Cvoice24.com

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির নতুন কমিটি
গোস্সা ভেঙেছে লেয়াকতের, বলছেন ‘সন্তান ছুঁড়ে ফেলে দেয়া যায় না’

মিনহাজ মুহী, সিভয়েস২৪
২১:৩৫, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
গোস্সা ভেঙেছে লেয়াকতের, বলছেন ‘সন্তান ছুঁড়ে ফেলে দেয়া যায় না’

‘ভাঙা মন আর জোড়া নাহি যায়, ঝরা ফুল আর ফেরে না শাখায়।’ দ্রোহের কবি কাজী নজরুলের কবিতার ছন্দ যেন আনায় আনায় মিথ্যা প্রমাণিত হলো বিএনপি নেতা লেয়াকত আলীর কাণ্ডে! দক্ষিণ জেলা বিএনপিতে পাওয়া পদকে রাতে ‘যাকাতি’ পদ হিসেবে আখ্যা দিলেও রাত পেরুতেই সেই পদই সন্তানতুল্য করে নিয়েছেন গণ্ডামারার সেই লেয়াকত আলী। বলছেন, ‘আল্লাহর কাছে পুত্র সন্তান চেয়ে যদি কন্যা সন্তান পায় তাকে ছুড়ে ফেলে দেয়া যায় না। লালন পালন করে বড় করতে হয়।’

রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দক্ষিণ জেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে যুগ্ম সম্পাদকের পদে আসে তার নাম। শুরুতেই পদটি ‘যাকাতি’ আখ্যা দিয়ে তা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়ে ক্ষণে ক্ষণে ‘বৈরী বার্তা’ দিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

‘মনের বিষ’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে

দক্ষিণ জেলা বিএনপির ঘোষিত কমিটিতে সদস্য সচিব পদ প্রত্যাশিত ছিল লেয়াকত আলীর। ঘোষিত কমিটিতে তার নাম আসে যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে। এতেই বিগড়ে যায় তাঁর মেজাজ। এরপর থেকে একের পর এক স্ট্যাটাসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেটাতে শুরু করেন ‘মনের জ্বালা’। শুরুতেই ‘যাকাতি’ পদ আখ্যা দিয়ে তিনি লিখেন, ‘দল আমাকে যথেষ্ট মূল্যায়ন করার চেষ্টা করেছে। আমাকে দেয়া যাকাতি পদটি অন্য কাউকে দিয়ে খুশি করুন।’ তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই সেটি মুছে ফেলে অনুসারিদের উদ্দেশ্যে আরেকটি বার্তা দেন তিনি। যেখানে তিনি লিখেন ‘দক্ষিণ জেলা কমিটিতে যে লিয়াকত দেখা যাচ্ছে সেটি আমি নই।’ এরপর ‘মজলুম হয়ে যারা জম্মে তারা সব দিক থেকে মজলুম থাকে। আলহামদুলিল্লাহ’, ‘যারা আমার কথায় ঝুঁকি নিয়ে মিছিল করেছেন, জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন। আপনাদের জীবন ধ্বংসের জন্য আমিই দায়ী’, ‘আমি ২০০৯ সালে যুগ্ম আহবায়ক ছিলাম, ১৬ বছর পর কি আমাকে প্রমোশন দেয়া হলো? না অপমান করা হলো?’— এমন বিষবার্তা পাওয়া গেছে ফেসবুকে তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে।

‘যাকাতি’ পদ আগলে নিয়ে ‘সন্তানতুল্য’

নানা নাটকীয়তার পর দিনশেষে দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়কের পদটি আগলে নিয়েছেন লেয়াকত হোসেন। শুধু তাই নয়, পদটিকে ‘সন্তানতুল্য’ সম্বোধন করে বলছেন, ‘আল্লাহর কাছে পুত্র সন্তান চেয়ে যদি কন্যা সন্তান পায় তাকে ছুড়ে ফেলে দেয়া যায় না। লালন পালন করে বড় করতে হয়।’ রবিবার রাতে রাগের কারণও জানান তিনি। পদত্যাগ প্রত্যাহার করে তিনি লিখেন, ‘লেয়াকত হোসেন দেখে আমার মনের অবস্থা ভালো ছিলনা। দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিলাম এবং পদত্যাগ প্রত্যাহার করলাম।’

কী বলছেন লেয়াকত আলী

এসব প্রসঙ্গে জানতে দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক লেয়াকত আলীর সবশেষ মন্তব্য জানতে একাধিকবার মুঠোফোনে চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। এর আগে, রবিবার বিকেলে তিনি সিভয়েস২৪’কে বলেছিলেন, ‘ওই লিয়াকত হোসেন আমি নই। চট্টগ্রামে তো অনেক লিয়াকত আছেন। হয়তো তাদের মধ্যে কেউ একজন হবেন। আর এই লিয়াকত আসলে কে সেটা আমার চেয়ে দল বা দলের নেতারাই ভালো বলতে পারবেন।’

পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে লেয়াকত আলী ওই সময়ে বলেন, ‘পদত্যাগের বিষয় আসবে কেন! যেহেতু আমাকে কমিটিতেই রাখা হয়নি। আমার অজ্ঞাত কারণে আমি ওই পোস্ট (পদত্যাগ বার্তা) দিয়েছিলাম। পরে বিষয়টি সংশোধন (এটি আমি নই) করেছি।’

কমিটির বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এত বিশাল কমিটি, সেটা নিয়ে মন্তব্য করার মতো সেই বিশাল নেতা আমি হই নাই। আমি ক্ষুদ্র মানুষ, মাঠের সাধারণ কর্মী— এত বড় কমিটি নিয়ে মন্তব্য করতে পারি! সাধারণ একজন কর্মী হয়ে এত হাইভোল্টেজ কমিটির বিষয়ে বলার মতো যোগ্যতা আমার নেই।’

সিভয়েস২৪/