Cvoice24.com

যেভাবে ‘জলাবদ্ধতার কারণ’ খুঁজবে কমিটি

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:৫২, ২৩ জুন ২০২২
যেভাবে ‘জলাবদ্ধতার কারণ’ খুঁজবে কমিটি

টানা বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাড়িতে হাঁটু পানি। ফাইল ছবি

জলাবদ্ধতার কারণ খুঁজতে আগামী শনিবার থেকে কাজ শুরু করবে চসিক ও সিডিএর সমন্বয়ে গঠিত চার সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি। তাদের হাতে সময় রয়েছে এক সপ্তাহ। প্রথম ধাপে শনিবার নগরের সবচেয়ে বেশি জলমগ্ন এলাকা চিহ্নিত করা হবে। পরে জলমগ্ন এলাকায় কি কাজ করতে হবে তা নিয়ে আলোচনায় বসবে চসিক ও সিডিএ।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় (২৩ জুন) সিভয়েসকে এসব তথ্য জানিয়েছেন সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী ও কমিটির আহ্বায়ক কাজী হাসান শামস। 

কাজী হাসান শামস বলেন, আমাদের এক সপ্তাহের মধ্যে কমিটির কাজ শেষ করতে হবে। দু’একদিনের মধ্যে আলোচনায় বসে আমাদের পক্ষ থেকে ফাইন্যান্সগুলো দিব। আলোচনার মধ্যে কোথায় কাজ করতে হবে, সিডিএ’র কী কাজ করতে হবে, চসিকের কি কাজ করতে হবে। এটা মূলত ক্রাশ প্রোগ্রাম হবে। জলাবদ্ধতায় পানি জমে থাকার কারণ, কোথায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির করছে এসব বিষয়গুলো চিহ্নিত করা হবে। 

এক প্রশ্নে সিডিএর এই প্রকৌশলী বলেন, বিশেষ করে নগরের বহদ্দারহাট, চকবাজার, মুরাদপুরসহ নিম্ন এলাকাগুলো আগে সরেজমিনে পর্যবেক্ষণে যাব। এছাড়া আগামী জুলাইয়ে মহেশখালের সুইস গেটের কাজ শেষ হলেও হালিশহরে উজানের পানি শহরে ঢুকবে না।

অন্যদিকে চসিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও সমন্বয় কমিটির সদস্য কাউন্সিলর মোবারক আলী সিভয়েসকে বলেন, এখন পর্যন্ত জলাবদ্ধতার নিরসনে একটি মেগা প্রকল্প চলমান রয়েছে। এ প্রকল্পের কারণে কিছু জায়গায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। এসব প্রতিবন্ধকতার কারণে জলাবদ্ধতায় পানি জমে থাকছে কিনা সে বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে। অতিবৃষ্টি হয়েছে ঠিক আছে, কিন্তু বৃষ্টির পর পানি সরে যেতে অনেক সময় নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সকল সেবা সংস্থার সমন্বয়ে কমিটি করা হয়েছে। আমাদের দেখতে বলা হয়েছে, কেনো পানি নামতে দেরি হলো।

তিনি আরও বলেন, পরিদর্শনের সময় সিটি করপোরেশনের আওতাধীন কোনো ড্রেনে, সিডিএ, বন্দর কিংবা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন ড্রেন থাকলে তারাও কাজ করবে। চলতি বছরের র্ব্ষায় যেনো এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়। পানি উঠবে না— এটা কিন্তু আমরা বলছি না, পানি উঠবে। আপাতত এ বছরে জলাবদ্ধতার সংকট কমিয়ে আনাটাই আমাদের লক্ষ্য। আগামী শনিবার বিকেলে বসে প্রথম ধাপে যেসব এলাকা বেশি জলমগ্ন হয়েছে সে এলাকা চিহ্নিত করবো। ইতিমধ্যে সুপারভাইজার, কাউন্সিলর ও জোন প্রধানদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে কোন কোন খালে কী ধরনের প্রতিবন্ধকতা আছে, কোন জায়গায় পানি আটকে আছে এসব জানাতে। সে অনুযায়ী পরিদর্শনে গিয়ে কমিটি বাঁধ অপসারণ কিংবা ডাইভারশন করে দিয়ে পানি চলাচলের পথ করে দিবে।

এরআগে গতকাল বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কার্যালয়ে জরুরি সভা করে জলাবদ্ধতার কারণ খুঁজতে চার সদস্যের কমিটি করা হয়। জলাবদ্ধতা নিরসনে নিয়োজিত সেবা সংস্থার কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত কমিটিকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামসকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটিতে সদস্য সচিব হিসেবে রাখা হয় চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলামকে। সদস্য করা হয় জলাবদ্ধতার জন্য নেওয়া সিডিএর মেগা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশনের লেফটেনেন্ট কর্নেল শাহ আলী ও চসিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোবারক আলীকে।

সভা শেষে মেয়র জানান, জলাবদ্ধতা প্রকল্প নিরসনের জন্য কিছু খালে বাঁধ রয়েছে। কিন্তু জলাবদ্ধতার ভোগান্তিতে মানুষের ধৈর্য্যের সীমা রয়েছে। অনেক আলাপ- আলোচনা হয়েছে। মেগা প্রকল্পের কাজ করতে গেলে কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হবেই। জলাবদ্ধতার পর খালের বাঁধ অপসারণের পরও কেনো পানি জমে থাকছে এর কারণ খুঁজে বের করতে কমিটি গঠন করেছি। বৃষ্টিতে পানি উঠবে না এটা বলছি না, পানি উঠবেই। কিন্তু কীভাবে দ্রুত নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা যায় সে বিষয়ে আমরা সবাই পরিকল্পনা নির্ধারণ করেছি। কোন কোন এলাকায় প্রতিবন্ধকতার কারণে পানি জমছে, কোথায় বাঁধ দেওয়া হয়েছে এসব বিষয়ে কমিটি সরেজমিনে পরিদর্শনে যাবে। পরিদর্শন শেষে  জলাবদ্ধতা নিরসনের বিষয়ে প্রদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়