Cvoice24.com

ওয়ার্ড-ইউনিট সম্মেলন করতে বাধা নেই মাহাতাব-নাছিরের, তদারকিতে ছয় নেতার কমিটি

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:২৩, ১৬ জানুয়ারি ২০২২
ওয়ার্ড-ইউনিট সম্মেলন করতে বাধা নেই মাহাতাব-নাছিরের, তদারকিতে ছয় নেতার কমিটি

দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাদের বৈঠক।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ইউনিট ও ওয়ার্ড সম্মেলনকে কেন্দ্র করে মাহাতাব-নাছিরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আনলেও তা কেন্দ্রে টিকেনি। চট্টগ্রামে কথার যুদ্ধ হলেও কেন্দ্র সিদ্ধান্ত দিয়েছে— আগের নিয়মেই ইউনিট সম্মেলন শেষ করে ওয়ার্ড সম্মেলন সম্পন্ন করতে হবে। এসব সম্মেলন শেষ হলে পরে থানা সম্মেলন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে মাহাতাব-নাছির পরিষদকে। থানার কার্যক্রম তদারক করতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নগরের প্রভাবশালী ছয় নেতাকে।

রোববার ঢাকায় ধানমণ্ডিতে দলীয় সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাদের বৈঠকে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়। সকাল ১০টায় বৈঠক শুরু হয়ে টানা দুপুর ২টা পর্যন্ত চলে।

এ ক্ষেত্রে নাছির বিরোধী শিবির থেকে ইউনিট ওয়ার্ড কমিটির কার্যক্রম তদারকের জন্য সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির নামে বিকল্প দাবি করলেও তা নাকচ করে দিয়েছে কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। তবে দেশের অন্য ইউনিটগুলোর মত থানা ভিত্তিক তদারক কমিটি করতে নগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ ৬ নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। 

তারা হলেন— জাতীয় পরিষদের সদস্য নইম উদ্দীন চৌধুরী, নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, সহ-সভাপতি ও সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ ডলফিন, যুগ্ম সম্পাদক ও মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও সদস্য শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবল হাসান চৌধুরী নওফেল।

এছাড়া ইউনিট ও ওয়ার্ড সম্মেলনকে কেন্দ্র করে যেসব অভিযোগ নাছির বিরোধীরা করেছিলেন তা ঢাকার বৈঠকে নিষ্পত্তি হয়েছে। অভিযোগকারীদের বক্তব্য শেষে মাহাতাব-নাছির নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন সেখানে। এসময় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা আগের সিদ্ধান্তে সম্মেলন শেষ করার নির্দেশ দেন। যদি কোন আপত্তি থাকে তখন সভাপতি-সেক্রেটারিকে জানাতে বলেছেন। পাশাপাশি সবার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে চট্টগ্রামের নেতাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। 

এ বৈঠকে উপরোক্ত ছয়জন ছাড়াও অংশ নেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, যুগ্ম সম্পাদক (দায়িত্বপ্রাপ্ত) মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি, যুগ্ম সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান, সাংগঠনিক সম্পাদক (দায়িত্বপ্রাপ্ত) ও হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, সুনীল সরকার, আলতাফ হোসেন বাচ্চু, যুগ্ম সম্পাদক বদিউল আলম ও সদস্য এম এ লতিফ এমপি। 

জানতে চাইলে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির বলেন, ‘দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা সবার কথা শুনেছেন। তারপর তারা সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইউনিট ও ওয়ার্ড সম্মেলন যেভাবে চলছিল সেভাবে চালিয়ে নিতে। কোন আপত্তি থাকলে সভাপতি-সেক্রেটারিকে জানাতে। এসব সম্মেলন শেষ হলে থানা কমিটির কাজ এগিয়ে নিতে। এক্ষেত্রে দেশের অন্য ইউনিটের মত থানার কার্যক্রম গতিশীল করতে নগর থেকে নেতাদের দায়িত্ব বন্টন করে দেওয়া হবে। সেটা বন্ঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আমাদের ছয়জনকে।'

এরআগে গত বছরের ডিসেম্বরে কেন্দ্রের নির্দেশে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ইউনিট-ওয়ার্ড সম্মেলন চলমানের মধ্যেই আ জ ম নাছিরের বিরুদ্ধে কেন্দ্রে গিয়ে নালিশ দিয়ে বসেন। এরপর ওয়ার্ড সম্মেলন স্থগিত করে চট্টগ্রামের নেতাদের নিয়ে ঢাকায় বসেন কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।

এমনকি ঢাকায় নালিশের পর ‘গোপন বৈঠকও’ করেছিলেন চট্টগ্রামের রাজনীতিতে নাছির বিরোদী হিসেবে পরিচিত নেতারা। গত (২৮ ডিসেম্বর) রাতে নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষের ফিরিঙ্গী বাজারের বাসায় গোপনেই মিলিত হয়েছিলেন নগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বড় একটি অংশ। যারা সকলেই মাহাতাব-নাছির বিরোধী নেতা হিসেবে পরিচিত।

বৈঠকে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বন্দরের এমপি এম এ লতিফ, নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম, নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক আদনান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক চন্দন ধর, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমানসহ আরও অনেক নেতা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়