Cvoice24.com

রামগড়ে ব্যাটারিচালিত রিকশার বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ, যাত্রীরা ক্ষুব্ধ

রামগড় প্রতিনিধি  

প্রকাশিত: ১৫:৩৫, ৩ জানুয়ারি ২০২২
রামগড়ে ব্যাটারিচালিত রিকশার বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ, যাত্রীরা ক্ষুব্ধ

রামগড়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিরুদ্ধে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ

রামগড় বাজারে সবজি বিক্রেতা মোতালেব হোসেন। ব্যাটারিচালিত অটো রিকশায় সোনাইপুল নেমে চালককে ১০টাকা দিতেই বেঁকে বসলেন বাইকওয়ালা। জোর গলায় বলে উঠলেন- “ভাই ১২টাকা দেন!” চালকের বলার ভঙ্গিতে মেজাজ তিরিক্ষি হয়ে ওঠে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অনেক তর্কাতর্কির পর ১০টাকার ভাড়া ১২টাকাই দিতে হলো তাকে।

কেবল মোতালেব হোসেন নন, পৌরসভার প্রতিটি পয়েন্টে এমন অসংখ্য ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা যাত্রীর সঙ্গে ভাড়া নিয়ে চালকদের ঝামেলা হচ্ছে নতুন বছরের শুরু থেকে।

চলছে খিস্তি খেউর, ঘটছে হাতাহাতিসহ নানা অপ্রীতিকর ঘটনাও। অটোরিকশা চালকরা বিদ্যুতের দাম বাড়ার অজুহাত দেখিয়ে হঠাৎ করেই সর্বনিম্ন ভাড়া জনপ্রতি ৫ টাকা থেকে স্থানভেদে নির্ধারণ করেছেন সর্বোচ্ছ ২৫ টাকাও। ফলে এসব অটোরিকশা চালকদের অনিয়মে সাধারণ যাত্রীরা চরম ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন। 

এদিকে ভাড়া বৃদ্ধির কারণে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে চলছে নানান সমালোচনা। যাত্রীদের চাওয়া চালক সমিতি নয় বরং ভাড়া নির্ধারণ করবে পৌরসভা কিংবা প্রশাসন। 

অটোরিকশার চার্জের কারণে একদিকে বিদ্যুতের লোডশেডিং অপরদিকে বাড়তি ভাড়ার ধকল সামাল দিতে হচ্ছে রামগড়বাসীকে। কোন নিয়মনীতি না থাকায় বিভিন্ন রুটে অটোচালকরা ইচ্ছেমত ভাড়া হাঁকছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভাড়া নির্ধারণে স্থানীয় প্রশাসন কিংবা পৌরসভাকে অবগত না করেই সমিতির ইচ্ছামত ভাড়া নির্ধারণ করেছে চালক সমিতি।

যাত্রীদের অভিযোগ, পৌরসভা ও এর আশপাশের এলাকায় পৌরসভা কর্তৃক নিবন্ধিত বিপুল সংখ্যক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করছে। দীর্ঘদিন ধরে এসব অটোরিকশায় স্থানীয়রা তুলনামূলক কম ভাড়ায় যাতায়াত করতেন। তবে গত ১ জানুয়ারি থেকে বিদ্যুতের মূল্য বাড়ার অজুহাতে চালকরা অতিরিক্ত ভাড়া হাতিয়ে নিচ্ছে যাত্রীদের কাছ থেকে।  আর এই নিয়ে যাত্রী ও অটোরিকশা চালকদের মধ্যে বাদানুবাদসহ অপ্রীতিকর ঘটনা বাড়ছেই। 

এ পরিস্থিতিতে সমিতি নয় স্থানীয় প্রশাসন পৌরসভা কর্তৃক চালক ও যাত্রী উভয়কে বিবেচনা করে ভাড়া নির্ধারণ হওয়া জরুরি।

এদিকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার দাপটে একসময়ের পরিবেশবান্ধব রিকশা নগরী হিসেবে পরিচিত শহরে এখন রিকশা উদাও হয়ে গেছে। তাছাড়া রামগড় ও সোনাইপুল মূল সড়কে এখন প্রতিনিয়ত অটোরিক্সার যানজট লেগে থাকে। তাছাড়া এসব অটোরিকশার বয়স্ক ও শিশু ড্রাইভারদের হাতে ঘটছে নিয়মিত দুর্ঘটনা। ওদের নেই কোন নির্ধারিত স্ট্যান্ড যার কারণে যত্রতত্র পার্কিং করে রাখে অটোরিকশাগুলো।

বাড়তি ভাড়ার বিষয়ে রামগড় ইজিবাইক চালক সমিতির সভাপতি তাজুল ইসলাম বলেন, যেখানে এককাপ চা ১০ টাকা সেখানে ২টাকা বৃদ্ধি সামান্য। তবে সমিতির নেতৃবৃন্দ পৌরসভায় মেয়র ও কাউন্সিলরদের সাথে বৈঠক করে ভাড়া বৃদ্ধি করেছেন বলে জানান তিনি।

উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা দিদারুল আলম জানান, চালক সমিতি একতরফাভাবে ভাড়া বৃদ্ধি করতে পারেন না এজন্য তাদেরকে অবশ্যই স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে মানানসই ভাড়া নির্ধারণ করা উচিৎ। তবে ভাড়া বৃদ্ধির ব্যাপারে চালক সমিতি তাকে অবগত করেননি বলে তিনি জানান। 

এবিষয়ে পৌর মেয়র রফিকুল আলম কামালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অটোরিক্সা চালক সমিতির সাথে ভাড়া বৃদ্ধির কোন আলোচনাই হয়নি। চালক সমিতি ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্তে আমার নাম ব্যবহার করছেন তা দুঃখজনক। এ ব্যাপারে আজই সমিতির নেতৃবৃন্দকে ডাকা হবে বলে তিনি জানান।
 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়