বাইক পেতে রাইডারকে অণ্ডকোষ খুঁচিয়ে খুন করে ৩ কিশোর
সিভয়েস প্রতিবেদক
গত শুক্রবার বান্দরবানের লামা থানার ফাইতং ইউনিয়নের অলিকাটা এলাকার পাহাড়ের ঢালে উদ্ধার হয়েছিল একটি অর্ধগলিত লাশ। এসময় গলায় ছুরির আঘাত ছাড়াও অন্ডকোষসহ শরীরে স্পর্শকাতর অঙ্গে দেখা যায় মারাত্মক জখমের চিহ্ন। লামার পাহাড়ে কে বা কারা এ নৃশংস খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে তার কোন সূত্রই পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে শেষ পর্যন্ত রহস্য উৎঘাটন করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
মঙ্গলবার (২৫ মে) রাতে এ ঘটনার জড়িত একজনকে চট্টগ্রাম নগরের বাকলিয়া থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১৫।
গ্রেপ্তার আব্দুল্লাহ (১৬) কক্সবাজারের নোনাছড়ি থানার আব্দুর রশিদের ছেলে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুল্লাহ এ খুনে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
র্যাব জানায় –আব্দুল্লাহ, তার সহযোগী কায়সার (১৮) ও আব্দুর রহিম (১৮) মিলে বাইক ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে গত ১৮ মে খুন করে বাইকের মালিক মুবিনকে। যা ছিল পূর্বপরিকল্পিত।
র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে আটক আব্দুল্লাহ জানায়, ভিকটিম মুবিন তাদের পূর্ব পরিচিত। একটি বাইক ভাড়ায় খাটাতো সে। কায়সার, রহিম ও আব্দুল্লাহ মিলে ফন্দি আটেন বাইকটি আত্মসাতের। পরে গত ১৮ মে কায়সার তার বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা বলে নোনাছড়ির সুইচ গেট এলাকায় আসতে বলে। সেদিন রাত ১০টার দিকে পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা মুবিনকে বড়ইতলী টু চিউবতলী রোডের অলিকাটা এলাকায় নিয়ে যায়। তখন আব্দুর রহিম প্রসাব করার জন্য মুবিনকে মোটরসাইকের থামাতে বলে। মুবিন মটরসাইকেল থামালে আব্দুর রহিম প্রসাব করে এসে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ৩ জন মিলে সেখানেই মুবিনের গলায় ছুরির পোচ মারতে থাকে। পরে মুবিনের মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে অন্ডকোষসহ শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে জখম করতে থাকে। তাও মৃত্যুর ব্যাপারে সন্দেহ থাকায় কাছাকাছি একটি পাহাড় থেকে মুবিনকে নিচে ফেলে দেয় তারা।
র্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ মোহাম্মদ শেখ সাদী সিভয়েসকে জানান, প্রথমদিকে অর্ধগলিত লাশটির পরিচয় জানা যাচ্ছিল না। কিন্তু পরে জানা যায় কক্সবাজার জেলার লামা থানার লাশটি মুবিনের। তখন ধারণা করা হচ্ছিল, হত্যাকাণ্ডটি চার দিন পূর্বে সংঘটিত হয়ে থাকতে পারে। কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা জানতে বাড়ানো হয় গোয়েন্দা নজরদারি। পরে মঙ্গলবার রাতে বাকলিয়া থেকে আব্দুল্লাহকে আটক করে র্যাব। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ খুনে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন আব্দুল্লাহ।
পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে আব্দুল্লাহকে লামা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।