল্লাহও ঝড়ো গতিতে খেলে রানআউটে কাটা পড়েছেন ৩২ রানে। মুশফিক ২১ রানের বেশি করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত তাওহীদ হৃদয়ের ৭৪ রানের ইনিংসে স্কোরটা তিনশোর কাছাকাছি গেছে। তার পর তিনশ ছাড়াতে অবদান রেখেছেন মিরাজ। শেষ ওভারে অফস্পিনিং অলরাউন্ডার ২৯ রানে আউট হওয়ার পর বাকিরা সেভাবে রান তুলতে পারেনি। বাংলাদেশ ৮ উইকেটে করতে পারে ৩০৬ রান। তাতে টুর্নামেন্টে প্রথমবার তিনশ ছাড়ানো স্কোরের দেখা পেয়েছে তারা। 

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৩২ রানে দুটি উইকেট নিয়েছেন লেগস্পিনার অ্যাডাম জাম্পা। ৬১ রানে সমসংখ্যক উইকেট নিয়েছেন শন অ্যাবটও। একটি নিয়েছেন মার্কাস স্টয়নিস। 

হৃদয় থামলেন ৭৪ রানে

বাকিরা দারুণ ব্যাটিং করলেও ইনিংস বড় করতে পারছিলেন না। সেখানে প্রান্ত ধরে স্কোরবোর্ড সচল রাখছিলেন হৃদয়। তার ব্যাটেই স্কোর তিনশোর কাছাকাছি গেছে। শেষ দিকে হৃদয় আরও আক্রমণাত্মক হওয়ার চেষ্টায় ছিলেন। ৪৬.৩ ওভারে স্টয়নিসের বলে মেরে খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি। তাতে ৭৪ রানে থেমেছেন হৃদয়। তার ৭৯ বলের ইনিংসে ছিল ৫টি চার ও ২টি ছয়। 

স্কোর আড়াইশ পার হতেই ক্যাচ আউট মুশফিক

দারুণ ব্যাটিংয়ে রানের চাকা সচল রাখলেও থিতু হতে পারছেন না ব্যাটাররা। বড় হয়নি জুটি। সর্বশেষ দারুণ জুটিতে অবদান রাখা মুশফিকও ফিরেছেন উইকেট বিলিয়ে। হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে ৩৭ রানের জুটিতে স্কোর আড়াইশ পার হতে অবদান রেখেছিলেন। কিন্তু যখন রান বাড়িয়ে নেওয়াই মূল লক্ষ্য তখন ৪২.১ ওভারে জাম্পার বলে পুল করতে গিয়ে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি। তাতে ২৪ বলে ২১ রানে থেমেছেন অভিজ্ঞ ব্যাটার। তার ইনিংসে ছিল একটি ছয়।     

হৃদয়ের ষষ্ঠ ফিফটি

টপের ব্যাটাররা ইনিংসকে ফিফটিতে পরিণত করতে না পারলেও ফিফটি তুলে নিয়েছেন তাওহীদ হৃদয়। দুটি দারুণ জুটিতে অবদান রেখে ৬১ বলে ওয়ানডের ষষ্ঠ ফিফটি তুলে নিয়েছেন তিনি।  

আরেকটি রানআউট, সাজঘরে মাহমুদউল্লাহ

শান্তর অহেতুক রানআউটে ভেঙেছে সম্ভাবনাময় জুটি। একইরকম ঝুঁকি নেওয়ার প্রবনতায় ভেঙেছে মাহমুদউল্লাহ-হৃদয়ের সম্ভাবনাময় জুটিটিও। অযথা সিঙ্গেল নেওয়ার তাড়নায় রানআউট হয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। তাতে ভেঙেছে ৪৪ রানের দারুণ জুটি। মাহমুদউল্লাহ ফিরেছেন ৩২ রানে। তার ২৮ বলের ইনিংসে ছিল ১টি চার ও ৩টি ছয়। 

হৃদয়-মাহমুদউল্লাহ জুটি
জুটি গড়ে খেলেছেন হৃদয়-মাহমুদউল্লাহ।
মাহমুদউল্লাহর ঝড়ে ৩২ ওভারেই স্কোর দুইশ ছাড়িয়েছে

শান্তর অহেতুক রানআউটে ছন্দ হারানোর সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু নতুন নামা মাহমুদউল্লাহ সেটি হতে দেননি। ঝড়ো গতিতে খেলে ৩২ ওভারেই স্কোর দুইশ ছাড়াতে অবদান রেখেছেন। মার্শের ৩২তম ওভারটিতে ১৮ রান তুলেছেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার!

রানআউট শান্ত, ভাঙলো ৬৬ রানের জুটি

১০৬ রানে লিটন উইকেট ছুড়ে এলে রানের গতি কিছুটা কমে আসে। দুই ওপেনারের বিদায়ের পর সময় নিয়ে রান বাড়িয়ে নিতে থাকেন তাওহীদ হৃদয় ও নাজমুল হোসেন শান্ত। আক্রমণাত্মক এই জুটিতেই ২৫ ওভারে স্কোর দেড়শ ছাড়িয়েছ। ২৭.৫ ওভারে স্কোর ১৭০ রান হয়েছে তাদের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে। ঠিক এই সময়ে রানআউট হয়েছেন শান্ত। ঝুঁকি নিয়ে দুই রান নেওয়ার তাড়ায় ৫ রানের জন্য হাফসেঞ্চুরি বঞ্চিত হয়েছেন তিনি। তাতে ৫৭ বলে ৪৫ রানে থেমেছেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক। তার ইনিংসে ছিল ৬টি চার।     

সেই জাম্পার বলেই ক্যাচ আউট লিটন

১৫তম ওভারেই অল্পের জন্য জীবনও পেয়েছিলেন লিটন। অ্যাডাম জাম্পার বলে মিডউইকেটে ক্যাচ উঠেছিল। সেটি হাতে জমাতে পারেননি কামিন্স। এক ওভার পর অবশ্য সেই জাম্পার বলে উঠিয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয়েছেন তিনি। তাতে দারুণ একটি ইনিংসের অপমৃত্যু হয়েছে ৩৬ রানে। তার ৪৫ বলের ইনিংসে ছিল ৫টি চার।    

১৬ ওভারেই একশ ছাড়িয়েছে বাংলাদেশের স্কোর

৭৬ রানে ওপেনিং জুটি ভাঙলেও রানের চাকা সচল রেখেছে বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্ত-লিটন দাস মিলে একই ছন্দে খেলার চেষ্টা করছেন। তাতে ১৬তম ওভারে স্কোর একশ ছাড়িয়েছে।  

৭৬ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙলো তানজিদের বিদায়ে

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাওয়ার প্লেতে দারুণ শুরু এনে দিয়েছিলেন তানজিদ-লিটন। বিশ্বকাপে পাওয়ার প্লেতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর গড়তে অবদান রাখেন তারা। ৭৬ রানের দারুণ জুটি ভাঙে তানজিদের বিদায়ে। 

ইনিংস লম্বা করতে পারেননি তিনি। ১১.২ ওভারে শন অ্যাবটের শর্ট বলে কপাল পোড়ে তার। বাউন্স ঠিকমতো সামলাতে পারেননি। লিডিং এজ হয়ে জমা পড়েছেন অ্যাবটের হাতে। তাতে ৩৪ বলে ৩৬ রানে থেমেছেন তানজিদ। তার ইনিংসে ছিল ৬টি চার।     

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামলেও শুরুটা দুর্দান্ত করেছে বাংলাদেশ। পুনের পিচে শুরুতে সতর্ক ব্যাটিং করলেও ধীরে ধীরে খোলস ছেড়ে বের হয়ে আসেন দুই ওপেনার। নবম ওভারেই লিটন-তানজিদের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ওপেনিং জুটি পঞ্চাশ ছাড়িয়েছে। পাওয়ার প্লেতেও স্কোর দাঁড়ায় বিনা উইকেটে ৬২।    

বাংলাদেশের সতর্ক শুরু

শুরুতে দেখে শুনেই খেলেছে বাংলাদেশ। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার শট খেলার ক্ষেত্রে ছিলেন ভীষণ সতর্ক। তাতে ৫ ওভারে স্কোর ছিল বিনা উইকেটে ২০। বাউন্ডারিও এসেছে মাত্র একটি। 

টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছে অজি দল

বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচটি অজিদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ না হলেও বাংলাদেশের জন্য ভীষণ রকম গুরুত্বপূর্ণ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলা নিশ্চিত করতে চাইলে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয়ের বিকল্প নেই বাংলাদেশের সামনে। আর হেরে গেলে তাকিয়ে থাকতে হবে ভারত ও নেদারল্যান্ডসের ম্যাচের দিকে। অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খুব বাজেভাবেও হারা যাবে না। সেই দিকে নজর রাখতেই হবে। 

তাছাড়া ডাচদের বিপক্ষে ভারত জিতলে বাংলাদেশের জন্য সমস্যা নেই। কিন্তু হেরে গেলে নেদারল্যান্ডস অষ্টম দল হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিশ্চিত করবে। এমন ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টস হেরেছে বাংলাদেশ। শুরুতে শান্তদের ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছে তারা।

টস হারলেও ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন জানিয়েছেন , শুরুতে তারা ব্যাটিং করতেন। অজি অধিনায়ক কামিন্স জানিয়েছেন, সকালের শুরুতে পিচ থেকে সুবিধা মিলতে পারে দেখেই বোলিং নিয়েছেন তারা। 

একাদশে কারা

প্রত্যাশিতভাবে অস্ট্রেলিয়া গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে বিশ্রামে পাঠিয়েছে। বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে মিচেল স্টার্ককেও। ফিরেছেন স্টিভেন স্মিথ ও অ্যাবট।

বাংলাদেশ দলেও প্রত্যাশিত পরিবর্তন আসতোই। নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব ছিটকে গেছেন। একাদশে স্থান হয়নি দুই পেসার শরিফুল ইসলাম ও তানজিম হাসানের। তাদের জায়গায় এসেছেন নাসুম আহমেদ, শেখ মেহেদী হাসান ও মোস্তাফিজুর রহমান।

বাংলাদেশ একাদশ: লিটন দাস, তানজিদ হাসান, নাজমুুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাওহীদ হৃদয়, শেখ মেহেদী হাসান, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান। 

অস্ট্রেলিয়া একাদশ: ডেভিড ওয়ার্নার, ট্রাভিস হেড, মিচেল মার্শ, স্টিভেন স্মিথ, মার্নাস লাবুশেন, জশ ইংলিস (উইকেটরক্ষক), মার্কাস স্টয়নিস, শন অ্যাবট, প্যাট কামিন্স (অধিনায়ক), অ্যাডাম জাম্পা, জশ হ্যাজলউড। 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়