দুই উপায়ে ৪১টি ওয়ার্ডের হাল ধরবেন তিন চসিক কর্মকর্তা
ফাইল ছবি।
দুই উপায়ে চট্টগ্রাম নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের জন্ম-মৃত্যু এবং ওয়ারিশ সনদপত্র, আলোকায়ন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ দৈনন্দিন গুরুত্বপূর্ণ কাজ তাৎক্ষণিক সমাপ্ত করার কথা ভাবছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) কর্মকর্তারা।
যদিও দায়িত্বপ্রাপ্তদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এসব ওয়ার্ডের স্থানীয় বাসিন্দাদের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতকরণের কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেই বৈঠকেই চূড়ান্ত পরিকল্পনা ও দায়িত্ব বণ্টন করে দেওয়া হবে।
চসিকের প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুসারে ওয়ার্ডগুলোর বাসিন্দাদের ভোগান্তির লাঘবে স্থানীয় ওয়ার্ড সচিবদের সাথে দায়িত্বপ্রাপ্ত চসিকের তিন কর্মকর্তা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখবেন। এই যোগাযোগের সেতুবন্ধন দৃঢ় করার লক্ষ্যে দুটি উপায়ের কথা ভাবছে সংশ্লিষ্টরা। এদের প্রথমটি হলো ওয়ার্ড সচিবদের দেওয়া হবে বিশেষ সুবিধা (পরিবহন ব্যবস্থা) এবং দ্ধিতীয় দফায় দাপ্তরিক কাজের ফাঁকে ফাঁকে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডগুলো ভিজিট করবেন দায়িত্বপ্রাপ্ত ৩ জন- চসিক প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মফিদুল আলম, চসিক প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া ও চসিক সচিব আবু শাহেদ চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) চসিকের ৪১টি ওয়ার্ডের দায়িত্ব এই তিন কর্মকর্তাকে ভাগ করে দিয়ে একটি অফিস আদেশ জারি করেছিলেন চসিক প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা মো. শামসুদ্দোহা। এতে গুঞ্জন উঠেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্ম-মৃত্যু এবং ওয়ারিশ সনদপত্র সংগ্রহের মত গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র হাতে পেতে সৃষ্টি হবে নতুন জটিলতা।
কেননা স্বাভাবিক নিয়মে স্থানীয় ৪১ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মাধ্যমেই এসব কাগজপত্র সংগ্রহ করতেন স্থানীয় বাসিন্দারা।কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই ৪১ জন কাউন্সিলরের বদলে এই কাজ সম্পাদন করবেন চসিকের মাত্র ৩ জন কর্মকর্তা। এতে করে স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্ম-মৃত্যু এবং ওয়ারিশ সনদপত্রসহ আলোকায়ন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মত দৈনন্দিন গুরুত্বপূর্ণ কাজে নেমে আসতে পারে শ্লথগতি।
তবে চসিক কর্মকর্তারা জানান, ৪১টি ওয়ার্ড বাসিন্দাদের এসব গুরুত্বপূর্ণ কাজের গতিশীলতা ধরে রাখতে বিশেষ নজর রয়েছে। চসিকের সেবার মান ও কাজের গতি ধরে রাখতে ওয়ার্ডগুলোর দায়িত্ব বণ্টনে আরও বিন্যাস ঘটানো হবে। চসিক প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা মো. শামসুদ্দোহা জানান, দায়িত্বপ্রাপ্ত ৩ জনের জন্য যদি ৪১টি ওয়ার্ডের কাজ চাপ হয়ে যায়। তাহলে কর্মকর্তার সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।
অন্যদিকে, চসিক প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা (উপসচিব) মুফিদুল আলম বলেন, কাজের গতিশীলতা ধরে রাখতে স্থানীয় ওয়ার্ড সচিবরা যেন আমাদের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রাখতে পারে তার জন্য এলাউন্সমেন্টের কথা ভাবা হচ্ছে। তাছাড়া দায়িত্ব প্রাপ্ত তিনজন কর্মকর্তা কাজের ফাঁকে ফাঁকে ভিজিট করতে পারেন।
তিনি জানান স্থানীয় ওয়ার্ড কার্যালয়গুলো যথা নিয়মে খোলা রাখা হলে তা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করবেন স্থানীয় ওয়ার্ড সচিবরা। সেই সাথে ওয়ার্ড সচিবদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের সত্যতা ইন্টারনাল (অভ্যন্তরীণ) সোর্সের মাধ্যমে যাচাই করবেন এই ৪১ ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। সবমিলিয়ে বলা চলে নাগরিক সেবা নিশ্চিতে স্থানীয় ওয়ার্ড সচিবদের সাথে মূল দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের দৃঢ় সেতুবন্ধনের উপর জোর আরোপ করার কথা ভাবছে চসিক।
প্রসঙ্গত, ৫ অগাস্ট চসিকের পঞ্চম নির্বাচিত পরিষদের মেয়াদ শেষ হয়। এর একদিন আগে প্রশাসক পদে সুজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। ৬ অগাস্ট তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মেয়রের সঙ্গে নির্বাচিত ৪১ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং ১৪টি সংরক্ষিত নারী আসনের প্রার্থীদের মেয়াদও ৫ অগাস্ট শেষ হয়।
-সিভয়েস/এপি/এসসি
সিভয়েস প্রতিবেদক