ভোটের ফলে দল এগিয়ে থাকলেও মমতা পিছিয়ে

সিভয়েস আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:০৮, ২ মে ২০২১
ভোটের ফলে দল এগিয়ে থাকলেও মমতা পিছিয়ে

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

পশ্চিমবঙ্গে হওয়া আট দফা ভোটের ফলাফলে আবারও ক্ষমতায় আসছে তৃণমূল কংগ্রেস। এখন পর্যন্ত পাওয়া ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনেরও বেশি ১৯০টিতে এগিয়ে রয়েছে দলটি। তাদের সঙ্গে পাল্লা দেওয়া ভারতীয় জনতা পার্টি তথা বিজেপি এগিয়ে আছে ৯৪টি আসনে।

পোস্টাল ব্যালট গণনা শুরু হতেই আভাস দিচ্ছিল তৃণমূল-বিজেপির হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের।    

তৃণমূলের জন্য সবচেয়ে কষ্টের খবর দলের প্রধান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই হারতে বসেছেন তারই একসময়ের সহযোগী শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে লড়ে। পশ্চিমবঙ্গের ২৯৪ আসনের মধ্যে আট দফা ভোটের সবচেয়ে আলোচিত কেন্দ্রই ছিল এই নন্দীগ্রাম, যেখানে দ্বিতীয় দফায় ১ এপ্রিল ভোট হয়।প্রাথমিক গণনায় অনেকটাই এগিয়ে আছেন বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। মমতার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে এ যেন এক বড় ধাক্কা।   

আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়েছে, রোববার (২ মে) তৃতীয় রাউন্ডের ভোট গণনা শেষে নন্দীগ্রামে সাড়ে ৪ হাজার ভোটে পিছিয়ে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তৃণমূল নেত্রীর জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী রাজ্যের বিদায়ী মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তার দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই জিতবেন। জিতে ফের সরকার গড়বে তৃণমূল।

নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে নিজের কেন্দ্র ভবানীপুর শোভনদেবকে ছেড়ে দিয়েছেন মমতা। সকাল থেকে সেখানে এগিয়েই রয়েছেন শোভনদেব। তার থেকে পিছিয়ে রয়েছেন বিজেপির রুদ্রনীল ঘোষ। আশাবাদী শোভনদেব তাই বললেন, ‘আজকের দিনে এসে বলব, আমি জিতছি। দল জিতছে। নেত্রী জিতছেন।’

৬৬ বছর বয়সী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক জীবনটাই যদিও নানা উত্থান পতনে এগিয়েছে। এই নেত্রীর জন্ম ১৯৫৫ সালের ৫ জানুয়ারি কলকাতার হাজরা অঞ্চলের এক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে। বাবা প্রমীলেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী।

কলকাতার শ্রীশিক্ষায়তন কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি সম্পন্ন করার পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে কলকাতার যোগেশচন্দ্র চৌধুরী আইন কলেজ থেকে এলএলবি ডিগ্রিও নেন। 

সত্তরের দশকে কংগ্রেস আই দলের মধ্য দিয়ে মমতার মূলধারার রাজনৈতিক জীবনের সূচনা। ১৯৭৬ থেকে ৮০ সাল পর্যন্ত তিনি পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কংগ্রেস আইয়ের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। 

১৯৮৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে মাত্র ২৯ বছর বয়সে পশ্চিমবঙ্গের যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে বর্ষীয়ান কমিউনিস্ট নেতা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে পরাজিত করে সেসময়ের সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্র থেকে সাতবার জয়লাভ করেন। 

রাজনৈতিক জীবনে কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেটের দুবার রেলমন্ত্রী, একবার কয়লা মন্ত্রণালয় এবং একবার মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিকাশ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  

১৯৯৭ সালে মমতা কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস গড়ে তোলেন। ২০১১ সালে তার নেতৃত্বে তৃণমূল পশ্চিমবঙ্গের ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকারকে পরাজিত করে। আর রাজ্যের প্রথম নারী মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন মমতা।

তার নেতৃত্বেই ২০১৪ সালে এককভাবে ৩৪টি লোকসভা আসনে জয় পায় তৃণমূল কংগ্রেস। ২০১৬ সালে আবারও বিপুল ভোটে জয় পেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা। 

ছাত্র রাজনীতির মধ্য দিয়েই মমতার রাজনৈতিক জীবন শুরু। জীবনের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বিভিন্ন ইস্যুতে তিনি আন্দোলন করেছেন। বিশেষ করে কৃষকদের জমি অধিগ্রহন করে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের বিরোধীতা করে আন্দোলন করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়