মশা মারা শিখতে রাতে ঢাকা যাচ্ছে চসিকের টিম

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:৪৪, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১
মশা মারা শিখতে রাতে ঢাকা যাচ্ছে চসিকের টিম

ফাইল ছবি।

কথায় আছে ‘মশা মারতে কামান দাগা’। যে কথাটির অর্থ হলো ‘তুচ্ছ কাজে বেশি শক্তি প্রয়োগ করা’। আর কয়েক বছর ধরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) এলাকায় মশক দমন নিয়ে ঠিক এমনটাই ‘তুঘলকী কাণ্ড’ দেখতে হচ্ছে বলে আক্ষেপ নগরবাসীর। অভিযোগ— করপোরেশনের অব্যবস্থাপনার কারণেই কোটি টাকা খরচ করেও মশা মারতে পারছে না চসিক। অন্যদিকে চসিক বলছে, একেবারে মোক্ষম চেষ্টা করেও দমন করা যাচ্ছে না মশা। ফলে বাড়ছে মশা, বাড়ছে ভোগান্তি। 

তবে নগরীতে মশক নিধনে প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় মশা মারা শিখতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে যাওয়ার কথা ছিল চসিকের একটি বিশেষ টিমের। বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতেই সব কাগুজে আনুষ্ঠানিকতা শেষে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় রওনা হচ্ছে দুই সদস্যর একটি বিশেষ দল— যা সিভয়েসেকে নিশ্চিত করেছে চসিকের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র।

ওই সূত্র জানায়, দুইজন সদস্যের ওই টিমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মকর্তা হাসান রশিদ। তার সাথে থাকছেন একই বিভাগের তত্বাবধায়ক আলী আকবর। ওই সূত্রটি আরও জানায়, দিনে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে ওই টিমটির। সেখানে তারা বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) কার্য দিবসে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে মশা নিধনে কেমন ওষুধ ছিটানো হয় তা দেখবে ও সংশ্লিষ্টদের সাথে মশক নিধন ইস্যুতে আলোচনা করবে। কাজ শেষে বৃহস্পতিবার রাতেই চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার কথা রয়েছে ওই দলটির।

এদিকে সম্প্রতি মশা নিয়ে বহু জল ঘোলা হয়েছে নগরীজুড়ে। অনেকে বলছেন, এ নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। মশা মারতে নেমে কোথাও কোথাও নানা প্রশ্নের সামনে পড়ছে চসিকের স্প্রে-ম্যানরা। চসিক সূত্র বলছে, নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে মশা মারার কাজে নিয়োজিত প্রায় ২০০ স্প্রে-ম্যান। আর বর্তমানে মশার তীব্র উৎপাত কমাতে এডাল্ট্রিসাইড (পূর্ণাঙ্গ মশা ধ্বংসকারী), লার্ভিসাইড (লার্ভা ধ্বংসকারী) ও লাইট ডিজেল ওয়েলসহ (কালো তেল) ৩ পদের ওষুধ ব্যবহার করছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। মশক নিধন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে কোটি টাকা ব্যয় করছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।

নগরবাসীর অভিযোগ, মশা মারতে চসিকের যাদের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। তারা ঠিক মত দায়িত্ব পালন করছে না। তাছাড়া ওষুধের বদলে পানি ছিটিয়ে দেওয়ার অভিযোগও আছে।

চসিক সূত্র জানায়, সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের সময়ে ছিটানো হতো এডাল্ট্রিসাইড (পূর্ণাঙ্গ মশা ধ্বংসকারী), লার্ভিসাইড (লার্ভা ধ্বংসকারী) ওষুধ। কিন্তু খোরশেদ আলম সুজন প্রশাসেকর দায়িত্ব গ্রহণের পর এখানে যুক্ত করা হয়েছে লাইট ডিজেল (কালো তেল)। 

দায়িত্ব পালনকালে চসিকের সাবেক এ প্রশাসক সিভয়েসকে বলেছিলেন, ‘করপোরেশন আগে যে ওষুধগুলো নিয়েছিল, সেগুলো ইফেক্টটিভনেস (কার্যকারিতা) নেই। আমরা নতুন করে কালো তেল দিচ্ছি সেগুলো খুব কাজ করছে।’ 

অথচ এ কথার প্রায় ৩ মাস পরে ফের অভিযোগ উঠছে ওষুধে মরছে না মশা। তাই নতুন মেয়র এম. রেজাউল করিম দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছিলেন নিধন করা হবে মশা। মশার যন্ত্রণা নিয়ে বিভিন্ন বক্তব্যও দিয়েছিলেন তিনি। 

সবশেষ বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি জানিয়েছিলেন মশার ওষুধ ছিটালেও মশা কেন মরে না তা জানতে ঢাকায় নিজেদের টিম পাঠাচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চসিকের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের উপ প্রধান কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম সিভয়েসকে বলেন, ‘মেয়র মহোদয় নির্দেশনা দিয়েছেন। দু’জনের একটি টিম ঢাকায় যাবে। সেখানে টিমটির কার্যক্রম জানতে চাইলে সেই প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে তিনি বলেন, ‘সরেজমিনে সেখানকার কর্মকর্তা-পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের সাথে কথা বলার পাশাপাশি ওষুধের গুণগত মানও যাচাই করা হবে। তারা কিভাবে কাজ করছে, আমরা কিভাবে কাজ করছি, এসব বিষয় যাচাই করার জন্য যাচ্ছে এ টিম।’

-সিভয়েস/এপি/এমএম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়