৭ সিটের বিএনপির সঙ্গে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি?— পলোগ্রাউন্ডের সমাবেশ প্রসঙ্গে স্বপন 

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:০৯, ৯ নভেম্বর ২০২২
৭ সিটের বিএনপির সঙ্গে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি?— পলোগ্রাউন্ডের সমাবেশ প্রসঙ্গে স্বপন 

বুধবার দুপুরে চট্টগ্রামের একটি কমিউনিটি সেন্টারে চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যৌথ সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখছেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন।

আগামী ৪ ডিসেম্বর পলোগ্রাউন্ড মাঠে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার জনসভাটি চট্টগ্রামের অতীতের সকল জনসভার রেকর্ড ভঙ্গ করবে তবে সেটিকে কখনো বিএনপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি হিসেবে বলা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। একই সঙ্গে বিএনপি-আওয়ামী লীগের তুলনা করা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন দলটির সিনিয়র এ নেতা। 

বুধবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের একটি কমিউনিটি সেন্টারে চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের এক যৌথ সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

আগামী ৪ ডিসেম্বরের দলীয় সভানেত্রীর সমাবেশকে সফল করতেই মূলত এ যৌথ সভার আয়োজন করা হয়। নগর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আ.জ.ম নাছির উদ্দিনের সঞ্চালনায় ও  মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘অনেকেই বলার চেষ্টা করছেন— বিএনপির মহাসমাবেশের পরিবর্তে পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে আমরা এ জনসভা করছি। এটি কোনো পাল্টা কর্মসূটি নয়। আমরা বিএনপির সঙ্গে পাল্টাপাল্টি কোনো জনসভা করতে চাই না। এ ধরনের মানসিকতা আমরা পোষণ করি না। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দিয়ে কার সঙ্গে লড়াই হবে? ২০০৮ সালে ৩০ সিটের বিএনপি, তার সঙ্গে পাল্টাপাল্টি করবো? ২০১৮ সালের ৭ সিটের বিএনপি, তার সঙ্গে পাল্টাপাল্টি করবো? যে দল এখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছে। যে দলের নেত্রী সকলকে ছাপিয়ে নিজে স্বয়ং দেশে এবং বর্হিবিশ্বে জনপ্রিয়তা এবং শীর্ষে অবস্থান করছে— সেই নেত্রী কারো সঙ্গে পাল্টাপাল্টি জনসভা করবেন এটি বলা এক ধরনের অপরাধ। এ অপরাধ আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী দয়া করে করবেন না।’

৪ ডিসেম্বরের জনসভাটি বাংলাদেশের ইতিহাসের অনেক বড় বড় জনসভাকে ছাপিয়ে যাবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম আবার নতুন রেকর্ড গড়বে। চট্টগ্রাম বিভাগের সকল জেলা নিয়ে এটি মহাসমাবেশ নয়; এটি শুধুমাত্র চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। অর্থাৎ প্রশাসনিকভাবে যে চট্টগ্রাম জেলা; সেই বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলার একটি জনসভা। এই জনসভাকে আমরা জনসমুদ্রে পরিণত করতে চাই। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) হিসাব অনুযায়ী, এ ৬০ বর্গ মাইলের চট্টগ্রামে সিটি করপোরেশনে ৬০ লাখ জনগণ বসবাস করেন এবং আরও ১৫ লাখ ভাসমান জনসংখ্যা রয়েছে।  এর বাইরে ৫২৮৩ বর্গ কিলোমিটারের সমগ্র চট্টগ্রামে প্রায় ৯০ লাখ মানুষের বসবাস। এ ৯০ লাখ মানুষের একটি ক্ষুদ্র অংশও যদি, ৪ ডিসেম্বর আমাদের জনসভায় আমরা আনতে পারি তাহলে জনসভাটি বাংলাদেশের ইতিহাসের অনেক বড় বড় জনসভাকে ছাপিয়ে যাবে ইন-শাহ-আল্লাহ।’

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘মঞ্চে যে নেতৃবৃন্দ আছেন মোশাররফ ভাই। তিনি তো শুধু চট্টগ্রামের নেতা নন; তিনি বাংলাদেশের নেতা। চট্টগ্রামের সর্বজন শ্রদ্ধেয় নেতা। তাঁর পরিচালনায় আমাদের তিনটি ইউনিটের যোগ্য সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, চসিকের মেয়র, শিক্ষা উপমন্ত্রী, কাউন্সিলরবৃন্দ, বিভিন্ন ইউনিটের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ, উপজেলাসমূহের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেয়র, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, জেলা পরিষদ সদস্যসহ আমরা যদি একটু আন্তরিক হয়। তাহলে এ জনসভাটি মহাজনসমুদ্রে পরিণত হবে। এবং আমি এটা বিশ্বাস করি, সেই জায়গাটি আপনারা করবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটি কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আসবেন সশস্ত্র বাহিনীর একটি প্রোগ্রামে। সেটি রাষ্ট্রীয় প্রোগ্রাম। সেখানে যাবেন প্রধানমন্ত্রী কাম প্রতিরক্ষামন্ত্রী। আর আপনাদের কাছে আসবেন জনসভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী, আমাদের প্রিয় আপা জননেত্রী শেখ হাসিনা। যিনি আমাদের আশা, সম্ভাবনা এবং বাস্তবতার মূর্ত প্রতীক। আমরা যারা তাঁর রাজনৈতিক সহকর্মী আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, আমরা এ জনসভাকে রাজনৈতিক কর্মসূচি হিসেবে গ্রহণ করবো।’

আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘শুধুমাত্র একদিনের একটি জনসভা করবো তা নয়; তাঁর আগমনের মধ্য দিয়ে— আজ থেকে চট্টগ্রামে একটি নতুন গণজাগরণের সৃষ্টি হবে দলের মধ্যে। আমাদের ইউনিটে ইউনিটে মিটিং হবে, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে মিটিং হবে, ইউনিয়নে ইউনিয়নে মিটিং হবে, থানায় থানায় মিটিং হবে। সেখানে আমাদের দলের নেতাকর্মীদের অনেকের দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব থাকার কারণে একটু শরীরে জং লেগেছে, মেশিনপত্রে একটু জং লেগেছে। এ মেশিনপত্রটাকে জাগ্রত করতে হবে। রাজনৈতিক অর্থাৎ তেল-মুবিল দিতে হবে। রাজনৈতিকভাবে আবার পুরোনো দিনে ফিরে যেতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, যে ব্যক্তি বিএনপির মনোনীত এমপি, যে ব্যক্তি বিএনপি থেকে নমিনেশন পেয়ে বিএনপি করেন। বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছেন, অবরোধ করতে হবে। এখনও তো অবরোধ বহাল আছে। অবরোধ কি প্রত্যাহার হয়েছে? প্রত্যাহার হয়নি। কিন্তু ওই ব্যক্তিটিও জননেত্রী শেখ হাসিনার কথা শুনে তার কারখানা চালু রেখেছেন, তার পরিবহন চালু রেখেছেন। তার ব্যবসায়িক সমস্ত কর্মকাণ্ড চালু রেখেছেন। এবং সকল মানুষের সম্মিলিত চেষ্টায় জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ এ বিশ্ব মন্দার মাঝেও যেখানে পৃথিবীর বড় বড় অর্থনৈতিক শক্তিশালী রাষ্ট্র হিমশিম খাচ্ছে। সেখানে বিশ্ব মন্দার মাঝেও দক্ষ, প্রাজ্ঞ, বিচক্ষণ, দেশপ্রেমিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমস্ত জনগণের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। এটি কি কম প্রাপ্তি?’

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়