Cvoice24.com

‘বন্দুকযুদ্ধে’ একরামুল হত্যা
এ ধরনের অভিযানে দুই একটা ভুল হতেই পারে: কাদের

প্রকাশিত: ১০:২৭, ২ জুন ২০১৮
এ ধরনের অভিযানে দুই একটা ভুল হতেই পারে: কাদের

মাদকবিরোধী অভিযানে কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর একরামুল হককে হত্যার ঘটনাটি ‘ভুল’ হিসেবে দেখছেন ওবায়দুল কাদের। বলেছেন, ‘মাদকবিরোধী অভিযানে দুই একটা ভুল হতেই পারে।’

গত ২৬ মে কক্সবাবারের মেরিনড্রাইভ সড়কে কথিত বন্দুকযুদ্ধে এই জনপ্রতিনিধির মৃত্যুর পর শুরু হয়েছে বিতর্ক। ২০০৪ সাল থেকে চলা ক্রসফায়ার আর বন্দুকযুদ্ধের বর্ণনা কখনও বিশ্বাসযোগ্য ছিল না। কিন্তু কথিত বন্দুকযুদ্ধের আগে একরামুলের মোবাইল ফোনে স্ত্রী আয়েশা আক্তারের কল করা এবং গোটা ঘটনাটির অডিও রেকর্ড প্রকাশ হওয়ার পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যে কথা এতদিন বলে আসছে, তার সত্যতা নিয়ে আবার প্রশ্ন উঠেছে।
এই অডিও রেকর্ড প্রকাশ করে একরামুলের স্ত্রী বলেছেন, একরাম কোনো বন্দুকযুদ্ধে নিহত হননি, তাকে একতরফা গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। অডিও রেকর্ডটি ভাইরাল হওয়ার পর তুমুল সমালোচনা চলছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, ‘তদন্ত হবে’। ‘খতিয়ে দেখা হচ্ছে’ বলেছে র‌্যাব।

আজ শনিবার (২ জুন) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে নারীদের জন্য বাস ‘দোলনচাঁপা’র উদ্বোধন শেষে বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

একরামুলের মৃত্যু চলমান মাদকবিরোধী অভিযানকে প্রশ্নের মুখোমুখি করল কিনা-এমন প্রশ্নে মন্ত্রিসভার এই সদস্য বলেন, ‘মোটেও না। এ ধরনের অভিযানে দুই একটা ভুল হতেই পারে।’

কাদের বলেন, বিষয়টা তদন্তের পরে বের হয়ে আসবে। তদন্তের আগে কিছুই বলা যাচ্ছে না।

গত ৪ মে থেকে শুরু হওয়া মাদকবিরোধী অভিযানে ১২০ জনেরও বেশি মৃত্যু হয়েছে, যার প্রায় প্রতিটির বর্ণনাই একরামের মৃত্যুর মতোই দিয়েছে র‌্যাব ও পুলিশ। কোথাও তারা বলেছে সন্দেহভাজনদের ধরতে গেলে তারা বা তাদের সহযোগীরা গুলি করে, অথবা সন্দেহভাজনদের নিয়ে বের হলে সহযোগীরা গুলি করে। পাল্টা গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে সন্দেহভাজনরা।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সড়ক মন্ত্রীসহ সরকারের শীর্ষ পদে থাকা ব্যক্তিদের বক্তব্যও একই রকম।
কাদের বলেন, একরামুল আমাদের পার্টির একজন কর্মী, এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একটা বক্তব্য দিয়েছেন। এরপর আমার মনে হয় কিছু বলা উচিত নয়।

কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন এ অভিযানে যদি কোন নিরীহ মানুষ হয়রানির শিকার হয়, তাহলে অবশ্যই তদন্ত হবে। যারা এ অভিযানের সঙ্গে জড়িত তাদেরকে এখানে রেহাই দেয়া হবে, তা মনে করার কোন কারণ নেই।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, একরামুলকে ফাঁসানো হয়েছে। এটা দলের ভেতর থেকেও হতে পারে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এখানে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের আলামত আমরা পাইনি। যেটা হয়েছে সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি কোন নিরীহ ব্যক্তি হামলার শিকার হয় তাতে সরকার কোন প্রকারের ছাড় দেবে না।

এই ঘটনাটি সাধারণের মধ্যে কোনো আতঙ্ক ছড়াচ্ছে কি না-এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, এখানে আতঙ্ক হবে কেন? আমরা সত্যের পথে আছি। অন্যায় হলে তার বিচার হবে।
মাদকবিরোধী অভিযান নিয়ে সড়কমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের একটা বড় কাজ যা দেশের সর্বস্তরে প্রশংসা কুড়িয়েছে। এখন একটি মতলবি মহল এর বিরোধিতা করছে স্রেফ রাজনৈতিক কারণে। রাজনৈতিক বিরোধিতার খাতিরেই বিরোধিতা হচ্ছে। সরকারের প্রতিপক্ষরাই বিরোধিতা করছে। কিন্তু যাদের জন্য অভিযান তারই খুবই খুশি।

তিনি আরো বলেন, সুনামির মত মাদক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় শুধুমাত্র মৌখিক প্রচারণায় মাদকের স্রোত থামানো যাচ্ছে না। কাদের বলেন, আজকে যারা সমালোচনা করে এ অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চান, তারা কিন্তু মাদক নিয়ে একটা কথাও উচ্চারণ করেননি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন র‌্যাংগস গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুর রউফ চৌধুরী, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, র‌্যাংগস মোটরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহান রউফ চৌধুরী প্রমুখ।

সিভয়েস/আরসি/এমইউ
 

সিভয়েস ডেস্ক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়