Cvoice24.com

ব্যয় তিনগুণ কমলেও বেসরকারিতে কমছে না করোনা পরীক্ষা ফি

সিভয়েস ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:২২, ৪ মে ২০২১
ব্যয় তিনগুণ কমলেও বেসরকারিতে কমছে না করোনা পরীক্ষা ফি

প্রতীকী ছবি

করোনা ভাইরাস শনাক্তে বেসরকারি পর্যায়ে আরটি-পিসিআর (রিয়েল টাইম-পলিমার চেইন রিঅ্যাকশন) পরীক্ষার মূল্য পুনর্নির্ধারণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায় থেকে। তবে দুই পর্যায়ের প্রস্তাবিত মূল্যের মধ্যে বিস্তর ফারাক। কিট-রিএজেন্টের দাম কমায় কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটির প্রস্তাব, পরীক্ষার মূল্য দেড় থেকে দুই হাজার টাকা করা হোক।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অবশ্য প্রস্তাব দিয়েছে সাধারণ এবং বিদেশগামী পর্যায়ে যথাক্রমে তিন ও আড়াই হাজার টাকা। এছাড়া বাড়িতে গিয়ে ৩ হাজার ৭০০ টাকা। তবে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০২০ সালের পরিপ্রেক্ষিতে সাড়ে ৩ হাজার টাকা ঠিক ছিল। তবে বর্তমান সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে কোভিড-১৯ পরীক্ষার মূল্য সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকা হতে পারে। সূত্র যুগান্তর।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০২০ সালের শুরুর দিকে যখন দেশে করোনা ভাইরাস দেখা দিয়েছিল তখন একটি পিসিআর পরীক্ষা করাতে কিট-রিএজেন্টসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় ছিল ২ হাজার ৭০০ টাকা। এর সঙ্গে বিদ্যুৎ বিল, স্টাফ বেতন ইত্যাদি মিলিয়ে সাড়ে ৩ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। বর্তমানে কিট-রিএজেন্টসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় কমে দাঁড়িয়েছে ৭০০ টাকা। এই পরিস্থিতিতে আরটি-পিসিআর পরীক্ষার মূল্য সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকা হতে পারে।

এদিকে করোনা নির্ণয় পরীক্ষার মূল্য কমাতে সুপারিশ করেছে করোনা সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। ওই কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. শহিদুল্লা জানান, কোভিড পরীক্ষায় প্রয়োজনীয় কিটের দাম ৩০০০ থেকে ২৭০০ টাকা ছিল। এখন সেটা কমে ৮০০ থেকে হাজার টাকায় নেমে এসেছে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে বেসরকারি পর্যায়ে পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করে মূল্য পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দেন তারা। এক্ষেত্রে বেসরকারি পর্যায়ে পরীক্ষার মূল্য দেড় থেকে দুই হাজার টাকার মধ্যে নির্ধারণের পরামর্শ দেয় পরামর্শক কমিটি।

এর আগেও একবার বেসরকারি পর্যায়ে আরটি-পিসিআর পরীক্ষার ফি কমাতে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে। তবে অজ্ঞাত কারণে সেই প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয়নি। মূলত বেসরকারি পর্যায়ের ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক মালিকদের চাপের কারণেই আগেরবার দাম কমানো সম্ভব হয়নি। এবার অবশ্য সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে পরীক্ষার ফি কমানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাই এবার দাম কমবে বলেই মনে করা হচ্ছে। 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) ডা. মো. ফরিদ হোসেন মিঞা গত ২৬ এপ্রিল এ সংক্রান্ত চিঠি মন্ত্রণালয়ে পাঠান। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবকে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেকের উপস্থিতিতে একটি অনলাইন সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সবার মতামতের ভিত্তিতেই বেসরকারি পর্যায়ে আরটি-পিসিআর পরীক্ষার মূল্য পুনর্নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। তিনি ওই চিঠিতে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তিন ধরনের পরীক্ষার মূল্য পুনর্নির্ধারণের প্রস্তাব করেছেন।

সাধারণ জনগণের ক্ষেত্রে পিসিআর পরীক্ষায় বর্তমানে ব্যয় করতে হয় সাড়ে তিন হাজার টাকা; প্রস্তাবিত মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে তিন হাজার টাকা। বিদেশগামীদের পরীক্ষায় বর্তমানে মূল্য রয়েছে তিন হাজার টাকা; প্রস্তাবিত মূল্য আড়াই হাজার এবং বাড়ি গিয়ে নমুনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে বর্তমানে সেবামূল্য রয়েছে সাড়ে চার হাজার টাকা; প্রস্তাবিত মূল্য করা হয়েছে ৩ হাজার ৭০০ টাকা।

এর আগে গত বছরের জুন মাসের শেষদিকে করোনা ভাইরাস শনাক্তের মূল্য নির্ধারণ করে সরকার। দেশে এ ভাইরাস আসার পর অর্থাৎ মার্চ থেকে জুন মাস পর্যন্ত এই পরীক্ষা সরকারি প্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যেই করা হতো। তবে জুনের শেষদিকে সরকার পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণ করে। তখন সরকারি পর্যায়ে বুথে বা হাসপাতালে নমুনা দেওয়ার ক্ষেত্রে মূল্য ধরা হয় ২০০ টাকা এবং বাসা থেকে নমুনা সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে ৫০০ টাকা।

এছাড়া বিদেশগামীদের করোনা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয় ২০ জুলাই থেকে। সেই সময় সাড়ে ৩ হাজার টাকা করে নেওয়া হতো করোনা পরীক্ষার ফি। পরবর্তী সময়ে ২৪ আগস্ট সরকার সেই মূল্য কমিয়ে দেড় হাজার টাকা করে।

এরপর আরেক দফা কমিয়ে প্রবাসীকর্মীদের পরীক্ষার মূল্য ১ হাজার ২০০ টাকা করা হয়। পাশাপাশি সাধারণ পর্যায়ে বুথে বা হাসপাতালে গিয়ে পরীক্ষা করানোর ক্ষেত্রে মূল্য নির্ধারণ করা হয় ১০০ এবং বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহের ক্ষেত্রে ৩০০ টাকা।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়