Cvoice24.com

পূর্ণিমায় জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ

আনোয়ারা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৫:০২, ২৩ আগস্ট ২০২১
পূর্ণিমায় জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ

দীর্ঘ ৬৫ দিন নিষেধাজ্ঞা থাকার পর সাগরে নেমে আশানুরূপ ইলিশ মিলেনি আনোয়ারার ১০ হাজার জেলেদের জালে। ভরা মৌসুমে ইলিশ না মিলায় হতাশ মনে দ্বিতীয় পূর্ণিমার অপেক্ষায় ছিল জেলেরা। তবে এবার আর হতাশ হতে হয়নি। ভাদ্র মাসের পূর্ণিমার শুরু থেকে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়তে শুরু করেছে ইলিশ। জো-এর দিনক্ষণ মিলিয়ে আনোয়ারা উপকূলে জমে উঠেছে রূপালী ইলিশের মেলা।

দীর্ঘদিন নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তেমন বড় আকারে ইলিশ জালে ধরা পড়ছে না বললেই চলে। তবুও ছোট ও মাঝারি আকারের ইলিশ ধরা পড়ায় জেলেদের মুখে স্বস্তির হাসি।

রবিবার (২২ আগস্ট) সকালে উপজেলার গহিরা উপকূল এলাকার উঠান মাঝির ঘাট, দোভাষী হাট এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, গত দুই দিনে সাগর থেকে ইলিশ বোঝাই করে ঘাটে ফিরেছে অর্ধশতাধিক ট্রলার। ফিরে আসা ইলিশ ভর্তি এসব ট্রলার গহিরা উপকূলের বিভিন্ন ঘাটে সারিবদ্ধভাবে নোঙর করে রাখা হয়েছে। 

ট্রলার থেকে মাছ নামতেই জেলেরা ডাক বসাচ্ছেন মাছের দামের। মাঝি-মাল্লাদের মাঝে ছিল মাছ সংরক্ষণের তোরজোড়। কেউ ইলিশ মাছের ঝুড়ি টানছেন, কেউ প্যাকেট করছেন, আবার কেউ কেউ সেই প্যাকেট বিভিন্ন স্থানে পাঠাতে তুলে দিচ্ছেন ট্রাকে। মৌসুমের শুরুতে ইলিশের দেখা না পেলেও এখন কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা পড়ায় হাসি ফুটেছে জেলে, আড়তদার ও মৎস্যজীবীদের মুখে।

দেড় থেকে ২ কেজি ওজনের ইলিশ প্রতিকেজি বিক্রি করতে দেখা গেছে ১২শ থেকে ১৮শ টাকার মধ্যে, যা এর আগে বিক্রি হয়েছে ১১শ থেকে ১৭শ টাকার মধ্যে। আড়াই থেকে ৩ কেজি ওজনের ইলিশ প্রতিকেজি ২৮শ টাকায়, যা এর আগে ২৫শ থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে বড় ইলিশের সরবরাহ কম বললেই চলে।

এদিকে উপজেলার মাছের সবচেয়ে বড় আড়ৎ কালাবিবির দিঘির মোড়ে ৮শ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮শ টাকা কেজি দরে, ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৬৫০ থেকে ৭শ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ৬০০ গ্রাম সাইজের প্রতি হালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৫শ টাকায়। প্রতি তিন পিসে কেজি এমন ইলিশ প্রতিকেজি সাড়ে ৬শ টাকায়, ছোট জাটকা প্রতিকেজি ৩শ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

দৌভাষী ঘাট মৎস্য আড়তের ব্যবসায়ীরা জানান, এক সপ্তাহ আগে যে ইলিশ ২ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে, এখন সেগুলোর হালি ২৫শ টাকায় হাকাচ্ছে। তার মতে, বাজারে ইলিশের সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। সরবরাহ বাড়লে ইলিশের দাম কমে আসবে।

উঠান মাঝি ঘাটের বাজারের ইলিশ বিক্রেতা ওসমান বলেন, ‘ইলিশের মৌসুম হলেও অন্য বছরের তুলনায় এসময় ইলিশ ধরা পড়ছে কম। এ কারণে বাজারে ইলিশের দাম উঠা-নামা করলেও অন্য বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি।’

উপজেলা ক্ষুদ্র মৎস্যজীবি সমিতির সাধারণ সম্পাদক শ্রী কৃষ্ণ দাশের বলেন, ‘মূলত সাগরে মিষ্টি পানি নামার সাথে সাথে গভীর সমূদ্র থেকে বড় মাছগুলো কাছে চলে আসে আর তখনি জেলেদের জালে আটকা পড়ে যায়। এবছর বৃষ্টি হওয়ার পরও জেলেদের জালে প্রথম দিকে মাছে দেখা মেলেনি। আজ থেকে জো-এর দিনক্ষণ মিলিয়ে উপকূলে জমে উঠতে শুরু করেছে ইলিশের আমেজ। আশা করি, আগামী পূর্ণিমাতে জেলেদের জালে আরো ভালো মাছ পড়বে।’

উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রাশিদুল হক বলেন, ‘আসলে আমরা সরেজমিনে বিষয়টি গিয়ে দেখেছি, জেলেদের জালে তেমন আশানুরূপ মাছ ধরা পড়েনি প্রথম দিকে। ভাদ্র মাসের শুরু থেকে মাছ ধরা পড়ছে। আর ধরা পড়া এসব মাছ সাইজে অনেক ছোট। জো-এর দিনক্ষণ মিলিয়ে সামনে মাছ পড়তে পারে।’

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়