থমথমে হাটহাজারী, এখনো রাস্তা ছাড়েনি মাদ্রাসা ছাত্ররা
সিভয়েস প্রতিবেদক
চট্টগ্রামের হাটহাজারী-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক এখনো মাদ্রাসাছাত্রদের দখলেই। সড়কের ওপর বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে তারা অবস্থান করছে। তাই বন্ধ রয়েছে যান চলাচল।
এতে দুর্ভোগে পড়েছে ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা নাজিরহাট, খাগড়াছড়ি ও রামগড়ের যাত্রীরা। বিকল্প পথ দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে অনেককে চরম বিপাকেও পড়তে হচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার আড়াইটা থেকে চলাচলের গুরুত্বপূর্ণ এ পথটি বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি হাটহাজারী এলাকার প্রধান সড়কের প্রায় সব দোকানপাটও বন্ধ রয়েছে। সকাল থেকেই খুলেনি পৌর সদরের বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ও শপিং সেন্টার।
পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি। সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে একধরনের আতঙ্ক। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের রাস্তার বিভিন্ন স্থানে টহল দিতে দেখা যায়। অতিরিক্ত র্যাব, পুলিশের সঙ্গে রাস্তায় নেমেছে বিজিবিও।
এদিকে ঘটনার পর গতকাল শুক্রবার থেকে হেফাজতের নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন স্থানীয় সাংসদ ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম। বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে বলা হলেও স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি। শনিবার সকাল থেকে উল্টো বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করছে।
মাদ্রাসা থেকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে ছাত্রদের মাদ্রাসায় ফেরারও আহ্বান জানানো হয়।
উল্টো সরকারকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়াসহ নানা দাবি তুলে ধরা হচ্ছে ছাত্রদের পক্ষ থেকে।
সেই সঙ্গে হাটহাজারীর ওসিকে প্রত্যাহার, আহতদের সবার চিকিৎসা ভার সরকারকে নেওয়া, চমেক হাসপাতালে যাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়নি সেইসব চিকিৎসকদের বিচার করা, হতাহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও দাবি জানানো হয়।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আসাকে ঘিরে শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিক্ষোভ দেখানো হয়। এক সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় হেফাজতের নেতাকর্মীরা। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে একপথচারীসহ চারজন নিহত হলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠে।
এর আগে ও পরে হাটহাজারী থানা, ভূমি অফিস, ডাক বাংলোসহ বিভিন্ন স্থাপনায় ব্যাপক ভাঙচুর ও হামলা চালায় হেফাজত।
এদিকে প্রথমদিকে ময়নাতদন্ত ছাড়া নিহত চারজনের মরদেহ নিতে চাইলেও পুলিশি হস্তক্ষেপে তা সম্ভব হয়নি। পরে রবিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ঘোষণা দিয়ে ময়নাতদন্ত মেনে নিয়েই চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ছাড়েন হেফাজতের নেতাকর্মীরা।
জানা যায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ডিআইজি আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে প্রশাসনের কর্মকর্তারা থানায় হাটহাজারী মাদ্রসার সিনিয়র শিক্ষক মুফতি জসিম উদ্দীনের নেতৃত্বে একদল শিক্ষকের সঙ্গে রাতেই বৈঠকে বসেন।
অন্যদিকে হেফাজতের হরতাল ঘোষণার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো হরতাল করতে দেওয়া হবে না। সেই সঙ্গে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের তাণ্ডবের বিষয় খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
- হাটহাজারী ডাকবাংলোতে হেফাজতের বিক্ষুব্ধ কর্মীদের আগুন
- হেফাজতের তাণ্ডবের পর চট্টগ্রামসহ সারাদেশেই নেমেছে বিজিবি
- থমথমে হাটহাজারীতে যান চলাচল বন্ধ, মাইকে ছাত্রদের নানা দাবি
- হেফাজতের সংঘর্ষকালে পালাতে গিয়ে গুলিতে প্রাণ হারায় কিশোর
- হাটহাজারীতে পুলিশ হেফাজত গোলাগুলিতে নিহত ৪
- ময়না তদন্ত ছাড়া লাশ চায় হেফাজত