স্বেচ্ছায় হার রাশেদের, চ্যাম্পিয়ন বাঘা শরীফ

মিনহাজ মুহী ও রবিউল রবি, লালদীঘির মাঠ থেকে

প্রকাশিত: ১৭:৪৯, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
স্বেচ্ছায় হার রাশেদের, চ্যাম্পিয়ন বাঘা শরীফ

দুই বলী মোহাম্মদ রাশেদ ও বাঘা শরীফ। দুজনেরই বাড়ি কুমিল্লা জেলায়। এবারের ঐতিহাসিক জব্বারের বলীখেলায় তারা সেমিফাইনাল টপকে ফাইনালে কুস্তি লড়েছেন একে অপরের বিরুদ্ধে। নগরের লালদীঘি মাঠের বিশেষ মঞ্চে দফায় দফায় ১১ মিনিট শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ের পর স্বেচ্ছায় হার মানলেন রাশেদ। বিজয়ী ঘোষণা করা হয় বাঘা শরীফকে। আর তৃতীয় স্থান নির্ধারণীতে সীতাকুণ্ডের রাসেলকে হারান খাগড়াছড়ির সৃজন বলী।

এদিকে জব্বারের বলীখেলার মাঠের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী কক্সবাজারের চকরিয়ার তারিকুল ইসলাম জীবন এবং কুমিল্লার হোমনার শাহজালাল এবার খেলায় অংশ নেননি। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৫ এপ্রিল আয়োজিত ১১৪তম আসরে শাহজালাল বলীর কাছে হেরে ছিলেন  তরিকুল ইসলাম জীবন। তবে এবারের বিজয়ী বাঘা শরীফ ও রানার্স আপ রাশেদ- দুজনেই শাহজালালের শিষ্য। 

বাঘা শরীফের বাড়ি কুমিল্লার হোমনা থানার মহিপুর গ্রামে। রাশেদের বাড়িও একই এলাকায়। পেশায় মাংস বিক্রেতা শরীফ কুমিল্লার সেরা বলী হিসেবে খ্যাতি পেয়ে ‘বাঘা শরীফ’ নাম হয়েছে তাঁর।

চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর বাঘা শরীফ বলেন, ‘প্রথমবারের মতো অংশ নিয়ে প্রথবমারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। যারা আমাকে সুযোগ করে দিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। বিজয়ের এ ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।’

সৃজন চাকমা

এবারও তৃতীয় খাগড়াছড়ির সৃজন চাকমা

এবারও তৃতীয় হয়েছেন খাগড়াছড়ির সৃজন চাকমা (৩৭)। তার বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলার খবংপড়িয়া গ্রামে। গত তিনবার জব্বারের বলীখেলায় অংশ নিয়ে তিনবারই তৃতীয় হয়েছেন সৃজন। পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন বলীখেলায় চ্যাম্পিয়ন তিনি।

শিষ্যদের সুযোগ দিতে সরে এলেন শাহজালাল বলী!

নিজের দুই শিষ্যকে সুযোগ করে দিতে এবার খেলায় অংশ নেননি কুমিল্লার শাহজালাল বলী! সবার ধারণা ছিল, চারবারের চ্যাম্পিয়ন শাহজালাল বলী এবারও চ্যাম্পিয়ন হয়ে ঘরে ফিরবেন। 

রাশেদ ও শরীফ। দুজনের গ্রামের বাড়ি শাহজালালের একই জেলা কুমিল্লায়। দুজনই কুস্তির প্রশিক্ষণ নিয়েছেন জব্বারের বলীখেলার চারবারের চ্যাম্পিয়ন শাহজালাল বলীর কাছ থেকে।

বছরের পর বছর জীবন-শাহজালালের লড়াই

২০১৮ সাল থেকে জীবন ও শাহজালাল বারবার চূড়ান্ত যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে আসছিলেন চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলীখেলায়। ওই বছর জীবনকে পরাস্ত করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন শাহজালাল। পরের বছর অবশ্য জীবন পরাজয়ের প্রতিশোধ নিয়েছিলেন শাহজালালকে হারিয়ে। ২০২০ ও ২০২১ সালে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতিতে বলীখেলা হয়নি। তবে ২০২২ সালে শাহজালালকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হন জীবন। এর পরের বছর জীবনকে হারিয়ে আবারো বিজয় ছিনিয়ে নেন শাহজালাল।

চট্টগ্রাম নগরের লালদীঘি মাঠে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে খেলা শুরু হয়। বলীখেলায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত বলীরা অংশ নেন। এর আগে বেলুন উড়িয়ে বলীখেলার ১১৫ তম আসর উদ্বোধন করেন অতিথিরা। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রেলপথ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ও রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। উদ্বোধক চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন। বিশেষ অতিথি বলীখেলার স্পন্সর প্রতিষ্ঠান এনএইচটি স্পোর্টস কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানসীর।

আরও পড়ুন...

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়