সানিয়া মির্জা-শোয়েব মালিক দম্পতির বিচ্ছেদ

ডিভোর্সের পথ বেছে নিয়েছেন ভারত-পাকিস্তানের সবচেয়ে শক্তিশালী সেলিব্রিটি দম্পতি সানিয়া মির্জা ও শোয়েব মালিক।এতোদিন তাদেরকে ঘিরে নানা কৌতূহল, জল্পনা-কল্পনার ডানা মেললেও এবার তার সত্যতা পাওয়া গেছে। বেশকিছু সংবাদমাধ্যমে জানা যায়, পাক-ভারতের এই তারকা জুটি বর্তমানে আলাদা থাকেন। যদিও দুজনেই সন্তানের প্রতি সমান যত্নশীল। তবে এর জন্য শোয়েব মালিকের ‘পরকীয়ায়’ জড়িয়ে যাওয়াকে দায়ী করা হচ্ছে।

যদিও এ বিষয়ে তাদের কেউই এখনও মুখ খোলেনি। তবে তাদের বিচ্ছেদের বিষয়ে নতুন খবর দিয়েছেন দু’জনেরই ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু। তিনি আবার শোয়েবের ম্যানেজমেন্ট দলের সদস্যও। 

তিনি জানান, তাদের বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। তারা এখন আলাদা থাকছেন, এর বেশি এখন আর কিছু বলতে পারব না। 

শনিবার (৫ নভেম্বর) রাতে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ‘ডেইলি জাং’ দাবি করেছে, ‘শোয়েব মালিকের সঙ্গে সানিয়া মির্জার সংসার ভেঙে যাওয়ার মুখে রয়েছে। এমনকি তারা দুজনে গত কয়েক দিন ধরে আলাদা থাকছেন। তবে তাদের ছেলে ইজহান মির্জা মালিকের দেখাশোনা দুজনেই মিলে করছেন।

সম্প্রতি তাদের সন্তান ইজহান মির্জা মালিকের জন্মদিন পালন করা হয়। ছেলের জন্মদিনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি শেয়ার করেন শোয়েব মালিক। জন্মদিনের ছবির ক্যাপশনেও জল্পনা ছড়ান তিনি।। ইঙ্গিতপূর্ণ সেই ক্যাপশনে শোয়েব লিখেন, ‘যখন তুমি জন্মেছিলে, তখন আমরা অনেক বেশি নম্র হতে পেরেছিলাম। জীবন সত্যিকারের কোনো অর্থ খুঁজে পেয়েছিল যেন! আমরা একসঙ্গে নাও থাকতে পারি। প্রতিদিন সাক্ষাৎ নাও হতে পারে। তবে বাবা তোমার কথা সবসময় খেয়াল করে। প্রতি সেকেন্ডে তোমার হাসি মনে পড়ে যায় বাবার। তোমার সব ইচ্ছা যেন আল্লাহ পূরণ করেন।’

এদিকে ইনস্টাগ্রামে সানিয়ার একটি পোস্টে এই জুটির ভাঙনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। যেখানে তিনি লিখেছেন, ‘ভাঙা হৃদয় কোথায় যায়? ঈশ্বর খুঁজতে।

শুধু তাই নয়, ছেলে ইজহানকে নিয়ে একটি ছবিও পোস্ট করেছেন টেনিস তারকা সানিয়া। যেখানে মা সানিয়াকে চুমু খাচ্ছে পুত্র ইজহান। সেই ছবির ক্যাপশনে সানিয়া লিখেছেন, ‘যে মুহূর্তগুলো কঠিন সময় পার করে দেয়।

এই পোস্টেও ঘর ভাঙার ইঙ্গিত রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। কিন্তু তাদের সম্পর্কের রসায়নকে উদাহরণ হিসেবেই ধরা হতো। দু’জনের সম্পর্কের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিকটি ছিল কাঁটাতার।

এরপরেই অনুসন্ধান শুরু হয়। অনুসন্ধানে শোয়েব মালিকের ম্যানেজমেন্ট দলের একজন জানান, তাদের ডিভোর্স হয়ে গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই ব্যক্তি ইনসাইডস্পোর্টসকে জানান, ‘হ্যাঁ, তারা এখন আনুষ্ঠানিকভাবেই ডিভোর্সড। আমি এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারব না। তবে আমি নিশ্চিত করছি, তারা আলাদা হয়ে গেছে।’ 

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, শোয়েব-সানিয়ার সম্পর্কের মাঝে এসেছেন তৃতীয় কেউ। শোয়েব অন্য কোনো মহিলার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছেন বলে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এর আগে ‘শোয়েবের সঙ্গে দুই নারীর সম্পর্ক নিয়ে’ ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছিল। এই দুই জনের মধ্যে প্রথমজন পাকিস্তানি অভিনেত্রী আয়েশা ওমর। ২০২১ সালে একটি ম্যাগাজিনের জন্য ফটোশুটে একসঙ্গে দেখা যায় শোয়েব এবং আয়েশাকে। তারপর থেকেই অভিনেত্রীর সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে পাক ক্রিকেটারের নাম। 

আয়েশা ছাড়া অন্য এক পাক অভিনেত্রীর সঙ্গেও শোয়েবের সম্পর্ক নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল। চলতি বছরের শুরুর দিকে পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেত্রী মাহিরা খানের সঙ্গে শোয়েবের নাম জড়ায়। মাহিরার সঙ্গে ইনস্টাগ্রাম লাইভে একবার আড্ডায় বসেছিলেন শোয়েব। 

২০০৩ সালে ভারতে খেলতে গিয়ে প্রথম সানিয়া-শোয়েবের দেখা হয়। সেখানে সাদামাটা আলাপের পর থেকেই দু’জনের যোগাযোগের সূত্রপাত। এর ৬ বছর পর ২০০৯ তাদের মন দেওয়া নেওয়া হয়। এর পরের বছর তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।

ভারত-পাকিস্তানের পারস্পরিক সম্পর্কে বরাবরই তিক্ততার ছায়া লেগে থাকে। খেলার মাঠে তো তারা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। সেই পাকিস্তানের ক্রিকেটারের গলাতেই মালা দিয়েছিলেন হায়দরাবাদের টেনিস তারকা। নিন্দুকদের কথায় কান দেননি দু’জনের কেউ।