Cvoice24.com

স্বামী-স্ত্রী পাশাপাশি বসে খাওয়া পছন্দ তসলিমা নাসরিনের

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:৩৭, ৩০ মে ২০২১
স্বামী-স্ত্রী পাশাপাশি বসে খাওয়া পছন্দ তসলিমা নাসরিনের

তসলিমা নাসরিন

স্বামী স্ত্রীর সঙ্গে পাশাপাশি বসে খাওয়া, স্বামী চার টুকরো মাংস নিলে স্ত্রীও চার টুকরো মাংস খাওয়া পছন্দ করেন বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন।

রবিবার (৩০ মে) সাড়ে ৫টার দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক একাউন্টে এসব পছন্দের কথা বর্ণনা করে স্ট্যাটাস দিয়েছেন ভারতে বসবাসরত বাংলাদেশি এই লেখিকা।

স্ট্যাটাসে তসলিমা নাসরিন লিখেন, ‘ইউটিউবে মানুষ যা খুশি আপ্লোড করতে পারে, করেও। শিক্ষিতরা যাকে স্টুপিড শো বলে, তেমন একটি শো একদিন চোখে পড়লো। ইন্ডিয়ান বেস্ট ইটিং শো। কী হয় এখানে? গ্রামের বা মফস্বলের স্বামী স্ত্রী দুজন নিজেদের বাড়িতে বসে বিশাল থালায় প্রচুর ভাত নিয়ে নানা রকম মাছ মাংস তরিতরকারি দিয়ে খায়। অলমোস্ট নিঃশব্দেই খায়।’ 

‘ওদের খাওয়াটা মানুষ পনেরো ষোলো মিনিট ধরে দেখে। কোনওটি কয়েক লাখ, কোনওটি লাখের কাছাকাছি ভিউ। লাইক কয়েক হাজার। ওদের রেগুলার লাঞ্চ বা ডিনারটাই পাবলিক  করেছে। না, এটি এমন কোনও খেলা নয় যে, যে আগে খেয়ে শেষ করতে পারবে সে পুরস্কার পাবে। কমেন্টে ওদের গালাগালি দিয়ে সর্বনাশ করেছে মানুষ, কেন এত খায় ওরা, কেন এত স্টুপিড ভিডিও বানায়। অবাক কাণ্ড স্টুপিড ভিডিওর দর্শক কিন্তু অতি-বুদ্ধির ভিডিওর চেয়ে বেশি।’— ফেসবুকে লিখেন তসলিমা নাসরিন।


 
তিনি লিখেন, ‘আমার কাছে যেটা ভালো লেগেছে সেটা হলো স্বামী স্ত্রীর সঙ্গে পাশাপাশি বসে খাওয়া, স্বামী চার টুকরো মাংস নিলে স্ত্রীও চার টুকরো মাংস, স্বামী বড় মাছের টুকরো নিলে স্ত্রীও একই রকম বড় মাছের টুকরো, স্বামী দশটা রসগোল্লা খেলে  স্ত্রীও দশটা রসগোল্লা।  খাবারে কোনও বৈষম্য নেই, কেউ আগে খাবে কেউ পরে খাবে— এটিও নেই।’ 

বিতর্কিত এ লেখিকা আর লিখেন, ‘যে শহুরে সভ্য শিক্ষিতরা ওই ভাত খাওয়া গ্রাম্য ‘অশিক্ষিত’ ‘অসভ্য’দের প্রাণভরে গালাগালি করছে, তাদের অনেকের বাড়িতে কী হয় আমি চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারি। স্বামী স্ত্রী এক সঙ্গে বসে খাবার খায় না। রেঁধে বেড়ে স্ত্রীরা পাতে খাবার তুলে দিয়ে স্বামীদের খাওয়ায়। ভালো খাবারগুলো স্বামীদের পাতে পড়ে। ভুঁড়ি ভোজন শেষ করে স্বামীরা তৃপ্তিতে ঢেকুর তুলতে তুলতে খাবার টেবিল থেকে দূরে যাবে। তারপর রান্নাঘরের নানা কাজ সেরে খেতে বসবে স্ত্রী। অবশ্যই স্বামী যা যা খেয়েছে তা তা নয়। স্ত্রীর খাবারে কোয়ান্টিটি এবং কোয়ালিটি দুটোই কম থাকবে— এই বৈষম্য বহু পুরোনো।’

‘তবে ভিডিও করার জন্যই হোক, অথবা অন্য কোনও কারণেই হোক, গ্রামের ওই কাপলদের খাবার টেবিলের ইকুয়ালিটি দেখলে চক্ষু জুড়োয়। রান্নাঘরে যে ইকুয়ালিটি ছিল না, স্ত্রী একাই রান্না করেছে তা অনুমান করতে পারি। অন্তত একটি জায়গায় তো ইকুয়ালিটি আছে, জায়গাটি নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ।’— যোগ করেন তসলিমা নাসরিন।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়