Cvoice24.com

মায়ের আত্মত্যাগে আইসিইউ পাওয়া ছেলের অবস্থার উন্নতি 

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:২১, ৩০ জুলাই ২০২১
মায়ের আত্মত্যাগে আইসিইউ পাওয়া ছেলের অবস্থার উন্নতি 

ছেলেকে বাঁচাতে আত্মত্যাগী মায়ের ছেড়ে দেওয়া আইসিইউ’র বেডে থাকা ছেলে শিমুল পালের অবস্থা উন্নতির দিকে। গত দুই দিন ধরে তার অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও শুক্রবার দুপুরের পর থেকে তার অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯০ এ ওঠেছে। এরপরও তাকে আইসিইউতে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ও কোভিড ফোকাল পার্সন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. আবদুর রব বলেন, ‘তার অবস্থা এখন উন্নতির দিকে। আস্তে আস্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। দুই দিন ক্রিটিক্যাল থাকলেও এখন তার অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯০ এ ওঠেছে। এরপরও তাকে আইসিইউতে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।’

এরআগে গত বুধবার বিকেলে আইসিইউ বেড সংকটের কারণে ছেলের জন্য নিজের বেড ছেড়ে দেন মা কানন প্রভা পাল। ছেলে বাঁচাতে নিজের জীবনের মায়া ত্যাগকারী এই মা এর ঘণ্টা দুয়েক পর মারা যান। মায়ের এমন আত্মত্যাগের কথা গণমাধ্যমে আসলে চট্টগ্রামজুড়ে আলোচিত হয়। 

জান যায়, নগরের কোতোয়ালী থানার দিদার মার্কেট সিঅ্যান্ডবি কলোনি এলাকার বাসিন্দা মা কানন প্রভা পাল গত ১৫ জুলাই করোনা আক্রান্ত হয়ে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। এরমধ্যে মায়ের অবস্থার অবনতি হলে গত ২২ জুলাই তাকে আইসিইউতে আনা হয়। অন্যদিকে ২১ জুলাই করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের সাধারণ ওয়ার্ডে ভতি হন ছেলে শিমুল পাল। এরমধ্যে বুধবার সকাল থেকে ছেলে শিমুলের তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। কমতে থাকে অক্সিজেন লেভেল। পরে মায়ের ছেড়ে দেওয়া আইসিইউর বেডেই এখন মৃত্যু দূতের সঙ্গে লড়াই করে এখন জীবন জয়ের পথে রয়েছেন ছেলে শিমুল পাল। 

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ও কোভিড ফোকাল পার্সন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে সিভয়েসকে বলেছিলেন, ‘মায়ের অসাধারণ ত্যাগের কারণে ছেলে এখনো বেঁচে আছে। তবে মা কানন প্রভা পাল যেটা করেছেন তাতে আমাদের সায় ছিল না। এরপরও উনার জোরাজুরিতেই আমরা নিরুপায় হয়ে তাকে আইসিইউ বেড থেকে নামিয়েছি। নামানোর কয়েক ঘণ্টা পরেই তিনি মারা যান। মায়ের ছেড়ে দেওয়া সিটে ছেলে শিমুল পাল এখন আছেন।’

চট্টগ্রামে করোনা রোগীদের জন্য আইসিইউ পাওয়া সোনার হরিণ আর সাধারণ বেড পাওয়াতো যুদ্ধ জয়ের সমান। চট্টগ্রামের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে মোট ১৬৯টি আইসিইউর মধ্যে সবকটি আইসিইউ বেডই এখন মুমূর্ষু রোগীতে ভর্তি। এমন অবস্থায় আইসিইউ বেড পেতে আরও বেশ কয়েকজন অপেক্ষায় থাকছেন কখন সিটে থাকা রোগীর মৃত্যু হলে সেই সিটে তাদের রোগীকে ওঠাবেন। এমনই ঘটনাকে সামনে নিয়ে আসলেন এই মায়ের আত্মত্যাগ।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়