বাবুল-মিতু দম্পত্তির দুই সন্তানকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে মাগুরায়

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:৩৭, ৩০ জুন ২০২১
বাবুল-মিতু দম্পত্তির দুই সন্তানকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে মাগুরায়

ফাইল ছবি।

মাহমুদা আক্তার মিতু ও সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার দম্পতির দুই সন্তানকে তাদের মা হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে শিশু আইন মেনে মাগুরায়। 

বুধবার ( ৩০ জুন) বিকেলে চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ ফেরদৌস আরার আদালত এ আদেশ দেন।

বিবাদি পক্ষের আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 
 
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ জুন মামলার তদন্তের জন্য মিতু-বাবুল দম্পত্তির দুই সন্তানকে পিবিআইয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা জিজ্ঞাসাবাদ করতে আদালতে আবেদন করেন। তখন আদালত ১৫ দিনের মধ্যে তাদের তদন্ত কর্মকর্তার কাছে হাজির করতে বাবুল আক্তারের বাবা আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া ও ভাই হাবিবুর রহমান লাবুকে নির্দেশ দেন।

পরে বাবুল আক্তারের ভাই হাবিবুর রহমান লাবু করোনার এ সময়ে বাচ্চাদের চট্টগ্রাম আদালতে নিয়ে যাওয়া কঠিন উল্লেখ করে শিশু আইনে তাদের মাগুরায় জিজ্ঞাসাবাদ করার নির্দেশনা চেয়ে চট্টগ্রামের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আবেদন করলে তা শুনানির জন্য চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এ পাঠানো হয়। গত সোমবার চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ ফেরদৌস আরা এ বিষয়ে আংশিক শুনানি শেষে বুধবার মাগুরায় শিশু আইন মেনে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন। তবে  আদালত কোনো নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে দেননি। 

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ের প্রকাশ্য সড়কে গুলিতে ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা আক্তার মিতু। ওই দিন রাতে তার স্বামী তৎকালীন পুলিশ সদর দপ্তরে কর্মরত এসপি বাবুল আক্তার বাদি হয়ে পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যামামলা দায়ের করেন। অনেকবার আলোচিত এ মামলার চার্জশিট দেওয়ার গুঞ্জন শোনা গেলেও কোন অগ্রগতি ছিল না। বাবুল আক্তারের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন ও শাশুড়ি সাহেদা মোশাররফ অব্যাহতভাবে হত্যাকাণ্ডের জন্য বাবুল আক্তারকে দায়ী করতে থাকেন। তবে পুলিশের তরফ থেকে কখনোই এ বিষয়ে স্পষ্টভাবে কিছু বলা হয়নি ওই সময়ে। গোয়েন্দা পুলিশ এরআগেও বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। শুরু থেকে চট্টগ্রামের ডিবি পুলিশ মামলাটির তদন্ত করে। তারা প্রায় তিন বছর তদন্ত করেও অভিযোগপত্র দিতে ব্যর্থ হয়। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালত মামলাটির তদন্তের ভার পিবিআইকে দেয়। 

গত ১১ মে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ হত্যা মামলায় সম্পৃক্ততা মেলায় বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তবে আইনিভাবে বাদিকে গ্রেপ্তারের সুযোগ না থাকায় আদালতে তাকে হাজির করার পর ১২ মে মিতুর পিতার মোশাররফ হোসেনের করা নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয় পিবিআই। একই সাথে বাবুলের করা মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হয়। 

গত ১২ মে মিতুর বাবার করা মামলায় বাবুল আক্তার ছাড়াও মামলার অপর আসামিরা হলেন— কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুসা, এহতেসামুল হক ভোলা, মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, আনোয়ার হোসেন, খায়রুল ইসলাম, সাইফুল ইসলম সিকদার, শাহজাহান মিয়া। এদের মধ্যে ওয়াসিম ও আনোয়ার আগে থেকেই জেলে। সাকুকে ওই দিন রাতে র‌্যাব গ্রেপ্তার করে এবং বাবুল আগে থেকেই পিবিআইয়ের হেফাজতে ছিল। এদের মধ্যে মুছাকে ২০১৬ সালের ২২ জুন ডিবি পুলিশ পরিচয়ে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ থাকলেও পুলিশ তা অস্বীকার করেছে বারবার। অন্যদিকে শুরু থেকে কালু অধরা। এছাড়া ভোলা ও শাহাজাহান জামিনে মুক্তি পেয়ে পলাতক রয়েছেন। গত ২৯ মে বাবুল আক্তারকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ফেনী কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়