রাঙ্গুনিয়ায় তিন বনকর্মীকে পিটিয়েছে শরণংকরের অনুসারীরা

রাঙ্গুনিয়ায় পদুয়া ইউনিয়নের ফলাহারিয়া এলাকায় শতাধিক একর বনের জায়গা দখল করে গড়ে উঠা ‌‘জ্ঞানশরণ মহাঅরণ্য বৌদ্ধ বিহারে’ আবারও স্থাপনা নির্মাণে বাধা দেওয়ায় তিন বনকর্মীকে বেধড়ক পিটিয়েছে বৌদ্ধ ভিক্ষু শরণাংকর থের’র অনুসারীরা। 

সোমবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে বনের জয়গা দখল করে পুনরায় স্থাপনা নির্মাণের সময় বন বিভাগের লোকজন বাধা দিলে মারধরের এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রাঙ্গুনিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বনবিভাগ। 

হামলায় আহতরা হলেন, রাঙ্গুনিয়ার খুরুশিয়া বনবিট কর্মকর্তা শাহ আলম হাওলাদার (৫৫), বন প্রহরী আলী আকবর খান (৩৫) ও আবু তাহের (৫৪)। 

খুরুশিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম বলেন, অবৈধভাবে জোরপূর্বক সংরক্ষিত বনের জায়গা দখল করে বৌদ্ধ ভিক্ষু শরণংকর থের জ্ঞানশরণ মহাঅরণ্য বৌদ্ধ বিহার গড়ে তুলেন। তার বিরুদ্ধে বনবিভাগ ডজন খানেক মামলা করেছে। তারপরও অবৈধ দখল ঠেকানো যাচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, শরণংকর থের আইন আদালতের তোয়াক্কা না করে দখল কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। দখল প্রক্রিয়ায় বাধা দিতে গেলে শরণংকর ও তার অনুসারীরা একাধিকবার বন কর্মকর্তাদের উপর হামলা চালিয়েছে। এখন জ্ঞানশরণ মহাঅরণ্যে শরণংকর না থাকলেও তার অনুসারীদের দিয়ে স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা চালাচ্ছে।

রেঞ্জ কর্মকর্তা বলেন, সোমবার সকালে সংরক্ষিত বনের জায়গায় পুনরায় স্থাপনা নির্মাণে বাধা দেয়ায় প্রথমে অকথ্য ভাষায় গালাগাল এবং পরবর্তীতে সংঘবদ্ধ হয়ে বনকর্মীদের ওপর হামলা চালায় শরণাংকর থের’র অনুসারীরা। দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তারা তিন বনকর্মীকে বেধড়ক পিটুনি দিয়ে গুরুতর আহত করেন। এসময় বনকর্মীদের ইউনিফর্ম ও নেইম প্লেটসহ পরনের কাপড়ও ছিঁড়ে দেয় তারা। আহত বনকর্মীরা রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়েছেন।

খুরুশিয়া বনবিট কর্মকর্তা শাহ আলম হাওলাদার বলেন, বনকর্মীদের ওপর হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে ইট ও ভাঙা ইট জব্দ করে। তবে স্থাপনা নির্মাণের জন্য আনা সিমেন্ট ছিনিয়ে নিয়ে যায় শরণংকরের অনুসারীরা।

জ্ঞানশরণ বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ দীপঙ্কর ভিক্ষু জানান, নির্মাণ কাজ করার সময় বন বিভাগ বাধা দিলে ধস্তাধস্তি হয়েছে। মারামারির কোনো ঘটনা ঘটেনি।

রাঙ্গুনিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহবুব মিল্কি বলেন, বনকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় বন বিভাগ লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। এ প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।