Cvoice24.com


একজন পুলিশ কনস্টেবল নেকবারের জন্য সহকর্মীর শোকগাথা  

প্রকাশিত: ২০:১৮, ২৪ মে ২০২০
একজন পুলিশ কনস্টেবল নেকবারের জন্য সহকর্মীর শোকগাথা  

পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি
এ জীবন মন সকলি দাও।
তার মত সুখ কোথাও কি আছে?
আপনার কথা ভুলিয়া যাও।
পরের কারণে মরণেও সুখ......১

১৯৭৮, রত্নগর্ভা মা কখনো কি ভেবেছিলেন ? তাঁর শিশু নেকবার একদিন বড় হয়ে বাংলাদেশ পুলিশে মানবিক পুলিশিংয়ে এক  উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন? মাত্র ৪২ বছর!  সৃষ্টিকর্তার  অসীম জগতের এই ক্ষুদ্র  সময়ে কত ঝড় বৃষ্টি ভেঙ্গে মানবতার সেবায় কাজ করে গেছেন কনস্টেবল নেকবার হোসেন। 

করোনা ভাইরাসের এই মহামারী কালে বেঁচে থাকার প্রতিযোগিতার দৌঁড়ে মানুষজন যখন ঘরবন্দি হচ্ছে, ঠিক তখনই দায়িত্বের গণ্ডি পেরিয়ে  মানবিকতার টানে, ভালোবাসার টানে অসহায় মানুষদের জন্য মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কাজ করে গেছেন কনস্টেবল নেকবার হোসেন।

মাত্র ২ সপ্তাহ আগে নিজের কাঁধে ত্রাণের ব্যাগ বহন করে অসহায় মানুষদের ঘরের দরজায় পৌঁছে দিয়েছেন। করোনা ভাইরাসের ভয়ে ভীত হননি, আতঙ্কিত হননি, নিজের এবং পরিবারের কথা ভাবেননি। তাঁর কিছু হলে তার পাঁচটি সন্তান কোথায় দাঁড়াবে? এ কথাটি একবারও ভাবেন নি। 'কমান্ড ইস কমান্ড' - কমান্ড হৃদয়ের, কমান্ড ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের। এই যুদ্ধে হারবার নয়। তাই সুপ্রশিক্ষিত এই যোদ্ধা ত্রাণ বিতরণে ছুটে চলেছিলেন অসহায় মানুষদের দ্বারে দ্বারে।

নিজের অজান্তে শরীরে বহন করেছেন প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। হতদরিদ্র মানুষের সুখের আশায় বিলিয়ে দিয়েছেন সবটুকু, একেবারে জীবনটুকুই। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৩ মে সকাল সাড়ে ৮ টায় চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের হালিশহর থানার এই অকুতোভয় বীর কনস্টেবল নেকবারের জীবন প্রদীপের অবসান ঘটে। 

সসীম নেকবার যাত্রা করেন অসীম সময়ের পানে। কামিনী রায়! তুমি নিশ্চয়ই এতোটুকু ভাবতে পারোনি! তোমার 'সুখ' আজ হার মেনেছে নেকবারের সুখে,এই বিসর্জনে। বাংলাদেশ পুলিশ আজ সর্বস্ব বিলিয়ে  দিয়ে প্রমাণ করেছে "পরের কারনে....মরণেও সুখ......"

অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার 
জনসংযোগ শাখা, সিএমপি

মোহাম্মদ আবুবকর সিদ্দিক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়