Cvoice24.com

চসিকের প্রধান প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত শুরু

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:০০, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২
চসিকের প্রধান প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত শুরু

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে মন্ত্রণালয়।  এজন্য তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।  স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম-সচিব (উন্নয়ন) নুমেরী জামানকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটির সদস্য সচিব হয়েছেন উপসচিব (পরিচালক-১) মো. মাহবুবুর রহমান ভ‚ইয়া। এ ছাড়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের একজন প্রকৌশলীকে সদস্য করা হয়েছে তদন্ত কমিটির।

রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) তদন্তের প্রথম দিনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সম্মেলন কক্ষে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে তদন্ত কার্যক্রম চালায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের তদন্ত টিম। আগামীকালও তদন্তকাজ চলবে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির সভাপতি স্থানীয় সরকার বিভাগের উন্নয়ন অধিশাখার যুগ্মসচিব নুমেরী জামান।

তদন্তের বিষয়ে তদন্ত কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় সরকার বিভাগের (উন্নয়ন অধিশাখার) যুগ্মসচিব নুমেরী জামান সিভয়েসকে বলেন, ‘তদন্তের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে না। অথবা আমি বলতেও পারবো না। তদন্ত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আর কিছু বলা যাচ্ছে না। তাই তদন্তের কাজ শেষে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।’

এদিকে, তদন্তের বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চসিকের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রধান প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে যিনি অভিযোগ করেছেন তিনি উপস্থিত ছিলেন না। আর যে কারণে তদন্ত ঠিক কোন পর্যায়ে আছে বা এর গতিবিধি এখনো বোঝা যাচ্ছে না। তদন্তের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ১৫ দিনের মতো অপেক্ষা করতে হতে পারে বলে মনে হচ্ছে।’

জানা যায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে চসিকের প্রধান প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে দুদকে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ করেন মো. জামাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি করেন স্থানীয় সরকার বিভাগ।

অভিযোগে আরও জানা যায়, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলামের ছেলে আদনান রফিকের রয়েছে মেসার্স মিয়াজি কনস্ট্রাকশন নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত ছয় বছরে সিটি করপোরেশনের প্রায় ১৯ কোটি টাকার কাজ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এভাবে সরকারি চাকরিজীবী বাবার প্রতিষ্ঠানে ছেলের ঠিকাদারি করার বিষয়টিকে বিধি ভঙ্গ ও স্বার্থের সংঘাত হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। আদনান রফিকের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে প্রতিষ্ঠানটি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে ঠিকাদারি করছে। নথিপত্র অনুযায়ী, আদনান রফিকের বর্তমান বয়স প্রায় ২৭ বছর। অর্থাৎ ২১ বছর বয়স থেকে ঠিকাদারি ব্যবসা করছেন তিনি।

২০১৯ সালে তৎকালীন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী) রফিকুল ইসলাম মেসার্স মিয়াজি কনস্ট্রাকশনকে একটি প্রত্যয়নপত্র দেন। এতে বলা হয়, মেসার্স মিয়াজি কনস্ট্রাকশন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অধীনে ছয়টি উন্নয়নকাজ সন্তোষজনকভাবে শেষ করেছে। এতে ব্যয় হয়েছে ১৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।

ওই প্রত্যয়নপত্র অনুযায়ী, মেসার্স মিয়াজি কনস্ট্রাকশন লিমিটেড ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১২ লাখ ৬০ হাজার টাকায় ১০ নম্বর ওয়ার্ডের আমানত উল্লাহ শাহ পাড়া সড়কের উন্নয়নকাজ করে। এরপর ৪ কোটি ৬২ লাখ টাকায় ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রেলওয়ে আকবর শাহ সোসাইটি রোড, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ খুলশীর আবাসিক এলাকার বাই লেনের উন্নয়নে ৪ কোটি ৭ লাখ টাকার কাজ, ৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের লাল মিঞা ছড়ার প্রতিরোধ দেয়ালের নির্মাণকাজ, ৭৩ লাখ ২৮ হাজার টাকা ব্যয়ে কর্ণফুলী আবাসিক এলাকায় নালার কাজ এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ইগল স্টার সড়কের উন্নয়নে সাড়ে ৪ কোটি টাকার কাজ করে।

যদিও চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়