Cvoice24.com

ইউজিসির অভিন্ন নীতিমালার প্রতিবাদে চবিতে কর্মচারীদের ১১ দফা

চবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৬:৩৬, ২৯ জুন ২০২২
ইউজিসির অভিন্ন নীতিমালার প্রতিবাদে চবিতে কর্মচারীদের ১১ দফা

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ইউনিয়নের মানববন্ধন কর্মসূচি।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) প্রণীত অভিন্ন নীতিমালার প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ১৯৭৩ সালের ১০ম পে-স্কেল বাস্তবায়ন, আর্থিক অনুদান ও কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সুবিধা সম্বলিত ১১ দফা দাবি উত্থাপন করে মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ইউনিয়ন। বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনের (বাআবিকফ) কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি।

বুধবার (২৯ জুন) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন করে তারা। 

দাবিগুলো হল:

১. স্থায়ী বেতন কমিশন গঠন পূর্বক বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ১৯৭৩ সালের ১০ ধাপে ৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। পে-স্কেল বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত ৫০% মহার্ঘ ভাতা প্রদান করতে হবে।

২. বাআবিকফ কর্তৃক পেশকৃত খসড়া আপগ্রেডেশন/পদোন্নতি নীতিমালা অথবা সকল পাবলিক, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের নীতিমালা পর্যালোচনা করে সর্বোচ্চ সুবিধাপ্রাপ্ত অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।

৩. বাংলাদেশ সচিবালয়ের ন্যায় প্রধান সহকারী /সমমান, উচ্চমান সহকারী/সমমান পদে কর্মরত কর্মচারীদের জাতীয় বেতন স্কেল (২০০৯) ৮,০০০- ১৬,৫৪০ দশম গ্রেড বাস্তবায়ন করতে হবে।

৪. সকল পাবলিক, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারী নিয়োগ এবং কর্মচারীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সকল ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ব-স্ব বেসিক সংগঠনের প্রতিনিধিদেরকে কমিটিতে রাখতে হবে। 

৫. বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনকে বাৎসরিক ১০,০০,০০০/- (দশ লাখ) টাকা আর্থিক অনুদান দিতে হবে। 

৬. সকল পাবলিক, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে জেলা কোটা অনুসরণ করতে হবে।

৭. সকল পাবলিক, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারীদের কোন কারণে সামরিক/ স্থায়ী বরখাস্ত করণের জন্য গঠিত তদন্ত কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন/শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বেসিক সংগঠনের প্রতিনিধি রাখতে হবে। 

৮. জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কল্যান শাখা কর্তৃক জারিকৃত প্রজ্ঞাপন নম্বর ০৫.০০.০০০০.১২৩.০৫.০০১.১৬-৭০০ তারিখঃ ২৭-০৬-২০১৬ অনুযায়ী সকল পাবলিক, স্বায়ত্তশাসিত ও অধা-স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী কর্মরত অবস্থায় মৃত্যবরণ করলে সরকারী কর্মচারীদের ন্যায় তার পরিবারকে ৮,০০,০০০/- (আট লাখ) এবং স্থায়ীভাবে অক্ষম হলে ৪,০০,০০০/- (চার লাখ) টাকা প্রদান করতে হবে।

৯. যোগ্যতা অনুযায়ী সকল পাবলিক, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরি ও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির ক্ষেত্রে পোষ্য কোটা নিশ্চিত করতে হবে। 

১০. সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী ৫০% আভ্যন্তরীণ প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। 

১১. সকল পাবলিক, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের পর্যাপ্ত আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। 

মানববন্ধনে ৩য় শ্রেণি কর্মচারী সমিতির সভাপতি সুমন মামুন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স মাস্টার্স পাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্ররা যখন বিশ্ববিদ্যালয়েরই বিভিন্ন পদে-দপ্তরে যোগদান করার চেষ্টা করছে ঠিক তখনই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন অভিন্ন নীতিমালা নামক একটি প্রহসন আমাদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে। আমরা এ প্রহসন মানি না। আমরা বঙ্গবন্ধুর প্রণীত সেই ৭৩ এর এক্ট বলবৎ চাই।

৪র্থ শ্রেণি কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আলী হোসাইন বলেন, আমি ইউজিসিকে প্রশ্ন করতে চাই, ‘আপনারা কি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রক নাকি পরামর্শক?’ আজকের মানববন্ধন থেকে সরকারের প্রতি দাবি থাকবে ইউজিসি কর্তৃক প্রণীত অভিন্ন নীতিমালা নামক প্রহসন যেন সরকার গ্রহণ না করেন। অন্যথায় আমরা সর্বশক্তি দিয়ে তা প্রতিহত করব।

তিনি আরও বলেন, আমরা সিণ্ডিকেটকে সম্মান করি, শ্রদ্ধা করি। সিণ্ডিকেট থেকে যা সিদ্ধান্ত হবে আমরা তা গ্রহণ করব। কিন্তু আমরা ইউজিসির প্রহসন কোনোভাবেই মানব না।

কর্মচারী ইউনিয়নের দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করে মানববন্ধনে অংশ নেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার সমিতির সভাপতি রশীদুল হায়দার জাভেদ। এসময় তিনি বলেন, ইউজিসির সাথে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় অফিসার ফেডারেশন ও কর্মচারী ফেডারেশনের সভা হয়েছিল। সভায় ইউজিসির চেয়ারম্যান আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন যে চূড়ান্ত নির্দেশিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর আগে আমাদেরকে অবহিত করবেন। কিন্তু আমাদেরকে পাশ কাটিয়েই ইউজিসি কর্মচারীদের নিয়ে অভিন্ন নীতিমালা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন। যার প্রেক্ষিতে আমরাও (অফিসার সমিতি) এই আন্দোলনে একাত্মতা পোষণ করছি। আমরা কর্মচারীদের নিয়ে অভিন্ন নীতিমালা নামক প্রহসন বাতিল চাই।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়