Cvoice24.com

পাউবোর দায়িত্বহীনতায় চরম ঝুঁকির মুখে পেকুয়ার ৩ হাজার লবণ চাষী

পেকুয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৫:৪৬, ২৪ জানুয়ারি ২০২৩
পাউবোর দায়িত্বহীনতায় চরম ঝুঁকির মুখে পেকুয়ার ৩ হাজার লবণ চাষী

পেকুয়ায় ঝুকিপুর্ণ স্লুইস গেট, যে কোন সময় ঘটতে দুর্ঘটনা

কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকা পেকুয়ার মগনামা ইউনিয়নের মটকাভাঙ্গা ও চেরাংঘোনা। এখানে রয়েছেন প্রায় ৩ হাজারেরও চাষী, যাদের বেশির ভাগই লবণ ও মৎস্য চাষের উপর নির্ভরশীল। বছরের উপযুক্ত সময়ে তারা লবণ ও মাছের চাষ করে থাকেন। যে কারণে লবণ কিংবা মৎস্য চাষে উৎপাদন কম হলেই ব্যাপক প্রভাব পড়ে এ অঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষের জীবন যাত্রায়। কিন্তু সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও স্থানীয় স্লুইসগেট রক্ষণাবেক্ষণ কমিটির দায়িত্বহীনতায় চরম আর্থিক ঝুঁকি  ও শংকার মুখে পড়তে যাচ্ছেন এসব চাষী ও শ্রমিকরা।

সরেজমিনে জানা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা ৪১ নম্বরসহ সব স্লুইস গেটগুলো কতিপয় লোভী প্রকৃতির রাজনৈতিক নেতাদের কাছে ইজারা দেয়। ইজারায় শর্ত থাকে রক্ষণাবেক্ষণ করার। কিন্তু তারা তা না করে স্লুইস গেটের প্রবেশ মুখে জাল বসিয়ে প্রতিনিয়ত স্লুইস গেটকে ঝু্কিপূর্ণ করে তোলে। তারা দিনে রাতে জাল থেকে মাছ শিকার করতে গিয়ে স্লুইস গেটের উপরিভাগের মাটি ও পাইপ ও রাস্তার ক্ষতিসাধন করেই চলেছে। তাদের সাথে লবণ ব্যবসায় জড়িত কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তিও এ স্লুইস গেটের ক্ষতিসাধনের জন্য দায়ী বলে জানা গেছে। 

অথচ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তাবাবুরা এসব দেখেও না দেখার ভান করে। এগুলোর বিষয়ে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন না। বড় ধরনের কোন ভাঙ্গন হলে জরুরি সংস্কারের নামে অর্থ লুটে নেন। তবে দ্রুত সংস্কার করা না হলে অচিরেই ধসে পড়বে এ স্লুইস গেট। ফলে পেকুয়ার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে উজানটিয়া এবং মগনামার দক্ষিণ ও পূর্ব অংশের জনসাধারণ। 

স্থানীয় লবণচাষী হেলাল উদ্দিন জানান, প্রভাবশালী কয়েকজন ব্যক্তি ও স্লুইসগেট ইজারাদারদের খামখেয়ালীপনায় আজকে আমরা বড় ধরনের আর্থিক ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছি। আল্লাহ না করুক যদি স্লুইট গেটের বাকি অংশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে কোটি টাকার লোকসানে পড়ব।

লবণচাষী নুরুল আবছার জানান, স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহ আলম, স্লুইস গেট ইজারাদার আজিম ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবহেলায় আজ আমি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে পড়তে যাচ্ছি। দ্রুত এ স্লুইস গেট সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানাচ্ছি।

তবে ইজারাদার সাবেক ইউপি সদস্য নুরুল আজিম বলেন, জাল বসানোর কারণে এটির ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় এটি ধসে পড়েছে। এটার সংস্কার জরুরি। 

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহ আলমের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কক্সবাজার জেলার প্রধান প্রকৌশলী অরূপ চক্রবর্তীর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৪১ নম্বর স্লুইস গেট ধসে পড়ার সংবাদ পেয়ে আমি সরেজমিন পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি এবং জরুরি ভিত্তিতে সংস্কারের জন্য প্রস্তাবনা প্রেরণ করেছি। এখনো প্রস্তাবনার অনুমোদন পায়নি।  অনুমোদন পেলে কাজ শুরু করা হবে।

এ বিষয়ে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্বিতা চাকমা বলেন, বিষয়টি আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানিয়েছি তারা দ্রুত সংস্কার করবে বলে জানিয়েছেন।   

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়