Cvoice24.com


ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পেশাদার সংগীত শিল্পীরা!

প্রকাশিত: ১০:৪৮, ৩১ আগস্ট ২০২০
ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পেশাদার সংগীত শিল্পীরা!

আইয়ুব বাচ্চুর রুপালি গিটার থেকে শুরু করে জেমসের আজিজ বোর্ডিংয়ের ছত্রিশ নম্বর রুমে যে সুর উঠেছিল সে শহরের নাম চট্টগ্রাম। যে শহর থেকে যুগে যুগে উঠে এসেছিল চাটগাঁইয়া নওজোয়ান নকিব খানেরা। যে শহরের অলিগলিতে চর্চা হয় বাদ্যযন্ত্রের। সে শহরের সঙ্গীত শিল্পীরা এখন অসহায়। সামাজিক পরিচিতির কারণে তারা সাহায্য সহযোগিতা চাইতে পারে না। চাকুরির সন্ধানে ঘুরছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দুয়ারে।

চট্টগ্রামকে সঙ্গীত শিল্পীদের অভয়ারণ্য বলা হলেও এ শহরে তারা ভাল নেই। তাদের খোঁজ নেওয়া হয় শুধুমাত্র বিনোদনের জন্য। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে সবার মন মাতিয়ে রাখা মানুষগুলো কোন অবস্থায় আছে কেউ খোঁজ রাখেনি। এ গণ্ডি পেরিয়ে করোনা পরিস্থিতিতে তাদের সহায়তায় মানবতার হাত কেউ বাড়ায়নি। তাদের কেউ করছে পেশা পরিবর্তন, কেউ বা ঘুরছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দুয়ারে দুয়ারে। বেকার হয়ে পড়া এসব মানুষের পাশে দাঁড়াতে তারা সকল প্রতিষ্ঠানকে আহ্বান জানিয়েছেন।

শুধু সংগীত শিল্পীরা নয় তাদের সাথে সংযুক্ত থাকা সাউন্ডের কাজ করা সকলেই মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাদের একমাত্র উপার্জন করার ভরসা সামাজিক অনুষ্ঠান তাও বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। 

সামাজিক অনুষ্ঠান সীমিত পরিসরে করার নির্দেশনা মানতে কেউ বিনোদনের দারস্থ হতে চাইছেন না। থমকে আছে সংগীত শিল্পী সহ তাদের সাথে সংশ্লিষ্টদের কাজ।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাউন্ড ব্যালেন্সার জাহিদ বলেন, মার্চ মাস থেকে সকল সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ আছে। আমার সাউন্ডও ভাড়ায় যায় না। যার কারণে কোন উপার্জনও নেই। আগের জমানো যা আছে সেসব দিয়ে কোন ভাবে সংসার চলেছে। ভবিষ্যত অনিশ্চিত বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।

পেডম্যান লিটন দত্ত বলেন, এ করোনাকালে খুব মানবেতর জীবনযাপন করছি। কেউ অনলাইনে বিভিন্ন ব্যবসা করছেন। আবার অনেকে চাকুরির সন্ধান করছেন। সামাজিকভাবে সংগীতালয় হিসেবে পরিচিতি থাকায় এবং আত্মসম্মানবোধের কথা চিন্তা করে কারো কাছ থেকে কিছু চাওয়াও সম্ভব না। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি এসকল সংগীত শিল্পীদের যোগ্যতা অনুযায়ী চাকুরির ব্যবস্থা করার  অনুরোধ জানান তিনি।

মহিলা গায়িকা মুন্নি সেন গুপ্তা বলেন, অনেকে আছে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশনা করে সংসার চালায়। পরিবারের অন্যন্যা সদস্যরা উপার্জনক্ষম নাও থাকতে পারে। যারা সংগীতের ওপর নির্ভর করে ও পেশা হিসেবে এ পথ বেঁচে নিয়েছে তাদের খুব করুন অবস্থার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আর কোন পথ না পেয়ে চাকুরির দিকে ঝুঁকেছেন অনেকে।

তিনি আরও বলেন, আমি একজন সংগীত শিল্পী। বর্তমান পরিস্থিতি কবে ঠিক হতে পারে তার অপেক্ষা না করে আমি নিজেও নতুন চাকুরির সন্ধানে আছি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তীরন্দাজ ব্যান্ডের লিডার সান সাহেদ সিভয়েসকে বলেন, সবকিছু সীমিত পরিসরে বা পুরোপুরি খুলে দেয়া হলেও সংগীত বিনোদনের অংশটি এখনও খোলা হয়নি। এ পরিস্থিতিতে যারা কমার্শিয়াল কাজ করে তারা খুব আর্থিক টানাপোড়নে আছেন। সংগীত যাদের পেশা ছিল তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তারা অনেকে ছোটখাটো ব্যবসার দিকে ধাবিত হচ্ছে। আবার কেউ চাকুরীর দিকে।

তিনি আরও বলেন, আমরা ‘স্ট্যান্ড বিসাইড মিউজিসিয়ান’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ করেছিলাম। সে গ্রুপের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান থেক সহায়তা পেয়েছি। সংগীতের সাথে সংশ্লিষ্ট বাদ্যযন্ত্রশিল্পী সহ সাউন্ডের কর্মীদের বিশ দিনের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়েছি। তা দিয়ে অবশ্যই পর্যাপ্ত নয়।

রিমন সাখাওয়াত 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়