Cvoice24.com

আট সংস্থার কাছে ওয়াসার পাওনা ১৮ কোটি!
১০ বছর ধরে চিঠি যায়, ‘উত্তর’ আসে না

শারমিন রিমা, সিভয়েস২৪

প্রকাশিত: ১০:২২, ১ জানুয়ারি ২০২৫
১০ বছর ধরে চিঠি যায়, ‘উত্তর’ আসে না

  • নতুন বছরে বকেয়া আদায়ে তোড়জোড়!

বছরের পর বছর বকেয়া আদায়ে বরাবরাই হিমশিম খায় চট্টগ্রাম ওয়াসা। আট সরকারি সংস্থার কাছে পাওনা প্রায় ১৮ কোটি টাকা। বছর শেষে এবার পাওনা আদায়ে জোর দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সর্বোচ্চ বিল খেলাপি সরকারি প্রতিষ্ঠানের তালিকা ধরে পাঠানো হয়েছে চিঠি।

যদিও ওয়াসার নিয়মে যথাসময়ে বকেয়া পরিশোধ করা না হলে জরিমানা ও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার বিধান রয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানে বকেয়া আদায়ে জরিমানা কিংবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার মতো পদক্ষেপ নেয়নি।

তবে, ব্যক্তিপর্যায়ে কয়েক মাসের বিল আটকে গেলেই অভিযান চলে। জরিমানার পাশাপাশি বিচ্ছিন্ন করা হয় সংযোগ।

ওয়াসা সূত্রমতে, বেশির ভাগ সরকারি প্রতিষ্ঠান অন্তত ১০ বছর ধরে বকেয়া পরিশোধ করছে না। বকেয়া আদায়ে ওয়াসা বারবার চিঠি দিলেও খুব একটা লাভ হয়নি। সরকারি আট শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের কাছে ওয়াসার বকেয়া বিলের পরিমাণ ১৭ কোটি ৬৬ লাখ ৯২ হাজার ৫২৬ টাকা। এই পরিস্থিতিতে বকেয়া আদায়ে তোড়জোড় শুরু করেছে ওয়াসা।

গত ১০ ডিসেম্বর এসব সংস্থার কাছে চিঠি পাঠান চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা।

এদিকে, বিল খেলাপির তালিকায় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। তাদের বিভিন্ন স্থাপনায় ৫০টি সংযোগের বিপরীতে বকেয়া রয়েছে ৮ কোটি ৬৫ লাখ ৬১ হাজার ১৩৭ টাকা। গণপূর্ত অধিদপ্তরের পরে ওয়াসা সবচেয়ে বেশি টাকা পাবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কাছে। এই প্রতিষ্ঠানের ৯২টি সংযোগের বিপরীতে বকেয়া আছে ৩ কোটি ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৪৭০ টাকা। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনায় ওয়াসার ৩১টি সংযোগের বিপরীতে বিল ককেয়া ২ কোটি ৩০ লাখ ৭৬ হাজার ৬৩৫ টাকা। ১৪টি সংযোগ নিয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) কাছে ওয়াসার পাওনা ১ কোটি ৯ লাখ ৮২ হাজার ১৩৮ টাকা। এরপর বকেয়া বেশি রয়েছে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কাছে। এই প্রতিষ্ঠানের ২৪টি সংযোগের বিপরীতে বকেয়া আছে ১ কোটি ৮ লাখ ৩৪ হাজার ১৬০ টাকা। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ৩৬টি সংযোগের বিপরীতে ওয়াসার পাওনা ৫৮ লাখ ১০ হাজার ৪৪৩ টাকা। এছাড়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ১৫টি সংযোগের বিপরীতে ওয়াসার পাওনা ৪২ লাখ ৮১ হাজার ৬৭৮ টাকা আর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১১টি সংযোগের বিপরীতে বকেয়া রয়েছে ৪৮ লাখ ১৮ হাজার ৮৬৫ টাকা। 

অন্যদিকে, ১ লাখ টাকার উপরে বকেয়া রয়েছে এমন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সংযোগ রয়েছে ৩ হাজার ২১২টি। এর মধ্যে বেসরকারি সংযোগ রয়েছে ২ হাজার ৯২৫টি আর সরকারি প্রতিষ্ঠানের সংযোগ ২৮৭টি।

ওয়াসা কর্মকর্তারা বলছেন, 'পর্যাপ্ত বরাদ্দ’ না পাওয়ায় বকেয়া পরিশোধ করতে পারে না সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। তবে, নতুন বছরে ২ লাখ টাকার ওপর বকেয়া থাকা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে চিঠি পাঠানো শুরু করবে ওয়াসার রাজস্ব বিভাগ। এ লক্ষ্যে তালিকা তৈরির কাজ চলছে। 

চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা রুমন দে সিভয়েস২৪-কে বলেন, ‘পাওনা আদায়ে জোর চেষ্টা চলছে। যাদের ২ লাখ টাকার ওপর বকেয়া আছে—এমন প্রতিষ্ঠানের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। তালিকা শেষে আমরা চিঠি দিবো।’

সরকারি প্রতিষ্ঠানের বকেয়া পাওনা প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা সিভয়েস২৪-কে বলেন, ‘বকেয়া আদায়ে আমরা বেশকিছু সরকারি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছি। এর মধ্যে তিনটা প্রতিষ্ঠান থেকে বকেয়া আদায় হয়েছে। আশা করছি, বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোও তাদের বকেয়া দিয়ে দিবে।’

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়

: